wood-burning-stove

বিডি নীয়ালা নিউজ(২৬জানুয়ারি১৬)- ঢাকা প্রতিনিধিঃ  “সারা দিন গ্যাস থাকে না। রাতে বারোটার দিকে গ্যাস আসে – যখন ঘুমোবার সময়। আবার ভোর ছয়টা না হতেই গ্যাস চলে যায়। তাই রাত জেগে রান্না করতে হয়।” এই হচ্ছে ঢাকার গ্যাস সংকটের চিত্র, বলছিলেন কাঁঠালবাগান-গ্রীন রোড এলাকার বাসিন্দা নাসরিন সুলতানা পান্না।

“সকালবেলার খাবার এমনকি বাচ্চাদের স্কুলের টিফিনও দেয়া যায় না। শীতকাল এলে প্রতিবছরই এ সমস্যা হয়, কিন্তু এবার মাসখানেক ধরে এই গ্যাস সংকট খুব বেশি রকম বেড়ে গেছে।” বলছিলেন তিনি।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় রান্নার গ্যাসের তীব্র সংকট চলছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে ঢাকার কাঁঠালবাগান গ্রীনরোড এলাকা।

যারা পরিবার নিয়ে বসবাস করেন তারা হংতো মধ্যরাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারেন গ্যাস আসার জন্য। কিন্তু যেসব শিক্ষার্থী বা চাকুরিজীবী মেসে থাকেন – তাদের সংকট আরো চরমে।

একজন বলছিলেন, “গ্রীন রোড এলাকায় এরকম বেশ কিছু মেস আছে। এখানে যারা থাকেন তারা বলছিলেন, অবস্থা এমন যে এখানে কাজ করতে গৃহকর্মীরাও আসতে চায় না। এসেই বা কি করবে, গ্যাস না থাকলে রান্না করবে কি করে?”

“রাত বারোটার সময় গ্যাস আসে, তাই না ঘুমিয়ে রান্না করতে হয়। সারাদিন গ্যাস থাকে না। রান্না করে যে কাজের বুয়া সে-ও আসতে চায় না। দোকানে খেতে গেলেও সকালবেলা ভাত পাওয়া যায় না।”

“রাত বারোটার সময় রান্না করতে হয়। না পারলে সারাদিন মুড়ি কিংবা ড্রাই ফুড খেয়ে থাকতে হয়।”

মেসেরই বাসিন্দা আরেকজন বলছিলেন, “পানি ফোটানোর জন্য যেটুকু গ্যাস দরকার তাও আমরা পাই না। বাইরে থেকে পানি কিনে এনে খেতে হয়।”

সন্ধ্যা ছ’টার দিকে কাঁঠালবাগানেরই একটি বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল গ্যাসের চুলায় যেটুকু আগুন জ্বলছে তা অনেকটা মোমবাতির শিখার মতো।

এ অবস্থায় অনেকেই বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডার, কেরোসিন বা লাকড়ির চুলার ব্যবস্থা করেছেন। একজন গৃহিণী বলছিলেন, একটা পরোটা কিনতেও দশ টাকা লাগে – তাই খরচ পোষাতে লাকড়ি দিয়ে রান্নাবান্না হচ্ছে।

তিনি বলছিলেন, “ফ্ল্যাটবাড়িতে কি এভাবে লাকড়ি দিয়ে রান্না করা যায়? গ্যাসের দাম বাড়িয়ে চারশ থেকে ছয়শো করা হয়েছে, তার পরও আমরা গ্যাস পাবো না কেন? আর গ্যাস যদি না-ই থাকে, তাহলেও টাকাটা তো ঠিকই বাড়ানো হলো! ”

এই সংকট কবে নাগাদ দূর হবে – তার পরিষ্কার কোন চিত্র কারো কাছেই নেই।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে