সাম্প্রতিক সংবাদ

চূড়ান্ত রায়েও বুদ্ধিজীবী হত্যাকারী নিজামীর ফাঁসি বহাল

nizami1

বিডি নীয়ালা নিউজ(৬জানুয়ারি১৬)- অনলাইন প্রতিবেদনঃ বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ একাত্তরে গণহত্যা ও ধর্ষণের দায়ে আলবদর বাহিনীর সুপ্রিম কমান্ডার মতিউর রহমান নিজামীর ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ বহাল রেখেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে করা জামায়াতের আমির নিজামীর আপিল আবেদন আংশিক খারিজ করে দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত।

নিয়মানুযায়ী এখন আপিল রিভিউয়ের সুযোগ পাবেন নিজামির আইনজীবীরা। বুধবার সকাল ৯টার দিকে  প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার  সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। এই বেঞ্চের অন্য বিচারপতিরা হচ্ছেন, বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।

নিজামীকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ৪টি অভিযোগে দেওয়া ফাঁসির রায়ের ৩টি ও ৪টি অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া রায়ের মধ্যে ২টিকে বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।   এর মধ্যে ২, ৬ ও ১৬ নম্বর অভিযোগে পাবনার বাউশগাড়ি, ডেমরা ও রূপসী গ্রামের প্রায় সাড়ে ৪০০ মানুষকে পাকিস্তানি সেনারা হত্যা ও ৩০-৪০ জন নারীকে ধর্ষণ; পাবনার ধুলাউড়ি গ্রামে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ ৫২ জনকে হত্যা এবং পরিকল্পিতভাবে বুদ্ধিজীবী গণহত্যার দায়ে নিজামীর ফাঁসির রায় বহাল রেখেছে আপিল বিভাগ। ৪ নম্বর অভিযোগে পাবনার করমজা গ্রামে নয়জনকে হত্যা, ধর্ষণ ও লুটপাটের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ড হলেও আপিলে তিনি খালাস পেয়েছেন।

ট্রাইব্যুনালের রায়ে ১, ৩, ৭ ও ৮ নম্বর অভিযোগে আটক, নির্যাতন, হত্যা, মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র ও সংঘটনে সহযোগিতার চারটি অভিযোগে নিজামীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। সর্বোচ্চ আদালত প্রথম দুটিতে খালাস দিয়ে পরের দুটিতে সাজা বহাল রেখেছে। এর মধ্যে ১৯৭১ সালের ৩ নভেম্বর নিজামীর দেওয়া তথ্য অনুসারে বৃশালিখা গ্রামের সোহরাব আলীকে পাকিস্তানি সেনারা আটক করে হত্যা ও ৩০ আগস্ট নিজামী ঢাকার নাখালপাড়ার পুরোনো এমপি হোস্টেলে গিয়ে আটক রুমী, বদি, জালাল, আলতাফ মাহমুদকে হত্যার জন্য পাকিস্তানি সেনাদের প্ররোচনার অভিযোগে নিজামীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রেখেছেন আদালত।

অন্য চারটি অর্থাৎ পাবনা জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাওলানা কছিমুদ্দিন হত্যা (১ নম্বর অভিযোগ), মোহাম্মদপুরের ফিজিক্যাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে পাকিস্তানি সেনা, রাজাকার ও আলবদর বাহিনীর ক্যাম্পে নিয়মিত যাতায়াত ও মানবতাবিরোধী অপরাধের ষড়যন্ত্র (৩ নম্বর অভিযোগ), বৃশালিখা গ্রামের সোহরাব আলী হত্যা (৭ নম্বর অভিযোগ) এবং রুমী, বদি, জালালসহ সাত গেরিলা যোদ্ধা হত্যার প্ররোচনার (৮ নম্বর অভিযোগ) দায়ে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলেন ট্রাইব্যুনাল।

তবে জামায়াতের নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে ট্রাইব্যুনালের দেওয়া ফাঁসির দণ্ডাদেশ কমিয়ে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ। গত বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) এ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হওয়ার পর রোববার (০৩ জানুয়ারি) ট্রাইব্যুনাল হয়ে রায়সহ সাজা পরোয়ানা পৌঁছেছে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় ও ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে। আইন অনুসারে এর ১৫ দিনের মধ্যেই সর্বোচ্চ সাজা পুনর্বহালের আরজিতে রাষ্ট্রপক্ষ আর খালাস চেয়ে আসামিপক্ষ রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন জানাবেন বলে জানিয়েছেন দুই পক্ষ।

এদিকে ৭ম হিসেবে ট্রাইব্যুনালের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীর আপিল মামলার শুনানি শুরুর দিন ধার্য হতে যাচ্ছে। বুধবার সকালে এ দিন ধার্য করবেন আপিল বিভাগ।

Facebooktwitterredditpinterestlinkedinmail

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

Social Media Auto Publish Powered By : XYZScripts.com
shared on wplocker.com