ডেস্ক রিপোর্টঃ আজ সোমবার পয়লা ফাল্গুন। ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন। শীতের শেষে ঋতুচক্রের এই মাস বাঙালির জীবনে প্রকৃতির রুপ বদলে যায়। শুরু হয় অন্যরকম জীবনধারা।

ফুল ফুটবার এই দিন। ঝরে পরা শুকনা পাতার মর্মর ধ্বনির দিন। কচি পাতায় আলোর নাচনের মতোই বাঙালির মনেও দোলা লাগায়। একই সাথে বাসন্তি রঙয়ের শাড়ি ও পাঞ্জাবি গায়ে জড়িয়ে আনন্দে মেতে ওঠার আহবান।

                  এমনই আগুন লাগবে কৃষ্ণচূড়ায়। ছবি: সংগৃহীত 

এ সময়েই শীতের জীর্ণতা সরিয়ে ফুলে ফুলে সেজে ওঠে প্রকৃতি। গাছে গাছে নতুন পাতা, স্নিগ্ধ সবুজ কচি পাতার ধীর গতিতে বাতাসের সঙ্গে বয়ে চলা জানান দেয় নতুন কিছুর।

শীতে খোলসে ঢুকে থাকা বনবনানী অলৌকিক স্পর্শে জেগে উঠে। পলাশ, শিমুল গাছে লাগে আগুন রঙের খেলা। প্রকৃতিতে চলে মধুর বসন্তে সাজ সাজ রব।

এ ছাড়াও পাতার আড়ালে আবডালে লুকিয়ে থাকা বসন্তের দূত কোকিলের মধুর কুহুকুহু ডাক, ব্যাকুল করে তুলবে অনেক বিরোহী অন্তর । যদিও এই ব্যাস্ত নগরীতে এ চিত্র দেখা বা শোনা দুষ্কর। তবুও কবির ভাষায়, ‘ফুল ফুটুক আর না ফুটুক আজ বসন্ত।’

                বসন্তের স্পন্দন কোমলমতি শিশুদেরও ছুঁয়ে যায়। ছবি: সংগৃহীত

বাংলা সাহিত্যে বসন্ত বন্দনা যেভাবে হয়েছে তেমনি রাজনীতিতেও এ বসন্তের গুরুত্ব কম নয় । এ বসন্তেই ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে বাঙালির স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়েছিল। যা পরবর্তিতে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পূর্ণতা লাভ করেছিল।

বসন্ত মানেই পূর্ণতা। বসন্ত মানেই নতুন প্রাণের কলরব। মিলনের এ ঋতু বাসন্তী রঙে সাজায় মনকে, মানুষকে করে আনমনা। অন্যদিকে, শহরের নাগরিক জীবনে বসন্তের আগমন বার্তা নিয়ে আসে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ ও একুশের বইমেলা।

জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ ২২ বছরের ধারাবাহিকতায় এবারও বসন্তের প্রথম দিনে বসন্ত উৎসবের উদ্যোগ নিয়েছে। এ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় দিনব্যাপী এবং ধানমন্ডির রবীন্দ্র সরোবর মঞ্চ লক্ষীবাজারের বাহাদুর শাহ পার্ক এবং উত্তরার ৩নং সেক্টরের রবীন্দ্রসরণীর উন্মুক্ত মঞ্চে বিকেল থেকে রাত অবধি বর্নঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে গানের দল সমগীত বনার্ঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

            বসন্তবরণ উৎসবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তরুণীদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। ছবি: সংগৃহীত 

দিনের শুরুতেই মতিয়ারের সারেঙ্গী বাদন ও অসিত কুমার দের শাস্ত্রীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা হবে। সভাপতি আলী যাকের এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট স্বাক্ষরিত পরিষদের এক বিঞ্জপ্তিতে আজ জানানো হয়েছে, উৎসবে ত্রিপুরার আগরতলা থেকে একটি নৃত্য দল অংশগ্রহণ করবে। এ ছাড়াও শিশু-কিশোরদের পরিবেশনা আদিবাসী পরিবেশনা, বসন্তকথন পর্ব, বসন্ত শোভাযাত্রা, আবীর ও প্রীতিবন্ধনী বিনিময়, রংতুলিতে বসন্ত ও দলীয় সংগীত, দলীয় আবৃত্তি, একক সংগীত, একক আবৃত্তি পরিবেশিত হবে।

পি/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে