kurigram-flood_16251

বিডি নীয়ালা নিউজ ( ২৩ই জুলাই ২০১৬ইং)-ডেস্ক রিপোর্টঃ উজানের পাহাড়ি ঢল ও অবিরাম ভারী বর্ষণে কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। এতে দুই শতাধিক চরের লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এদিকে নীলফামারীতে তিস্তা নদীর ভাঙনে গত দুদিনে আরও ৩০টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এ ছাড়া লালমনিরহাটের দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ও কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা গেছে, জেলায় তিস্তা, দুধকুমার, সোনাভরি, হলহলিয়া, জিঞ্জিরাম ও গঙ্গাধরের পানি বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিপাতে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়ে পড়েছে। জেলার নয়টি উপজেলার অধিকাংশ নিচু এলাকা ডুবে গেছে। বিভিন্ন স্থানে গ্রামীণ কাঁচা সড়কে পানি ওঠায় চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ভারী বৃষ্টিতে ভূরুঙ্গামারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সীমানাদেয়াল ভেঙে পড়েছে। বন্যাদুর্গত এলাকায় সরকারি বা বেসরকারি কোনো ত্রাণসামগ্রী না পৌঁছানোয় খাদ্যসংকটসহ দুর্ভোগে পড়েছে বানভাসি মানুষ। বিশুদ্ধ খাওয়ার পানি ও গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। রাস্তাঘাট তলিয়ে থাকায় ভেঙে পড়েছে যোগাযোগব্যবস্থা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, পানি ওঠায় ৮৭টি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে।
জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন এ নিয়ে গত বুধবার সন্ধ্যায় নিজ দপ্তরে প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করেন। সেখানে বলা হয়, জেলায় বন্যা পরিস্থিতি বিরাজ করলেও আতঙ্কিত হওয়ার মতো কিছু হয়নি। মাঠপর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা সংগ্রহের কাজ শেষ হলেই ত্রাণ তৎপরতা শুরু হবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মকবুল হোসেন বলেন, বন্যায় শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আমন বীজতলা ও পাটখেত তলিয়ে গেছে।
এদিকে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডালিয়ায় পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র সূত্র জানায়, তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি গতকাল সকাল ছয়টায় বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এতে বন্যা পরিস্থিতির আবারও অবনতি হয়েছে।
পাউবোর ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজার রহমান বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ব্যারাজের সব কটি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
এলাকার কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বন্যায় ভাঙন অব্যাহত থাকায় ডিমলার টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়নে গত দুই দিনে নতুন করে আরও ৩০টি পরিবারের ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।
টেপাখড়িবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম বলেন, বন্যার পাশাপাশি ইউনিয়নে নদীভাঙন অব্যাহত আছে। ভাঙনে গত বুধ ও বৃহস্পতিবার দুদিনে নতুন করে আরও ৩০টি পরিবার ভিটেহারা হয়েছে। এ নিয়ে ইউনিয়নে ৩৮০টি পরিবার ভিটেহারা হলো। গতকাল ইউনিয়নের ১ হাজার ৮০০ পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে ত্রাণের চাল বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউপির চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান বলেন, ‘প্রায় এক সপ্তাহ ধরে নদীর পানি কমা-বাড়ায় ইউনিয়নের এক হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছে। শ্রমজীবী এসব পরিবারের সদস্যরা কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন। এসব মানুষের পর্যাপ্ত ত্রাণের চাহিদা থাকলেও সরকারি বরাদ্দ কম।

 

 

p-alo

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে