কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) থেকে,আ,ফ,ম মহিউদ্দিন শেখঃ  নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে শ্রম কল্যাণ পাবলিক পাঠাগারের উদ্যোগে দিন ব্যাপি বই পড়া উৎসব পালন করা হয়।
গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের দলিরাম এলাকায় পাবলিক পাঠাগার কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচী পালন করা হয়। পাঠাগারের সভাপতি তৌফিকুল ইসলাম মিশুক ও সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন ইমুর নেতৃত্বে এ কর্মসূচী সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। সকালে স্থানীয় শহীদ মিনারে বীর শহীদদের শ্রদ্ধা জানিয়ে র‌্যালী বের করে এ কর্মসূচীর সূচনা করা হয়। সকাল ১০টায় পাঠাগার চত্বরে শিশুদেরকে সহজ উপায়ে ছবি দেখে ও বিনোদনের মাধ্যমে লেখাপড়াকে আয়ত্ব করার নতুন কৌশল হিসাবে চার্ট দেখে বর্ণ চেনা,এলোমেলো বর্ণ সাজিয়ে লেখা,বর্ণ দিয়ে শব্দ তৈরী করা,খেলতে খেলতে লেখাপড়া আয়ত্ব করা,ঝড়ে পড়া শিশুদেরকে অত্যাধুনিক ট্যাবের মাধ্যমে বিনোদন মূলক ভাবে লেখাপড়া মূখী করে গড়ে তোলা ও নিরক্ষর মুক্ত সমাজ বিনির্মানে বিভিন্ন এলাকার অশিক্ষিত মানুষকে হাতে কলমে অক্ষর জ্ঞান দেয়া হয়।

আরডিআরএস বাংলাদেশ রিড প্রকল্পের আওতাধীন পাঠাগার কর্মসূচীর অংশ হিসাবে আমেরিকার দাতা সংস্থা আইরেক্স বিয়ন এক্সেস’র অর্থায়নে ও রিড প্রকল্পের আয়োজনে এ কর্মসূচী পালন করা হয়। দিনের কর্মসূচীর পড়ন্ত বিকালে পাঠাগারের উপদেষ্টা হেদায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে ও শাহনেওয়াজ শাহ্’র সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন, আমেরিকার দাতা সংস্থা আইরেক্স বিয়ন এক্সেস’র সিনিয়র প্্েরাগ্রাম অফিসার জোয়েল টার্নার,সেভ দ্যা চিলড্রেন রিড প্রকল্পের প্রজেক্ট অফিসার মুর্বারাত আরফিন সিলভিয়া,উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) উত্তম কুমার,কিশোরগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ বজলুর রশীদ, রিড প্রকল্পের সহকারী প্রজেক্ট অফিসার সুরাইয়া মাহিন ও আরডিআরএস বাংলাদেশ রংপুর রিজিওনাল অফিসের রিড প্রকল্পের সিনিয়র টেকনিক্যাল অফিসার নাসিম উদ্দিন আহম্মেদ প্রমূখ।

পরে পাঠাগারের শিল্পীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দিনের কার্যসূচীর সমাপ্তি ঘটে। রিড প্রকল্পের প্রজেক্ট অফিসার মুর্বারাত আরফিন সিলভিয়া জানান,আমরা সত্যিই আনন্দিত! গ্রামের একদল ত্যাগী যুবক যুবতীদের স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে গড়ে ওঠা পাবলিক পাঠাগার শুধু বাংলাদেশ নয় সাড়াবিশ্বে এ আলো ছড়িয়ে পরবে। শ্রম কল্যাণ পাবলিক পাঠাগারের মাধ্যমে শিক্ষা নিয়ে অন্যান্য এলাকায়ও এরকম উন্নয়ন মূলক কার্যক্রম শুরু হোক এটা আমাদের প্রত্যাশা। শ্রম কল্যাণ পাবলিক পাঠাগারের সকল উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের সহযোগীতা কামনা করেন। দলিরাম ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য আনিছার রহমান আনিছ বলেন,এক সময় গাড়াগ্রাম ইউনিয়ন মদ,জুয়া,পতিতাবৃত্তি,বাল্য বিবাহসহ অন্যান্য অসামাজিক কাজের অভয়ারন্য ছিল। আজ শ্রম কল্যাণ পাবলিক পাঠাগারের সকল সদস্যদের ঐকান্তিক প্রচেষ্ঠায় গাড়াগ্রাম ইউনিয়ন এখন উজ্জল নক্ষত্রে পরিনত হয়েছে।
উল্লেখ্য যে,২০১০ সালের ১৮জুন ১৪জন স্বেচ্ছাসেবী যুবকদের উদ্যোগে শ্রম কল্যাণ পাবলিক পাঠাগারের যাত্রা শুরু হয়। তৎকালীন উদ্যোক্তা রিগ্যানের সাথে সংঘবদ্ধ ভাবে কাজ শুরু করেন অন্যান্য সদস্যরা। মদ,জুয়া,বাল্য বিবাহ,স্যানিটেশন,নিরক্ষরতাদূরীকরণসহ সকল কাজে সফলতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে শ্রম কল্যান পাবলিক পাঠাগারের সদস্যরা। বর্তমানে অনলাইনের মাধ্যমে ফরম পূরণ করে ১২০জন পূর্ণাঙ্গ সদস্য কাজ করছেন এবং সদস্য হতে আগ্রহীরা প্রায় ১৫০জন আবেদন পত্র জমা দিয়েছেন। এ বছর পাবলিক পাঠাগারের আরও একটি শাখা কার্যালয় খোলা হয়।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে