মুহাম্মদ কাইসার হামিদ, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধিঃ কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরের মোছা. শিরিন আক্তার নামে এক ডেন্টিষ্ট কর্তৃক বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, কাল্পনিক, হয়রানীমূলক ও মানহানীকর অভিযোগ দায়ের করাসহ মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে নাটকীয় সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলার রামদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মো. আলাল উদ্দিন। বুধবার (২৮জুলাই) বিকালে রামদী ইউনিয়ন পরিষদ সন্মেলন কক্ষে এ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো. আলাল উদ্দিন বলেন, গত ২৬ জুলাই সোমবার উপজেলার আগরপুর বাসস্ট্যান্ডস্থ হুযাইফা শিফা ডেন্টাল কেয়ারের সত্ত্বাধিকারী ডেন্টিস্ট মোছা. শিরিন আক্তার তার নিজ উপজেলায় সংবাদ সম্মেলন না করে কিশোরগঞ্জের বত্রিশস্থ তার ফুফাত ভাইয়ের বাসভবনে গিয়ে গোপনে বিভিন্ন অভিযোগ করে ওই চেয়ারম্যানের নামে এবং কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম সুলতান মাহামুদ ও এসআই সাদ্দামের বিরুদ্ধে টাকা দাবির অভিযোগে সংবাদ সন্মেলন করে। সংবাদ সম্মেলনে তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন দাবী করে ওই চেয়ারম্যান বলেন, শিরিন আক্তারের মেয়ে অপহরণ হয়েছিলো এমন কোন খবর তিনি শুনেননি। তিনি জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শের একজন সৈনিক দাবী করে বলেন, তিনি কোন সন্ত্রাসী বাহিনী লালন পালন করেন না এবং কোন সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ওই মহিলাকে কোন প্রকার হুমকি প্রদর্শন করেননি।

কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) একেএম সুলতান মাহামুদ একজন ধার্মিক, সৎ ও নিষ্ঠাবান মানুষ দাবী করে সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, ওই ওসি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন, রোজা রাখেন, তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করেন। তার মতো একজন সৎ ব্যক্তি ওই মহিলার নিকট টাকা দাবী করতে পারে এ কথা বিশ্বাস যোগ্যনয়। ওসি সুলতান মাহামুদ কুলিয়ারচর থানায় যোগাদান করার পর থেকে থানায় মামলা দায়ের ও জিডি করতে কোন অফিসার টাকা নিয়েছে এমন কোন ঘটনা ঘটছে বলে শুনিনি । এসআই সাদ্দাম মোল্লা রামদী ইউনিয়নে বিট অফিসার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর শিরিন আক্তারের নিকট টাকা দাবি করতেও শুনিনি।

ডেন্টিস্ট মোছা. শিরিন আক্তার ওই চেয়ারম্যান ও থানা পুলিশ কর্তৃক অবৈধ ভাবে কোন সুবিধা আদায় করতে না পারায় একটি নাটকীয় মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে তাদের বিরুদ্ধে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা অভিযোগ করে সকলের মান সন্মান ক্ষুন্ন করে আসছে। মিথ্যা অভিযোগে সংবাদ সন্মেলন সহ প্রকাশিত সংবাদগুলোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আলহাজ্ব মো. আলাল উদ্দিন বলেন, মিথ্যা অভিযোগ দায়েরের অপরাধে ডেন্টিস্ট মোছা. শিরিন আক্তারের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি কামনা করছি।

এসময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, রামদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মিজবাহ উদ্দিন শিশু মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মো. সাইদুর রহমান সবুজ, সহ-প্রচার সম্পাদক বাবু নকুল ভৌমিক, শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক মো. মাহবুবুর রহমান বিপ্লব, রামদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. মাহতাব উদ্দিন, আগরপুর বাসস্ট্যান্ড বণিক সমিতির সভাপতি আব্দুল্লাহ মলু, ইউপি সদস্য সচিব মো. বিল্লাল হোসেন, ইউপি সদস্য মো. লায়েছ মিয়া, মো. জামান মিয়া, মো. শাহজাহান, রমজান আলী, আদিল মিয়া, নির্মল মদক ও নূরজাহান সহ অবসরপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্য মো.সবুজ মিয়া ও শাহ্ আলম।

প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়াদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, এডভোকেট মুহাম্মদ শাহ আলম, লায়ন মুহাম্মদ কাইসার হামিদ, মো. মাইন উদ্দিন, মো. নাঈমুজ্জামান নাঈম, মোহাম্মদ আরীফুল ইসলাম, মোছা. শুভ্রা, শাহীন সুলতানা, আলি হায়দার শাহিন, মৌসুমী আক্তার ও মো. সবুজ মিয়া প্রমূখ।

উল্লেখ্য, মোছা. শিরিন আক্তার ওরুফে ফাতেমা কর্তৃক সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগে উল্লেখ করেছিলো, শিরিন আক্তারকে মারধোর, মেয়েকে অপহরণ ও ছেলের দাঁত ভাঙ্গার অভিযোগে গত ২ এপ্রিল কুলিয়ারচর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অভিযোগ নং-৫১৫। অভিযোগের জন্য দ্বায়িত্বরত অফিসার শিরিন আক্তারের নিকট ১০ হাজার টাকা দাবী করে। তাকে টাকা না দিয়ে তিনি কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ সুলতান মাহমুদের নিকট মামলার বিষয়টি নিয়ে গেলে তিনিও ৫০ হাজার টাকা দাবী করে। আরো উল্লেখ করেন, পূনরায় কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ সুলতান মাহমুদ তাকে থানার বাহিরে নিয়ে গিয়ে হুমকি দিয়ে বলেন আপনার কাজ করলে ৫০ হাজার টাকা দিতেই হবে। অন্যথায় আমার থানায় কোন কাজ হবেনা। আরো উল্লেখ করেন, স্থানীয় রামদি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন উক্ত ঘটনায় জড়িত ও তার লোকজন তাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে।

শিরিন আক্তারের লিখিত অভিযোগ পত্রের কোথাও উল্লেখ করা হয়নি কত তারিখ ও কোন সময় কোথায় শিরিন আক্তারের নিকট ওসি একেএম সুলতান মাহমুদ ৫০হাজার টাকা দাবি করেছেন এবং দায়িত্বরত কোন অফিসার কত তারিখ ও কোন সময় কোথায় শিরিন আক্তারের নিকট ১০ হাজার টাকা দাবি করেছে এবং রামদি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন টাকা চাওয়ার সময় কোথায় ছিলেন এবং তার কোন লোকজন তাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভাবে দেখে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে? অথছ বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ সম্মেলন নিয়ে প্রকাশিত সংবাদগুলোতে দ্বায়িত্বরত অফিসারের নাম উল্লেখ করা হয়েছে এএসআই সাদ্দাম। কুলিয়ারচর থানা সূত্রে জানা যায় এ থানায় এএসআই সাদ্দাম নামে কোন অফিসার নেই। আর কোন এএসআই শিশু অপহরণের অভিযোগ তদন্ত করতে পারে বলে মনে হয় না।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগ পত্রে কেন উল্লেখ করা হয়নি দ্বায়িত্বরত কোন অফিসার কত তারিখ ও কোন সময় কোন স্থানে তার নিকট ১০ হাজার টাকা দাবি করেছে এবং কোন কোন তারিখ ও কোন কোন সময়ে ওসি এ.কে.এম সুলতান মাহমুদ তার নিকট ৫০ হাজার করে টাকা দাবি করেছে? এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগকারী মোছা. শিরিন আক্তার ওরুফে ফাতেমা কোন উত্তরই দিতে পারেনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে