আসাদ হোসেন রিফাত, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জে প্রায় ৫৩ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর(এলজিইডি)’র আওতায় গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ করার লক্ষে তুষভান্ডার(রাজবাড়ী রোড) থেকে দলগ্রাম (খোকা চেয়ারম্যানের বাড়ি) পর্যন্ত ২ হাজার ৬০০ মিটার দীর্ঘ ও ১৬ ফুট প্রস্থের নির্মাণকাজটি পায় ‘বিনিময় টের্ডাস’ নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
পরে ওই প্রতিষ্ঠানের কাছে কাজটি কিনে নেয় লালমনিরহাটের ঠিকাদার বদিউজ্জমান প্লাবন ও শাহজামাল । 
কাজ শুরুর পর থেকেই নিম্নমানের নির্মাণ  সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ ওঠে ঠিকাদারদের বিরুদ্ধে। 
এ বিষয়ে স্থানীয় লোকজন একাধিকবার  কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের  কাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা এসও মাহবুব  ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকজন কে  একাধিকবার  জানালেও কোনো কাজ হয়নি। এর আগে তুষভান্ডার বাজারের রাজবাড়ী রোডের শুরুতে নিম্নমানের কাজ করার অভিযোগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজটি বন্ধ করে দেন। বন্ধের পর একটুখানি কাজ ভাল করলে ও  আবারও “যেই লাউ সেই কদু”
স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর)  এসও মাহবুবের  উপস্থিতে তুষভান্ডার ক্রিড়া সংস্থার পাশে  বৃষ্টিতে ভেজা রাস্তায় ময়লা-ধুলাবালি আর মাটির ওপরেই তড়িঘরি করে নিম্নমানের কার্পেটিং কাজ করে যাচ্ছে।
পিচ নেই বললেই চলে। পিচ ঢালাইয়ের আগে সড়কে বিটুমিন মিশ্রিত প্রাইম কোর্ড ব্যবহারের নিয়মও থাকলেও তা না মেনেই কাজ চালাচ্ছে ফলে পিচঢালাই দিতে না দিতেই তা উঠতে শুরু করেছে। নির্মাণকাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের সামগ্রী।
এলাকাবাসী সঠিকভাবে কাজের দাবি জানিয়ে তদারকির দায়িত্বে থাকা এসও মাহবুব ও প্রজেক্টের সেলিমকে  অবগত করলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের টনক নড়েনি।
একপর্যায় স্থানীয়রা সকালে সড়কে করা কার্পেটিং বিকেলে টেনে তুলে ফেলেন এবং ভালভাবে কাজ করতে বলেন। উল্টো তড়িঘড়ি করে কাজ শেষ করার চেষ্টা করলে কাজ বন্ধ করে দেয় এলাকাবাসী। পরে কাজ বন্ধ করে ঠিকাদারের লোকজন পালিয়ে যান। এতে এসও মাহবুব ক্ষিপ্ত হন এলাকাবাসীর উপর।
এ বিষয় ঠিকাদারের ম্যানেজারের সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমরা আর কাজ করব না যা কাজ করেছি সেটার বিল তুলে নিব।
এ বিষয়ে বদিউজ্জমান প্লাবন নিম্নমানের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘সিডিউল অনুযায়ী কাজ করা হচ্ছে। আর পাকা করার জন্য যেসব পণ্য সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে  তার গুণগতমান আগেই যাচাই-বাছাই করেছেন এলজিইডি কর্তৃপক্ষ।অতএব নিম্নমানের কাজ করার প্রশ্নই উঠে না। কাজের জন্য যা যা দরকার সবকিছু দিয়েছি। কাজ বুঝে নেয়ার দায়িত্ব এলজিইডি অফিসের। অফিসের লোক কাজ ভালভাবে বুঝে নিতে না পারলে আমার করার কিছু নেই বলে জানান তিনি।
কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আবু তৈয়ব মোহাম্মদ সামছুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নিম্নমানের কাজ প্রমাণিত হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে’।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে