সাব্বির আলম বাবু, প্রতিনিধিঃ নিষেধাজ্ঞার আগে ভোলার উপকূলের জেলেদের জালে সাগর মোহনায় প্রতিদিন ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। ইলিশ মৌসুমের শেষ সময়ে জেলেরা দিনরাত ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে জাল ফেলতে নদীতে যাচ্ছেন।
এ কারণে জেলেপাড়ায় এখন ব্যস্ততা বেড়ে গেছে। আশ্বিনী পূর্ণিমার সময় প্রধান প্রজনন মৌসুম হিসেবে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত শুরু হবে প্রজনন মৌসুমের নিষেধাজ্ঞা। মোট ২২ দিন সারা দেশে ইলিশ আহরণ, পরিবহণ, ক্রয়-বিক্রয়, মজুদ ও বিনিময়ও নিষিদ্ধ থাকবে।
ইলিশের ভরা প্রজনন ও ডিম ছাড়ার সময় হলেও এবার আগেভাগে ডিম ছাড়তে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ মেঘনার এসব অঞ্চলে উঠে আসছে। এদিকে মৌসুমের শেষ সময়ে ইলিশ ধরে দাদনের টাকা পরিশোধের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ বছর ইলিশ মৌসুমের গত ৩ মাসে অমাবস্যার জোঁ ছাড়া তেমন ইলিশ মেঘনায় ধরা পড়েনি। ২-১ ঝাঁকে বড় ইলিশ ধরা পড়লেও অধিকাংশ সময় জেলেরা মাছ বিক্রি করে ট্রলারের জ্বালানি তেলের খরচ জোগাতে পারেনি।
অন্যদিকে ঝাঁকের ইলিশ ধরে জেলেরা পাড়ে না ফিরতেই একশ্রেণীর ভ্রাম্যমাণ মাছ ব্যবসায়ী ওই সব মাছ মধ্য মেঘনা থেকেই সস্তায় কিনে নিয়ে লঞ্চ-ট্রলারযোগে ঢাকাসহ বড় বড় শহরে পাঠিয়ে দেয়। এছাড়া ভারতে মাছ ব্যবসায়ীদের এজেন্টরাও একই পদ্ধতিতে জেলেদের কাছ থেকে মাছ সংগ্রহ করে থাকে। মধ্য মেঘনায় মাছ কেনা-বেচার কারণে জেলেরা এ বছর মাছের দাম পায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
গত ২ দিন ধরে ঝাঁকের ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করায় সাধারণ জেলেরা লোকসান পুষিয়ে নিতে দিনরাত মেঘনায় জাল ফেলছেন। মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ইলিশ রক্ষায় আশ্বিনী পূর্ণিমার সময় প্রধান প্রজনন মৌসুম হিসেবে বিবেচনা করে আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত শুরু হবে নিষেধাজ্ঞা। এ অঞ্চলের ইলিশ চ্যানেলে মাছ ধরা বন্ধ থাকার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এরপর ১ নভেম্বর থেকে ৬ মাসের জন্য জাটকা ধরা আইন বলবত থাকছে। এসব আইনের জন্য বলা যায় বর্তমান সময়ই হচ্ছে ইলিশ মৌসুমের শেষ সময়। ফলে আগামী ২-৩ দিন বিনাবাধায় মেঘনায় জেলেরা জাল ফেলতে পারছে। আর এ সময়ে সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ উঠে আসায় ওইসব ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে। মাছ ধরার বাধা না থাকায় জেলেরা ডিমওয়ালা ইলিশসহ জাটকা ইলিশও ধরছে নির্বিঘ্নে। জেলেরা জানায়, প্রতি বছর মৌসুমের শেষ সময়ে বড় ইলিশ ডিম ছাড়তে ভোলার শাহাবাজপুর চ্যানেলের মিঠা-নোনা পানিতে চলে আসে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার পাশাপাশি গত কয়েক দিন টানা বৃষ্টি শুরু হওয়ায় মেঘনা ও সাগর মোহনায় ইলিশ বিচরণের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে বলেও জেলেরা জানায়। এ কারণে ঝাঁকের ইলিশ উঠে আসছে। মাছ ব্যবসায়ী হাসেম মহাজন জানান, গত ২ দিন ধরে কিছু মাছ পড়তে শুরু করেছে। তবে ডুবোচরের চেয়ে গভীর পানিতে এসব মাছ ধরা পড়ছে। এতে সাধারণ জেলেরা লাভবান হচ্ছেন।