ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট (আইসিটি) প্রয়োজনে সংশোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, আইনের যাতে মিসইউজ না হয় এজন্য সারা পৃথিবীর যে বেস্ট প্র্যাকটিসেজ আমাদের দেশের জন্য কতটুকু প্রয়োজন সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে সেটা আমরা হয়তো বিধি দিয়ে গ্রহণ করবো।যদি প্রয়োজন হয় আইন কিছুটা সংশোধনও করা হবে।
বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের তৃতীয় দিনে আইন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ এবং আইন ও বিচার বিভাগের নির্ধারিত অধিবেশন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস অফিসের সঙ্গে দুবার আলোচনা করেছি, একটি কমিট তৈরি করা হয়েছে। সেই অফিসকে অবহিত করা হয়েছে আমরা আলোচনার জন্য প্রস্তুত। তারা যেন শিগগিরই আমাদের তারিখ দেয়। সেই তারিখ অনুযায়ী আমরা আলোচনায় বসতে রাজি আছি। লেজেসলেটিভ বিভাগের সচিবের নেতৃত্বে কমিটিতে আইন ও বিচার বিভাগ, আইসিটি, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে ছয় সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।
তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে মামলা করার সঙ্গে সঙ্গে এটা যেন মামলা হিসেবে গ্রহণ করা না হয়। আইসিটি অ্যাক্ট অনুযায়ী যেন সেলে পাঠানো হয়। সংবাদ মাধ্যমের কর্মী যারা, যারা সাংবাদিক তাদের যেন ইমিডিয়েটলি অ্যারেস্ট না করা হয়, সেটার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এ নির্দেশনা দেওয়ার পরে কিন্তু এ আইনে সাংবাদিকদের গ্রেফতার করাটা অনেকাংশে কমে গেছে।
কমিটির কাজ কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, এ আইন প্রধানত সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য করা হয়েছে। বাকস্বাধীনতা বা সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য করা হয়নি। সেটা যদি করা হতো এটা আইন হিসেবেই গণ্য হতো না। কারণ সংবিধানে মৌলিক অধিকার হিসেবে বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে রাখা হয়েছে। আমরা একটু আগে এ আইন করেছি, অনেক দেশেই করা হয়েছে এবং অনেক দেশ এ আইন করা আবশ্যক মনে করছে।
আইন যখন বাস্তবায়ন করা হয় সেখানে কিছু মিসইউজ ও কিছু অ্যাবিউস হয়েছে উল্লেখ করে আনিসুল হক বলেন, আইনের যাতে মিসইউজ না হয়, সারা পৃথিবীর যে বেস্ট প্র্যাকটিসেজ জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস অফিসের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে বেস্ট প্র্যাকটিসগুলো নির্ণয় করে আমাদের দেশের জন্য কতটুকু প্রয়োজন সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে সেটা আমরা হয়তো বিধি দিয়ে গ্রহণ করবো। যদি প্রয়োজন হয় আইন কিছুটা সংশোধনও করা হবে।
নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগে আইন চলমান অধিবেশনে পাস করার চেষ্টা করা হবে।
ভূমির নিবন্ধন প্রক্রিয়া ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে দেওয়া নিয়ে এক প্রশ্নে আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে অনুশাসন দিয়েছেন এটা আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী যেখানে অনুশাসন দিয়েছেন সেখানে আলোচনার কোনো অবকাশ থাকতে পাবে না।
ডিসিদের ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, আমি বিচারাধীন বিষয় নিয়ে কথা বলি না। আমি ডিসিদের বলেছি বিষয়টি বিচারাধীন আছে। যখন রিভিউ হবে তখন আমরা চেষ্টা করছি যেখানে ক্রটি বিচ্যুতি আছে তার সমাধান করা। যে রায় দেওয়া হয়েছে সেটি স্থগিত আছে। আমি তাদের এটা জানিয়েছি। দণ্ডবিধির ২২৮ ধারা ভ্রাম্যমাণ আদালত আইনের তফসিলে যুক্তের দাবি জানিয়েছেন ডিসিরা।
আইনমন্ত্রী বলেন, সিআরপিসি অনুযায়ী সামারি ট্রায়াল ও পাশাপাশি বেইলেবল। সেটা ভ্রাম্যমাণ আদালতে স্থানান্তর করতে অসুবিধা হওয়ার কথা না। তবুও আমি এটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেব।
ban/N