নয়ন দাস, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ ট্রাক্টরে করে বালু তোলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।কুড়িগ্রামের উলিপুরে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের মহা উৎসব চলছে। বালু বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি প্রভাবশালী চক্র। উপজেলা প্রশাসনের বিশেষ নজর না থাকায় বালুখেকোরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। এদিকে, বালু বিক্রির কারণে বর্ষা মৌসুমে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কোটি টাকার ব্লকে ধস নামার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উলিপুর উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৮টি ইউনিয়ন নদী ভাঙন কবলিত এলাকা। ভাঙন এলাকার মধ্যে হাতিয়া ইউনিয়ন অন্যতম। এ ইউনিয়নে প্রতি বছর ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের শিকার হয়ে হাজার হাজার মানুষ বাস্তুহারা হন। এরই মধ্যে ইউনিয়নের মাঝিপাড়া, অনন্তপুর ঘাট, কুমারপাড়ায় ট্রাক্টর দিয়ে অবাধে বালু বিক্রি করছে একটি প্রভাবশালী চক্র। এ চক্রের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জড়িত বলে জানান স্থানীয়রা।
এ ছাড়া গাবুরজান এলাকায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মানিক রাশেদুল, জবিয়ল নামে একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্র বালু উত্তোলন করছে। বালুখেকোরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারছেন না।
স্থানীয়রা বলেন, ব্রহ্মপুত্রের বুকে জেগে ওঠা চর ও তীরের মাটিও বিক্রি করছে কয়েকটি সংঘবদ্ধ চক্র। হাতিয়া ইউনিয়নের মাঝিপাড়া, অনন্তপুর ঘাট, কুমারপাড়ায় ট্রাক্টর দিয়ে অবাধে বালু ও মাটি বিক্রি করা হচ্ছে। প্রতিদিন ১০০-১২০টি মাটি ও বালুবাহী ট্রাক্টরের অবাধ যাতায়াতের কারণে ওই সব এলাকার পাকা-কাচা রাস্তা ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। এ বালু তোলার সঙ্গে স্থানীয় প্রভাবশালী চক্রের সোহেল, মিলন, জাহাঙ্গীর, মিন্টু, ফারুক, আলতাফ, রঞ্জু, রাজু, মুকুল, এনামুল, আনিছুর, মুন্না, সাহেব, সবুজ, মঈনুলসহ অন্য সদস্যরা জড়িত।
অভিযোগ করে স্থানীয়রা বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে নদের বালু ও মাটি অবাধে বিক্রি করে আসলেও কার্যত কোনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রশাসন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাক্টর ড্রাইভার বলেন, হাতিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে এক গাড়ি বালু আনতে আমাদের দেওয়া হয় ৬০০ টাকা। ছোট ট্রলি হলে ৪০০ টাকা দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে বালু উত্তোলনকারীদের মধ্যে অন্যতম শরিফুল ইসলাম সোহেল ও মিলন মিয়া বলেন, ‘সব ম্যানেজ করে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে বালু তোলা হচ্ছে। যেহেতু এসে দেখে গেলেন, এখন পারলে বন্ধ করে দেন।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপুল কুমার বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এ বিষয়ে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করব।