সাম্প্রতিক সংবাদ

প্রথম দিনেই জয় হল বাংলাদেশের

bongobondhu

বিডি নীয়ালা নিউজ(৮জানুয়ারি১৬)- অনলাইন প্রতিবেদনঃ আজ উদ্বোধন হলো বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ।প্রথম দিনেই গোল পাল্টা গোলের জমজমাট খেলা । প্রথম ম্যাচেই রোমাঞ্চকর ফুটবল উপভোগ করল যশোরের দর্শকেরা। সেই আনন্দে বাড়তি মাত্রা যোগ হলো শেষ পর্যন্ত গোল আর পাল্টা গোলের খেলায় জিতল  বাংলাদেশ । শ্রীলঙ্কাকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে বাংলাদেশ।

৫২ মিনিটে ৫ গোল! এর মধ্যে তিনটি গোলই হয়েছে মাত্র ৪ মিনিটের ব্যবধানে। ‘গোল-পাল্টা গোলের খেলা’ তো আর এমনি বলা হচ্ছে না। সেই সময়ের ২-১ স্কোর লাইনটা প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে ৩-১ করে ফেলে বাংলাদেশ। তবে খেলার মাঝবিরতির এই স্বস্তি দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই উবে যায় শ্রীলঙ্কা ৩-২ করে ফেললে। সাফের হতাশা ভুলতে দারুণ একটা জয় ভীষণ দরকার ছিল। কিন্তু গোলমুখে বাংলাদেশের কয়েকটি সুযোগ হাতছাড়া করা আর শ্রীলঙ্কার বেশ কয়েকটি গোছানো আক্রমণ টেনশন বাড়াচ্ছিল। শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে জয় হাতছাড়া করার অভিজ্ঞতা নিকট অতীতেও বেশ কয়বার হয়েছে বাংলাদেশের।
তবে আশার কথা, শেষ মুহূর্তে শ্রীলঙ্কার রক্ষণের ছেলেমানুষী ভুলের পুরো সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশ ৪-২ করে ফেলে। ম্যাচটাও শেষ করে দেয়। ভুটানের বিপক্ষে জোড়া গোল করা শাখাওয়াত রনি টানা দ্বিতীয় ম্যাচে করলেন জোড়া গোল। অন্য দুটি গোল ইয়াসিন ও জীবনের।
ম্যাচের শুরু থেকেই বাংলাদেশ হাবে-ভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছিল, ‘আজ কিছু একটা করে দেখাতেই হবে।’ সাফের ব্যর্থতা হয়তো গোল্ড কাপ দিয়ে ভোলানো সম্ভব নয়, কিন্তু এই বার্তাটা তো দেওয়া সম্ভব, যে এই দল অন্তত খেলতে জানে। সেই লক্ষ্যেই যেন এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দুই উইং ব্যবহার করে আক্রমণে উঠছে বাংলাদেশ। ডান দিক দিয়ে জাহিদের চাতুর্য, আর বাঁ দিকে সোহেল রানার গতি ব্যবহার করে শ্রীলঙ্কার অর্ধে আক্রমণ করছে বাংলাদেশ। পেছনে থেকে ম্যাচের গতিনিয়ন্ত্রণ করার জন্য মামুনুল-জামালরা তো আছেনই।
এমনই উইং ব্যবহার করেই ১৭ মিনিটে প্রথম গোলটি পেয়েছে বাংলাদেশ। ডান দিক দিয়ে জাহিদ আক্রমণে উঠে বক্সে যে মাইনাসটি করলেন, সেটি থেকে গোল না করতে পারাটা ঘোরতর অপরাধই হতো। ‘অপরাধ’টি করলেন না শাখাওয়াত হোসেন রনি। বক্সের মাঝ থেকে সহজ ফিনিশে বল জড়িয়ে দিলেন শ্রীলঙ্কার জালে।
তবে এই গোলের আনন্দটা মিলিয়ে গেল ৩ মিনিট পর। শ্রীলঙ্কার আক্রমণটা ভালো ছিল ঠিক, তবে সেটি ঠেকানোও খুব বেশি কঠিন ছিল না। সেই সহজ কাজটিই করতে গিয়ে অনেকটা লেজেগোবরে করে দিলেন নাসির। বক্সে ফাউল করে উল্টো পেনাল্টি উপহার দিয়ে বসলেন লঙ্কানদের। তা থেকে গোল করে সমতায় ফিরে আসে শ্রীলঙ্কা।
এক মিনিট পরই আবার গোল! আবার এগিয়ে গেল বাংলাদেশ! অবশ্য কিছুটা ভাগ্যপ্রসূত। কর্নার থেকে ইয়াসিনের হেডটা শ্রীলঙ্কান ডিফেন্ডারদের পায়ের ফাঁক গলে কীভাবে যেন ঢুকে গেল জালে। অবশ্য তা নিয়ে থোড়াই কেয়ার করার সময় আছে মামুনুলদের। তাঁরা বরং আরও কীভাবে ব্যবধান বাড়িয়ে নেওয়া যায় সেই চেষ্টাই করতে লাগলেন। চেষ্টা সফল হলো ৪৪ মিনিটে। ফ্রি কিক থেকে জাহিদের ক্রসটা বক্সে ঢোকার আগে শ্রীলঙ্কার এক খেলোয়াড়ের গায়ে লেগে গেল। তাতে লাভই হলো বাংলাদেশের। এগোতে থাকা স্ট্রাইকার নাবিব নেওয়াজ জীবনের পায়েই এসে পড়ল বল। ফলাফল-সহজ গোল। ৩-১।
তিনটি গোল করেছে দল। খেলেছেও বেশ ভালো। গোল মিসের আক্ষেপটা বাড়ল দ্বিতীয়ার্ধে। দ্বিতীয়ার্ধের ৭ মিনিটে শ্রীলঙ্কা আরও একটি গোল করে স্কোরটাকে ৩-২ বানিয়ে দেয়। ম্যাচে দেখা দেয় টান টান উত্তেজনা। বাংলাদেশ সমর্থকেরা তখন আগের সুযোগগুলো কাজে লাগাতে না-পারার আক্ষেপে পুড়ছে। কী হতো ৩২ মিনিটে অমন দুর্দান্ত দলীয় আক্রমণের পর মামুনুলের থ্রু পেয়ে গোলরক্ষককে কাটিয়েও নাসির গোলটা মিস না করলে? সেই আক্ষেপ আরও বাড়ল দ্বিতীয়ার্ধেও রনি একটি সহজ গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন বলে।
মাত্র এক গোলে এগিয়ে বাংলাদেশ। শীতের বিকেলে ফুটবলের উত্তাপ। শ্রীলঙ্কা একটা গোল পেতে মরিয়া। গোল খেয়ে গেলে ম্যাচটা ড্র হয়ে যায়। এমন সময় ৮৫ মিনিটে শ্রীলঙ্কার ডিফেন্স বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে হেড করে উল্টো নিজেদের জালের দিকে ঠেলে দিল বল। আত্মঘাতীই গোল হতো। কিন্তু ততক্ষণে বক্সে ঢুকে পড়া রনি ও.জি-এর বদলে গোলের পাশে নিজের নাম লেখাতে চাইলেন। আলতো টোকায় বল জালে। ৪-২!
সাফের ক্ষতে সান্ত্বনার প্রলেপটা অন্তত পড়ল। তবে সবচেয়ে ভালো হবে, গতবার এই আসরের রানার্স আপ বাংলাদেশ যদি ফাইনালে ট্রফিটাও জিততে পারে।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinmail

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
shared on wplocker.com