কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)॥থেকে,মোঃ কাওছার হামিদ : কফি পান করার অভ্যাস এদেশের মানুষের দীর্ঘদিনের কফির সঙ্গে মিশে আছে আভিজাত্যের ছাপ। স্টার মানের হোটেল, কফি হাউজ কিংবা বাড়ীতে অতিথি আপ্যায়নে কফি পানীয় হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। উত্তরের জেলা নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার কিশোরগঞ্জ বাজারস্থ বিসমিল্লাহ নার্সারীর মালিক মোঃ আব্দুল কুদ্দুস নুতন এ সম্ভাবনাময় কফি ফসলটি চাষ করছেন প্রায় ৪ বছর ধরে। কক্সবাজার জেলার জাহানারা এগ্রো ফার্ম থেকে তিনি ১৫৪ টি কফির চারা সংগ্রহ করে তার নিজস্ব নার্সারীতে রোপন করেন।

তার নিজস্ব নার্সারীতে রোপন করেন।রোপনের দুই বৎসর পর উক্ত কফির গাছে ফল আসে। প্রথমেই ৬৭ কেজি কফি উৎপাদন সম্ভব হয় বলে চাষী আবদুল কুদ্দুস জানান। তার মতে বানিজ্যিক ভাবে এ ফসলের চাষ করা হলে বদলে যেতেপারে এ অঞ্চলের অর্থনীতির চাকা। আর এমন অভিমতই ব্যক্ত করেছেন। স্থানীয় কৃষি বিভাগীয় কর্মকর্তাগন। উত্তরাঞ্চলে ৩০ লাখ কফির চারা রোপন করলে ২ বছর পর সেখান থেকে বছরে প্রায় চার হাজার কোটি টাকার কফির উৎপাদন সম্ভব বলে কৃষি বিশেষঞ্জগন ধারনা করেন, যা থেকে অর্থনৈতিক উন্নতি সাধন করা সম্ভব এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলে ও বিদেশে কফি রপ্তানী করে বৈদেশিক মূদ্রা অর্জন করা সম্ভব।কফি শব্দটি মুলত ইংরেজি ঈড়ভভবব ।

এর রং গাঢ় বাদামী, হলদে বাদামী ,ও কালো রং এর । গাছ দেখতে অনেকটা বেলি ফুলের গাছের মত।এর উচ্ছতা ও ঘের একটু বড়,যা এফ এ ও ডুকুমেন্ট রিপোসেটরী, ক্যাফে টেক্সট-১/৯৯ এবং সি এন এফ ডটকম সহ বিভিন্ন সুত্র থেকে পরিচয় সংগৃহীত হয়েছে। কফি একটি পানীয় অর্থকরী বাগিচা ফষল।উদ্ভিদ বিদ্যায় ইহা এক ধরনের চিরহরিৎ বৃক্ষের ফলবীজ।ফল পাঁকলে তা শুকিয়ে কিংবা পুড়িয়ে গুড়ো করে তা চিনি ও ঘন দুধের সাথে মিসিয়ে একে পানিয় দ্রব্য হিসেবে পরিনত করা হয় । কফিতে ক্যাফেইন নামে এক ধরনের উত্তেজক পদার্থ রয়েছে সূত্রমতে কফি জ্বালানী তেলের পরে বিশ্বের ২য় বৃত্তম বৃহত্তম পণ্য এবং পানীয় দ্রব্যের মধ্যে অন্যতম। সূত্র মতে কফির উৎপত্তিস্থল ইতিওপিয়ায় ।

তারপর ব্রাজিল থেকে ভারত এবং এরপরে বাংলাদেশে।ইউরোপীয়দের মধ্যে ব্রাজিলে বসবাসকারী পর্তুগীজদের মাঝে প্রথম কফি চাষের ভাবনা আসে। ব্রাজিলের সাওপাওলো প্রদেশের দক্ষিনে বিস্তৃর্ন এলাকায় পর্তুগীজরা প্রথমে কফির বাগান গড়ে তোলে। এখানেই কফির চাষ অধিক হারে করা শুরু হয়। কফির বিভিন্ন জাত রয়েছে। তবে রোবান্টা জাতীয় কফি স্বাদ ও গন্ধে অতুলনীয়।ব্রাজিলের জলবায়ু কফি চাষের জন্য উপযোগি। সেখানে কফির বাগান গুলোকে ফ্যাজেন্ডা বলা হয়। ব্রাজিলে বানিজ্যিক ভাবে কফির চাষ করা হয় এবং সেখান থেকেই কফি বিশ্ব বাজারে ছড়িয়ে দেয়া হয় । বর্তমানে ব্রাজিলই প্রধান কফি উৎপাদন কারী ও রপ্তানী কারক দেশ।বিশ্বের কফির চাহিদার ৪০ শতাংশই পূরণ হয় ব্রাজিল থেকে

২৯ সেপ্টেম্বর প্রতিবছর কফি দিবস হিসেবে পালন করা হয় আমেরিকায়। বর্তমানে প্রায় ৭০ টি দেশে কফির গাছ জন্মে। সবুজ কফি বিশ্বে সব থেকে বেশি বিক্রীত কৃষি পণ্যের মধ্যে একটি। দক্ষিন এশিয়ায় ভারতসহ বেশ কয়েকটি দেশে এখন কফির চাষ হচ্ছে। কক্সবাজারের জাহানারা এগ্রো ফার্ম ৯ বছর আগে ভারতের দার্জিলিং থেকে অ্যারাবিয়ান জাতের ২টি কফির চারা সংগ্রহ করে ফার্মটির পরিচালক জাহানারা বেগম। বাড়ীর আঙ্গিনায় পরীক্ষা মুলক ভাবে ২টি কফির চারা রোপন করে এবং পরিচর্যার মাধ্যমে তিনি সেখান থেকে কফি চাষের সম্ভাবনা খুঁজে পান । পরবর্তিতে তার ওই কফির গাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করে তিনি কফির চারা উৎপাদন শুরু করেন। পর্যাক্রমে তিনি বানিজ্যিক ভিত্তিতে কফির চারা উৎপাদন করলে কক্সবাজার সহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আগ্রহী কৃষকগন চারা সংগ্রহ করলে সম্ভাবনময় এ ফলটির চাষ বির্স্তৃতি লাভ করে। বাংলাদেশে কফি এখন একটি সম্ভাবনাময় ফসল । কৃষি সম্প্রসারন বিভাগ কফি চাষে প্রযুক্তিগত সহায়তা দিলে এবং সরকারি ভাবে কফি চাষে পৃষ্ঠপোষকতা পেলে অন্যান্য ফসলের পাশা পাশি কফিও একটি অন্যতম ফসলের স্থান দখর করবে বলে মনে করছেন কৃষিবিশেষজ্ঞগন । আর অদুর ভবিষ্যতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করে বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনও সম্ভব হবে বলে তাদের প্রত্যাশা

বর্তমানে এ সম্বাবনাময় ফসলটি পার্বত্য অঞ্চলে গন্ডি পেরিয়ে উত্তরের জনপদ নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলায় চাষ করা হচ্ছে । এ অঞ্চলের কফি চাষের অগ্রপথিক মোঃ আব্দুল কুদ্দুস পিতাঃ মরহুম জবান উদ্দিন মুন্সি, কিশোরগঞ্জ মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা ও কিশারগঞ্জ উপজেরা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আ ফ ম কাদিরের বড় ভাই ।কফি চাষী আব্দুল কুদ্দুস জানান,২০০৯ সালে ঢাকায় নার্সারী সমিতির মিটিং এসে তিনি ওই কফির চারার খবর পান । পরবর্তিতে ২০১৩ সালে কক্সবাজারের জাহানারা এগ্রেফার্ম থেকে ১৫৪ টি চারা সংগ্রহ করে তার নিজেস্ব নার্চারিতে রোপন করেন । সাভাবিক পরিচর্যার মাধ্যমে চারার রোপনের দুবছরের শেসের দিগে এতে ফলন আসে । পাখি যাতে ফষল নষ্ট করতে না পারে সে জন্য তিনি গাছগুলোকে জালদিয়ে ঢেকে ফল রক্ষা করেন । ময়দা মিলে ফলগুলো মাড়াই করে তিনি স্থানিয় ভাবে বাজার জাত শুর করেছেন ।

বানিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করার চেষ্টাও চালাচ্ছেন তিনি । বি এস টি আই কতৃক অনুমোদনের চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও তিনি জানান ইতো মধ্যে তার কফির চাষের খবর দেশে ও বিদেশে ছড়িয়ে গেছে বলেও তিনি এ প্রতি বেদক কে জানান কফির চাষ এ অঞ্চল সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে গেলে এবং প্রক্রিয়া জাত ও বাজার জাতে সরকার কতৃক সহয়াতা পেলে তার এ প্রয়াস সার্থক হবে বলে তিনি মনে করেন । দেশ এতে অর্থনৈতিক ভাবে এগিয়ে যাবে এবং কফি ফসল দেশর গন্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশ করতে পারলে দেশর অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হবে বলে তার ধারনা । নুতন এ ফসলটির বিষয়ে কিশোরগঞ্জ উপজেরা কৃষি অফিসার মোঃ এনামুল হকের সাথে যোগাযোগ করে আলোচনা করা হলে তিনি জানান যে কফির চাষ এ পর্যন্ত এ উপজেলায় আব্দুল কুদ্দুস সাহেবই করেছেন । বিষয়টি কতৃপক্ষের গোচরে আনা হয়েচে সংশ্লিষ্ঠ কফি চাষিকে প্রযুক্তি গত সহয়াতা ছাড়া অন্যকন সরকারি সহযোগিতা করার সুযোগ নাই । সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ছয়শত ফুট উপরে যে কোন মাটিতে কফি চাষ সম্ভব।

সামান্য ঢালু এরুপ জমি কফি চাষের উপযোগি । পাহাড়ি উপত্যকায় এবং ঝড়নার পাশের জমি যেখানে লবনাক্ততা নেই এরকম জমি কফি চাষে বেশি উপযোগি যা বিভিন্ন তথ্য এবং কৃষি বিভাগিয় কর্মকর্তাদের দেয়া তথ্য থেকে যানা যায়। অক্টবর মাস থেকে এপ্রিল মাস কফি চাষের উত্তম সময়। চারা রোপন থেকে দুবছরের মধ্যে ফল সংগ্রহ করা যায়। একটি কফি গাছ থেকে ৩০ থেকে ৩৫ বছর পর্যন্ত ফল সংগ্রহ করা যায়। প্রতি গাছে খরচ হয় ১০০-১৫০ টাকা । ফলন পাওয়া যায় প্রতি মৌসুমে প্রতি গাছ থেকে আধা কেজিরও বেশি । বাজারে প্রতিকেজির কফির মুল্য ৩০০০-৪৫০০/-টাকা । কফি গাছে বিভিন্ন উপকরন ব্যবহার করে মধু ও শ্যাম্পু তৈরি করা সম্ভব । তাই সম্ভাবনাময় এ ফষলটির চাষে সরকারি সহযোগিতা দেওয়া হলে কাঙ্খিত সফলতা আসতে পারে বলে বিশেষজ্ঞগনের ধারনা ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে