aduvaid

বিডি নীয়ালা নিউজ(১৬ই জুন ২০১৬ইং )-অনলাইন প্রতিবেদনঃ আদুভাই’ নিয়ে যতই রসিকতা করুন না কেন, অনেকের ‘আদুভাই’হওয়ার পেছনে অনেক কারণ থাকে। এর মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন নিজের ইচ্ছাশক্তি দিয়ে স্বপ্নপূরণ করতে সক্ষম হন। তেমনি একজন নেপালের দুর্গা কামি। নেপালের সবথেকে বয়স্ক ছাত্র ৬৮বছরের দুর্গা কামি স্কুলে লেখাপড়া করেন ১৪-১৫ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের সঙ্গে। ছোটবেলায় ইচ্ছে ছিল শিক্ষক হবেন তিনি। দারিদ্রের কারণে পঞ্চম শ্রেণীর পরেই ক্ষান্ত দিতে হয় লেখাপড়ায়। তাই শিক্ষকতার স্বপ্নও থেকে যায় অধরা। শেখার নেশায় জীবনের তিন কুড়ি পেরিয়ে এখন স্কুলে যাচ্ছেন দুর্গা কামি। নেপালের রাজধানী শহর কাঠমান্ডু থেকে ২৫০কিমি দূরে অবস্থিত শ্রী কলা ভৈরব উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র তিনি। তাঁকে সাদরে গ্রহণ করেছেন স্কুলের ২০০ জন পড়ুয়া। ছয় সন্তানের জনক এবং আট জনের পিতামহ দুর্গাবাবু সংসার ধর্ম পালন করতে গিয়ে প্রায় ভুলেই গিয়েছিলেন লেখাপড়ার কথা। পত্নী বিয়োগের পর একাকীত্বে জেগে ওঠে সেই শখ। আর ইচ্ছেশক্তির উপর ভর করেই ভর্তি হয়ে যান স্কুলে। একমুখ সাদা দাড়িতে চিরুনি আচরে, স্কুল ইউনিফর্ম পরে, কাঁধে ব্যাগ নিয়ে এখন নিয়মিত স্কুলে যান বৃদ্ধ দুর্গা কামি। বার্ধক্যের কারণে শরীর অনেকটাই জীর্ণ। লাঠি নিয়ে কোনোরকমে স্কুলে যেতে সময় লেগে যায় প্রায় একঘণ্টা। তার অদম্য জেদের কাছে হার মেনেছে বার্ধক্য। পরিবারের ছেড়ে পাহাড়ের উপরে এক কুড়ে ঘরে থাকেন তিনি। বৃষ্টি হলে ছাদ থেকে পরে জল। এই সকল প্রতিকূলতা নিয়েও এগিয়ে চলেছেন দুর্গাবাবু। তাঁর কথায়, “আমার জীবনের দুঃখ ভুলে থাকতে আমি স্কুলে যাই”। স্কুলের শিক্ষক ডিআর কৈরালা বলেছেন, “এটা ভেবে খুব ভাল লাগে যে এমন একজন আমার ছাত্র যে আমার বাবার থেকেও বয়সে বড়”। স্কুলের অন্যান্য পড়ুয়া এবং সহপাঠীরা বয়স্ক দুর্গাবাবুকে ডাকে ‘বাবা’ বলে। সহপাঠী সাগর থাপার মতে, “প্রথমে বুঝতাম না এই বয়স্ক লোকটা কেন স্কুলে পড়তে এসেছে? সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উনি আমাদের খুব ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন।” সহপাঠীদের সঙ্গে মাঝে মাঝে খেলাধূলাও করেন তিনি। জীবনের অন্তিম দিন পর্যন্ত লেখাপড়া করে যেতে চান দুর্গাবাবু। তার কথায়, “একজন বৃদ্ধকে লেখাপড়া করতে দেখে অনেক বয়স্করাও লেখাপড়া করতে উত্সাহিত হবে।”

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে