মোঃ গোলাম, ঝালকাঠি প্রতিনিধি: ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমদুল হক মনিরের ব্যবহারিত সরকারি গাড়ির ধাক্কায় এক মোটরসাইকেল চালক নিহত হয়েছেন।

(২৫মে)বৃহস্পতিবার সকালের দিকে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ঝালকাঠির ষাটপাকিয়া চৌমাথা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত মোটরসাইকেল চালক মোঃ মামুন মাঝি (৪০) নছছিটি উপজেলার ষাটপাকিয়া এলাকার বাসিন্দা।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, কাঠালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এমাদুল হক মনির সরকারি গাড়ি নিয়ে বেপরোয়া গতিতে বরিশালে উদ্দেশে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে ঝালকাঠির ষাটপাকিয়া চৌমাথা এলাকায় পৌঁছালে অপর দিক থেকে আসা মামুন মাঝির মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মামুন ছিটকে যায়।
ঘটনাস্থল থেকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে মামুনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসারত অবস্থায় দুপুরের দিকে তার মৃত্যু হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানকে বহন করা গাড়িটি বেপরোয়া গতিতে বরিশালের দিকে যাচ্ছিল। গাড়িটির সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যানের গাড়িতে তিনি ( মনির) ও পুলিশের সদস্য সহ ৪-৫ জন ছিলো।

হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, ‘অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ ও গুরত্বর আঘাতের কারণে আহতর মৃত্যু হয়।

এদিকে ঘটনার পর থেকেই বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে বলে জানা গেছে। ভূক্তভোগীদের সাথে বিষয়টি আপোষ মিমাংসা করার জন্য দৌড়ঝাঁপ শুরু করছে উপজেলা চেয়ারম্যান এমাদুল হক মনির।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, দীর্ঘদিন যাবত উপজেলা চেয়ারম্যান মনির তার সরকারি নিযুক্ত গাড়ি চালক মোঃ শামিমকে বাদ দিয়ে তার নিজস্ব দেহরক্ষী আবুল বাশার বাবুকে দিয়ে গাড়িটি চালিয়ে আসছে। আজ ( দুর্ঘটনার দিন) বাবু গাড়িটি চালাচ্ছিল।

বিষয়টি স্বীকার করে চালক আবুল বাশার বাবু বলেন, ‘ আমি উপজেলা চেয়ারম্যানের ড্রাইভার না, আমি তার দেহরক্ষী। তার ড্রাইভার অসুস্থ থাকায় আমি গাড়ি চালিয়েছি। আমাদের গাড়ির কোন ক্ষতি হয়নি। আমরা মানবিক ভাবে তাকে (মামুন) আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসছি’। সরকারি গাড়ি চালানোর নিয়ম আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন‘ নিয়মে তো অনেক কিছুই নেই’।

এদিকে ঘটনার পর কাঠালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এর সরকারি নিযুক্ত গাড়ি চালক মোঃ শামিমকে ফোন করা হলে তিনি ফোনটি রিসিভ করে সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর লাইন কেটে দিয়ে বন্ধ করে রাখে।

এ বিষয়ে জানতে কাঠালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান এমাদুল হক মনিরের মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।

এ বিষয়ে নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর বলেন, আমি বিষটি শুনছি। এখন পর্যন্ত মরদেহ বরিশাল থেকে আনা হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন যাবত কাঠালিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এমাদুল হক মনির তার ব্যক্তিগত চালক নিয়ে সরকারি গাড়ির অপব্যবহার করে আসছে। সরকারি বিধি না মেনে প্রায় সময় জেলার বাইরে বিভিন্ন স্থানে গাড়ি নিয়ে ছুটে চলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর আগে তিনি তার গাড়ি নিয়ে তার মায়ের নির্বাচনী প্রচরনাসহ দলীয় কাজে ব্যবহার করছে। এছাড়াও চেয়ারম্যান এমাদুল হক মনির আলোচিত মিতু আক্তার দোলা ধর্ষন মামলার প্রধান আসামী।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে