মোঃ কাওছার হামিদ, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) থেকেঃ নীলফামারী কিশোরগঞ্জে ২০১৭ ও ২০১৮ ইং অর্থ বছরের জন্য গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষণ ও সংস্কারের বরাদ্দকৃত টাকা দ্বারা কোন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়নি যা সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে জানা গেছে। সংসদ সদস্য নীলফামারী-০৪ কর্তৃক ২০১৭ -১৮ অর্থ বছরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষনাবেক্ষণ কল্পে টিআর, কাবিটা, কাবিখা কর্মসূচীর একই প্রকল্পের একাধিক নাম দিয়ে প্রকল্প দাখিল করে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, এতিমখানা, হাফিজিয়া মাদ্রাসা, শ্মসান, কবর স্থান, ঈদগাহ মাঠ, সংস্কার করণের নামে প্রকল্পের বরাদ্দকৃর্ত টাকা উত্তোলন করে এমপি শওকত চৌধুরীর সাংঙ্ঘ-পাঙ্ঘোরদের সহায়তায় পি আই ও, মোফাখখারুল ইসলাম ও তার দপ্তরের কতিপয় অসাধু কর্মচারীর সহযোগিতায় আত্মসাত করেছে। প্রতিটি প্রকল্পের কাজ চলাকালিন সময়ে সাইনবোর্ড থাকার কথা থাকলেও তা করা হয় নি।

ফলে এলাকার জনগণ এ সব প্রকল্পের কাজ সম্পর্কে কিছুই জানে না। প্রকল্পগুলো সরেজমিনে সঠিক ভাবে তদন্ত করলে প্রকৃত তথ্য বেড়িয়ে আসবে। প্রকল্পের কার্যক্রমের সঠিক পরিদর্শনের নিদের্শনা থাকলেও কোন পরিদর্শন না করেই অফিসে বসে উৎকোচ গ্রহণের মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে এ সব প্রকল্পের টাকার চেক/বিল প্রদান করে দুর্নীতিবাজ পি আই ও, মোফাখখারুল ইসলাম। প্রকল্প গুলো হলোঃ মাননীয় সংসদ সদস্য শওকত চৌধুরী, আসন নীলফামারী-০৪, এর ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষনাবেক্ষণ ও সংস্কারের জন্য প্রথম পর্যায়ের ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দের মধ্যে নগদ অর্থের বিনিময়ে কাজ (কাবিটা) প্রকল্পে কিশোরগঞ্জ ইউপির ০২ নম্বর ওয়ার্ড কেশবা গ্রামের রাস্তা সংস্কার ‘‘ছাত্তার ডাক্তার এর দিঘির নিকট পাকাঁ রাস্তা থেকে কেশবা গুচ্ছ গ্রাম পর্যন্ত’’ রাস্তা সংস্কারের জন্য ৫ লক্ষ টাকার কাজ মাত্র ১০/১২ জন লোক দিয়ে একদিনে লোক দেখানো কাজ করা হয়েছে বলে স্থানীয় জনগণ জানায়। উল্লেখ্য যে এ প্রকল্পে চন্ডির বাজার থেকে কেশবা গুচ্ছগ্রাম পর্যন্ত প্রায় ১কিলোমিটার রাস্তা পাকা রয়েছে যা এ প্রকল্পের সংস্কারের আওতায় আসেনা, আসলেও পাকা রাস্তাটি সংস্কার হয়নি। এ ভাবেই প্রকল্পের অবশিষ্ট কাজ না করেই টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে পি আই ও এর যোগসাজশে।

টি আর কর্মসূর্চীর প্রথম পর্যায়ে একই সংসদ সদস্য কর্তৃক বরাদ্দকৃত ৪০ লক্ষ টাকা থেকে ইউছুফ মেম্বারের পাড়া জামে মসজিদের নামে বরাদ্দ ২ লাখ টাকা। দক্ষিণ কেশবা জামে মসজিদে দেখিয়ে ১ লাখ টাকা এবং ঐ মসজিদের নাম পুনরায় আফিজারের মসজিদ নাম দিয়ে ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়ে প্রকল্পের তালিকা দেয়। উল্লেখিত ২টি বরাদ্দের টাকা খরচ না করেই আত্মসাৎ করে এমপির লোকজন এবং পি আই ও, মোফাখখারুল ইসলাম।

এ ছাড়াও ৪৫ লাখ টাকা থেকে যে রাস্তার জন্য ৫ লাখ টাকা খরচ না করে আত্মসাত করা হয়, পুনরায় উক্ত রাস্তার বেশির ভাগ অংশে কিশোরগঞ্জ হাই স্কুল এর পিছন থেকে যুগিপাড়া হয়ে ডিগ্রি কলেজের পিছন পর্যন্ত রাস্তার সংস্কার প্রকল্পের সাথে সংযুক্ত দেখিয়ে ২য় পর্যায়ের কাজের বিনিময়ে খাদ্য (চাল) ১৭.১২৮ মেট্রিকটন বরাদ্দ দিয়ে আগের প্রকল্পের মতই মাত্র ৪/৫ জন লোক মাত্র একদিন কাজ করেছে বলে স্থানীয় জনগণের দেয়া তথ্যমতে জানা যায়। লোক দেখানো এ সামান্য কাজ বাদে আর কোন কাজ ছাড়াই বরাদ্দকৃত ৫লাখ টাকা ও ১৭.১২৮ চাল একই রাস্তার নামে আংশিক সংযুক্ত করে দুটো প্রকল্পের টাকাই আত্মসাৎ করে পি আই ও, মোফাখখারুল ইসলাম এবং এ কাজে জড়িত এমপি শওকত চৌধুরীর দলীয় লোকজন। এ সব প্রকল্পের কাজের কোন সাইনবোর্ড না থাকায় স্থানীয় ২/১ জন লোক ছাড়া অন্য কেহই এ কাজ সম্পর্কে কিছুই জানে না। চন্ডির বাজার থেকে রফিকুল মেম্বারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার দেখিয়ে ১৮০,০০০ টাকার কোন কাজ করা হয়নি।

যে প্রকল্পটিতে ৫লাখ টাকার প্রকল্পের আংশিক সংযুক্ত করে দেখিয়ে কোন কাজ না করেই সমস্ত টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে। তথ্য মতে জানা গেছে ঘুষখোর পি আই ও, মোফাখখারুল নাকি কিশোরগঞ্জ উপজেলা ছাড়াও সৈয়দপুর ও ডোমার উপজেলার পি আই ও এর দায়িত্বে আছেন। এ থেকে একটা বিষয় পরিষ্কার বুঝা যায় দূর্নীতি করার এ মহা-কারিগর কিভাবে তিন উপজেলার দায়িত্ব পেয়েছেন। অবৈধ ভাবে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে উর্দ্ধতন কতৃপক্ষকে সন্তোষ করার কারণে একই ব্যক্তি ৩ উপজেলায় দায়িত্বে থেকে দূনীর্তির মহো উৎসবের এ প্রক্রিয়া একটি উত্তম প্রক্রিয়া হিসেবে ধরা যায়।

শুধু কেশবা গ্রামে নয় পুরো উপজেলায় ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষনাবেক্ষণ বাবদ প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য সংসদীয় আসন, নীলফামারী -০৩, নীলফামারী -০৪, এবং মহিলা এমপি আসন – ৪৬ ও মহিলা এমপি আসন ০৩ কর্তৃক বরাদ্দকৃত বেশির ভাগ টাকা, চাল এবং অন্যান্য সকল বরাদ্দের ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে বিল প্রদান করে পি আই ও, মোফাখখারুল ইসলাম। ঐ প্রকল্প গুলো কোনটিরও পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হয় নি। কাজ না করে টাকা আত্মসাৎ এ যেন ‘সরকারী মাল দরিয়ামে ঢাল’’ কথাটির প্রকৃত বাস্তবায়ন। যা দেখার কেউ নেই।

এ সব দুনীতির বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, মোঃ আবুল কালাম আজাদ ও উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ রশিদুল ইসলাম এর সাথে কথা হলে তারা জানান বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে পি আইও, মোফাখখারুলের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্ঠা করেও তাকে পাওয়া যায় নি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে