মঞ্চে এসেই নিজের আবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি মেসি। কিছু বলার আগেই কেঁদে ফেলেন এ আর্জেন্টাইন সুপারস্টার।

ক্যাম্প ন্যুতে হওয়া সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মেসির পরিবার, সতীর্থ ও ক্লাব অফিশিয়ালরা। প্রায় ৮ মিনিট বক্তব্য দেন মেসি। এরপর উপস্থিত সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেন মেসিকে। মেসির বক্তব্যের চুম্বক অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।

এটা আমার জন্য অনেক কঠিন। আমার জীবনের পুরোটাই এখানে কাটিয়েছি। আমি এটার জন্য প্রস্তত ছিলাম না। আমি এ ক্লাবেই থাকতে চেয়েছিলাম। আমার পরিবারও এটাই চেয়েছে। আমি ভেবেছিলাম এখানেই থাকব। কিন্তু আমাকে এই ক্লাব ও এই শহর ছেড়ে দিতে হচ্ছে। সবাইকে বিদায় জানাতে হচ্ছে। ১৩ বছর বয়সে এখানে আসি আমি। ২১ বছর কাটিয়েছি। আমি বার্সেলোনা ছেড়ে যাচ্ছি আমার স্ত্রী ও আমার তিন কাতালান আর্জেন্টাইন সন্তানদের নিয়ে।

মেসি আরও বলেন, কিন্তু আমার ইচ্ছা কয়েক বছর পর আবারো ফিরে আসব এখানে। আমি আমার সন্তানদের কথা দিয়েছি। আমি এই ক্লাবের জন্য এই জার্সির জন্য সব দিয়েছি। আমি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি সমর্থকদের আমাকে অকুণ্ঠ সমর্থন দেওয়ার জন্য।

মেসি বলেন, মহামারির জন্য গেল দেড় বছর মাঠে দর্শক ছিল না। তাদের দেখা ছাড়াই আমি চলে যাচ্ছি। আমার নাম ধরে চিৎকার করা আমি মিস করেছি। আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞ। আমাকে এলো ভালোবাসা দেওয়ার জন্য। তবে আমি আবার এসে ক্লাবে যোগ দিতে চাই। যে কোনো ভূমিকায় হলেও ক্লাবকে আবার বিশ্বসেরা করতে চেষ্টা করব।

আমার জন্য যে কোনো যে একটা সেরা মুহূর্ত বলা খুব কঠিন। ভালো খারাপ সব সময়ই ছিল। অনেক বছর এখানে ছিলাম। যে কোনো একটা মুহূর্ত বলা কঠিন। ক্লাবের হয়ে আমার অভিষেকটা আমার কাছে স্বপ্ন পূরণের মতো। সেখান থেকে শুরু হয়েছে।

মেসির এ বিদায়ের আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আবেগঘন পোস্ট করেছেন তার দীর্ঘদিনের সতীর্থ জেরার্ড পিকে। ইনস্টাগ্রামে পিকে লিখেছেন, আজ থেকে প্রায় ২০ বছর আগে ২০০০ সালে আমরা একসঙ্গে বার্সায় এসেছিলাম। ন্যু ক্যাম্পে এ সময়টা কী অবিশ্বাস্য কাটল! দ্বিতীয়বার আমি বার্সায় ফেরার পর ট্রেবল জিতলাম একসঙ্গে। তুমি হয়ে উঠলে ইতিহাসের সেরা। এত বছর পরে সেই তুমি বার্সার জার্সি আর গায়ে জড়াবে না! সত্যি বাস্তবতা কখনো কখনো খুবই কঠিন।

এ দুই তারকার ২০ বছরের বন্ধুত্ব বার্সার সঙ্গে। কিন্তু এবার পিকের সঙ্গে সেই বন্ধুত্বের পাশাপাশি শহরটার সঙ্গেও মেসির সম্পর্কের সুতাটা ছিঁড়ে গেল। যদিও পিকের আশা এলএম১০ ঠিকই একদিন আবার ন্যু ক্যাম্পে ফিরবেন।

তিনি বলেন, এখনো অনেক কিছু করার বাকি আছে। ততদিন যেখানেই থাক, সময়টা উপভোগ কর।

এর মধ্যে গুঞ্জন চলছে, প্যারিসের পথে হাঁটছেন মেসি। আর্জেন্টাইন তারকাকে বার্ষিক ৪০ মিলিয়ন ইউরো বেতনে তিন বছরের চুক্তিতে দলে ভেড়াচ্ছে ফরাসি জায়ান্ট পিএসজি, যা নেইমারের বেতনের চেয়ে পাঁচ মিলিয়ন ইউরো বেশি। ফরাসি ক্লাবটির মালিক কাতারের আমিরের ভাই খালিদ বিন হামাদ বিন খলিফা আল- থানি ইতোমধ্যেই মেসির চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শুক্রবার (৬ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি জানান তিনি। যদিও এর একদিন পরই শনিবার (৭ আগস্ট) বিষয়টি অস্বীকার করেছে পিএসজি।

SO/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে