আজ ৯ নভেম্বর ২০২০ইং তারিখ, রোজ- সোমবার , সকাল ১০ টায়, বাংলাদেশের কৃষক আন্দোলনের প্রাণপুরুষ, গণবুদ্ধিজীবী, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রখ্যাত কৃষক নেতা কমরেড আবদুস সাত্তার খান এর ৭ নভেম্বর  ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ২২/১ তোপখানা রোড, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ শিশু কল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে “কোভিড-১৯ এর প্রেক্ষাপটে দেশের কৃষি ও খাদ্য সার্বভৌমত্ব পরিস্থিতি” শীর্ষক আলোচনা সভা সংগঠনের সভাপতি কমরেড বদরুল আলম এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগরে সভাপতি কমরেড আবুল হোসাইন, ইমারত নির্মান শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার ওসমান গনি, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এএএম ফয়েজ হোসেন, বাংলাদেশ ভূমিহীন সমিতির সাধারণ সম্পাদক সুবল সরকার, বাংলাদেশ সংযুক্ত বিল্ডিং এন্ড উড ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক একেএম শহিদুল আলম ফারুক, বাংলাদেশ কৃষক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জায়েদ ইকবাল খান, বাংলাদেশ টেক্সটাইল গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ বাছির, রেডিমেড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের নেত্রী রুপালী বেগম, মাদারল্যান্ড গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সুমন প্রমূখ।

কমরেড আবদুস সাত্তার খানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বক্তারা বলেন, দেশের কৃষক ও তার সমস্যা তিনি গভীরভাবে অনুধাপন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। যে কারনে ভূমির অধিকার যে খাদ্যসার্বভৌমত্বের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত তা তিনি গত শতকের সত্তরের দশকেই উপলব্ধি করেছিলেন। ফলে ভূমিতে কৃষকের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তিনি খাসজমির আন্দোলন শুরু করেন। সে আন্দোলনের ফসল আজ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ভূমিহীন কৃষকরা ভোগ করছে। ভূমিহীন কৃষক ভূমির অধিকারপ্রাপ্ত হয়ে সামান্য হলেও মর্যাদার জীবনযাপন করছে। আর খাদ্যসার্বভৌমত্বের গোড়ার কথাই হচ্ছে ভূমিতে কৃষকের অধিকার। তিনি কৃষকের সার্বভৌমত্ব হরণকারী বহুজাতিক কৃষি ব্যবসায় কোম্পানির তীব্র বিরোধিতা করতেন। ‘সবুজ বিপ্লব’ যে কৃষকের বীজের উপর অধিকার কেড়ে নিবে তা বুঝার মত দূরদর্শিতা তার তখনই ছিল। তাই তিনি বহুজাতিক কৃষি ব্যবসায় কোম্পানি হঠিয়ে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত বীজ সংরক্ষণ করার জন্য কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতেন।

তাঁরা বলেন, আবদুস সাত্তার খান ছিলেন একজন অত্যন্ত পরিবেশ সচেতন মানুষ। পরিবেশ বিধ্বংসী সকল পরিকল্পনার তিনি বিরোধিতা করতেন।  তাঁর জীবনব্যাপী অভিজ্ঞতা হচ্ছে বাংলাদেশ কৃষকের দেশ, তাই দেশ বাঁচাতে কৃষক বাঁচাতে হবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, আজকে বিশ্বমারীর কোভিড ১৯-র মধ্যে কৃষকরা দিশেহারা। ফসলের ন্যায্যমূল্য পায় নি। অথচ নিত্যপন্যের মূল্য আকাশচুম্বী। তিনি বেঁচে থাকলে আন্দোলনের যথাযত দিক নির্দেশনা দিয়ে ঝাপিয়ে পড়তেন। কমরেড আবদুস সাত্তার খান তাঁর জীবদ্দশায়ই কিংবদন্তিতুল্য কৃষক নেতায় পরিনত হয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বের গুণাবলি আজকের প্রজন্মের কৃষক আন্দোলনের সাথে যুক্ত নেতা নেত্রীদের জন্য পাথেয় হয়ে থাকবে। আবদুস সাত্তার খান ছিলেন একজন বৈষয়িক চিন্তামুক্ত, সৎ, সাহসী ও আদর্শিক নেতা যিনি সর্বদা ন্যায়ের পক্ষে ও অন্যায়ের বিরোধী ছিলেন।

আলোচনা সভার শুরুতে কমরেড আবদুস সাত্তার খানের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।

JIK/সাধারণ সম্পাদক

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে