বিডি নীয়ালা নিউজ(১৬জানুয়ারি১৬)- স্পোর্টস ডেস্কঃ সাকিব আল হাসানের শেষ বাউন্ডারিগুলো বারবার ভেসে উঠছিল বিশাল পর্দাটিতে, তাই পর্দার দিকে তাকাতেই চোখ সরিয়ে নিলেন মাসাকাদজা। পাশের ইলেকট্রনিক স্কোরবোর্ডে ডিজিটাল অক্ষরে লেখা, ‘বাংলাদেশ ৪ উইকেটে জয়ী’।
মাসাকাদজা যাচ্ছিলেন ম্যাচ-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে। ওখানে হেরে যাওয়া দলের প্রতিনিধি সাধারণত অধিনায়কেরাই হন। কদাচিৎ ব্যতিক্রম ঘটে এবং মাসাকাদজা কাল সেই ব্যতিক্রম। জিম্বাবুয়ে ম্যাচ হারলেও ম্যাচের সেরা খেলোয়াড় যে তিনি!
বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা পুরো উল্টো। শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে কাল সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি তারাই জিতেছে, কিন্তু দলে ‘সেরা’ খেলোয়াড় খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না! সাব্বির রহমানের ৩৬ বলে ৪৬ তাঁর আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পারে। কিন্তু সেটা সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি আদায়ে যথেষ্ট নয়। ব্যাটিং অর্ডার এলোমেলো করে দিয়ে নতুন সমন্বয় খোঁজার গবেষণায় সাকিব আল হাসান নামলেন ছয় নম্বরে। শেষ অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে দলকে ম্যাচ জিতিয়ে আনার দায়িত্ব পালন করেছেন, কিন্তু সেটি মাসাকাদজার মতো একক আলোয় উজ্জ্বল হওয়ার মতো কিছু ছিল না। তা ছাড়া ৪ ওভারে ৪৫ রান দিয়ে বল হাতে সাকিব টি-টোয়েন্টিতে নিজের সবচেয়ে বাজে দিন কাটিয়ে ফেলেছেন আগেই। ফিল্ডিংয়ে ছেড়েছেন সহজতম এক ক্যাচ। ব্যক্তিগত ৭৩ রানে মুস্তাফিজের বলে মিড অনে সহজ ক্যাচ তুলেছিলেন মাসাকাদজা। সূর্যকে পেছনে রেখে দাঁড়িয়েও কেন যে বলের ফ্লাইট বুঝতে পারলেন না সাকিব! তাঁর দক্ষ হাত ফসকে এমন ক্যাচ পড়ে যাওয়াটা বিস্ময়করই।
টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সর্বোচ্চ ১৬৫ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড আছে বাংলাদেশ দলের। কাল জেতা হলো দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬৪ রান তাড়া করে। তবু কি মন ভরছে? জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে শুধু জয়ে সন্তুষ্ট থাকার দিন যে অনেক আগেই অতীত! বেশ কয়েক বছর ধরেই এই দলটার বিপক্ষে যেকোনো জয়ে কিছু অলংকারও খোঁজা হয়। নইলে জয়টাকে মনে হয় পানসে। কালকের জয়টাকেও মনে হচ্ছে সে রকম। একটু এলোমেলো, যেন জেতার জন্যই জেতা।
পরপর ২ উইকেট নিয়ে মুস্তাফিজ হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন। সেটা সত্যি হয়ে গেলেই কিছুটা অলংকৃত হতে পারত নিজের মাঠে তাঁর প্রথম ম্যাচ। কিন্তু হলো না। এখন তাই ওই দুই বলে চিগুম্বুরা ও জঙ্গুয়েকে আউট করার ধরন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। দুই ব্যাটসম্যানের কেউই বুঝতে পারেননি মুস্তাফিজের বল। দুই পা এগিয়ে তিন স্টাম্পই খালি করে দিয়েছিলেন চিগুম্বুরা। মুস্তাফিজের ইয়র্কার বেছে নিল লেগ স্টাম্পটাকে। পরের বলে তো অতিচালাকি করতে গিয়ে গলায় দড়ি পড়ল জঙ্গুয়ের! না রিভার্স সুইপ, না সুইচ হিট জাতীয় কিছু একটা করতে গিয়ে খোয়ালেন মিডল স্টাম্প।
পরীক্ষা-নিরীক্ষার ম্যাচ সব সময় তৃপ্তি-অতৃপ্তির মিশ্র অনুভূতি নিয়েই শেষ হয়। তবে অর্ধেক খালি গ্লাস মানে তো অর্ধেক ভরা গ্লাসও। তার ওপর নতুন বছরটা শুরু করা গেল জয় দিয়ে। এই জয়ের মধ্যে অতৃপ্তির কাঁকর আর কে বাছতে যাবে?