দেশে করোনাভাইরাস শনাক্তের ২৯২তম দিনে ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসে সংক্রমণ কমেছে, বেড়েছে সুস্থতার হার।
গত ২৪ ঘন্টায় ১৩ হাজার ৬৯৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ১৬৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৭১ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৩ হাজার ২২৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ১ হাজার ২৩৪ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৮ দশমিক ৪৯ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৯ দশমিক ৩৩ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ শনাক্তের হার দশমিক ৮৪ শতাংশ কম।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দেশে এ পর্যন্ত মোট ৩১ লাখ ৪৯ হাজার ৩৪৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫ লাখ ৭ হাজার ২৬৫ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার ২৫ লাখ ২ হাজার ৩৬৬টি হয়েছে সরকারি এবং ৬ লাখ ৪৬ হাজার ৯৮২টি হয়েছে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ১১ শতাংশ। গতকাল পর্যন্ত এই হার ছিল ১৬ দশমিক ১৪ শতাংশ।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ২ হাজার ১১৩ জন। দেশে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৪ লাখ ৪৮ হাজার ৮০৩ জন।
আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ। গতকাল সুস্থতার হার ছিল ৮৮ দশমিক ২৬ শতাংশ। গতকালের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ২১ শতাংশ বেশি।
গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে ২০ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ১ জন বেশি মৃত্যুবরণ করেছে। গতকাল ১৯ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৭ হাজার ৩৯৮ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৬ শতাংশ। গত ২১ ডিসেম্বর থেকে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৩ হাজার ৫১০ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৩ হাজার ৩৮৯ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ১২১টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের সরকারি ৯৮ ও বেসরকারি ৬৫টিসহ ১৬৩টি পরীক্ষাগারে (এন্টিজেন টেস্টসহ) নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৩ হাজার ৩৯৫ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৩ হাজার ২২৭ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ১৬৪টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত শনাক্ত ২৯৭৮ দশমিক ৫৪ জন। সুস্থ হয়েছেন প্রতি ১০ লাখে এ পর্যন্ত ২৬৩৫ দশমিক ২৬ জন এবং প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন এ পর্যন্ত ৪৩ দশমিক ৪৪ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারী ২০ জনের মধ্যে পুরুষ ১৪ জন, আর নারী ৬ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৫ হাজার ৬৩৬ জন, আর নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ১ হাজার ৭৬২ জন। শতকরা হিসেবে পুরুষ ৭৬ দশমিক ১৮ শতাংশ; নারী ২৩ দশমিক ৮২ শতাংশ। ২৪ ঘন্টায় ১৯ জন হাসপাতালে এবং ১ জন বাড়িতে মৃত্যুবরণ করেছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ১১ থেকে ২০ বছরের বছরের ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের বছরের ৪ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের ৫ জন এবং ষাটোর্ধ্ব রয়েছেন ১০ জন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৪ জন; যা দশমিক ৪৬ শতাংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৬ জন; যা দশমিক ৭৭ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৫৯ জন; যা ২ দশমিক ১৫ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৭২ জন; যা ৫ দশমিক ০৩ শতাংশ; ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৮৭২ জন; যা ১১ দশমিক ৭৯ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ৮৮২ জন; যা ২৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ৪ হাজার ২২ জন; যা ৫৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২৪ ঘন্টায় ঢাকা বিভাগে ১২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৩ জন, খুলনা ও রংপুর বিভাগে ২ জন করে এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ৪ হাজার ৪৪ জন; যা ৫৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ১ হাজার ৩৭৯ জন; যা ১৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৪৩১ জন; যা ৫ দশমিক ৮৩ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৫২২ জন; যা ৭ দশমিক ০৬ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ২৩৬ জন; যা ৩ দশমিক ১৯ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২৯০ জন; যা ৩ দশমিক ৯২ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ৩৩৩ জন; যা ৪ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৬৩ জন; যা ২ দশমিক ২০ শতাংশ।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৩ হাজার ২৮৪টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৬২২ জন ও শয্যা খালি আছে ১ হাজার ৬৬২টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ২৯০টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২০৪ জন ও শয্যা খালি আছে ৮৬টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬৮৭টি, ভর্তিকৃত রোগী ৩০১ জন ও শয্যা খালি আছে ৩৮৬টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৪৫টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ২১ জন ও শয্যা খালি আছে ২৪টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ৫৩৯টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ৬০৫ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৯৩৪টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২৪৭টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৭৫ জন ও শয্যা খালি আছে ১৭২টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১০ হাজার ৫১০টি, রোগী ভর্তি আছে ২ হাজার ৫২৮ জন এবং শয্যা খালি আছে ৭ হাজার ৯৮২টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৮২টি, রোগী ভর্তি আছে ৩০০ জন এবং খালি আছে ২৮২টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ৫০১টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৬৭৮টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ৬৩৯টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ২ হাজার ১১৩ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৬০৯ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ২৯৬ জন, রংপুর বিভাগে ৭১ জন, খুলনা বিভাগে ১৮ জন, বরিশাল বিভাগে ২০ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫২ জন, সিলেট বিভাগে ৪৩ জন এবং ময়মনসিংহে ৪ জন সুস্থ হয়েছেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৬০৯ জন, আর কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৬২৭ জন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৬৭২ জন, আর এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৫ লাখ ৬১ হাজার ৩৬২ জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৩৯ হাজার ৩১০ জন।
গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ১৪০ জন, আর ছাড়া পেয়েছেন ১৬১ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৯৫ হাজার ৬৪৯ জন, আর ছাড়া পেয়েছেন ৮৩ হাজার ৭৭৯ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১১ হাজার ৮৭০ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৩৫ হাজার ৮১ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ১৪ লাখ ৪০৫ জনকে স্ক্রিনিং করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ২ হাজার ৮৪টি, ৩৩৩ এই হটলাইন নম্বরে ৪ হাজার ৮৪৫টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ১৩৪টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৬৩টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ৩২ লাখ ৪২ হাজার ৯০৮টি।
কোভিড বিষয়ে হটলাইনে ২৪ ঘন্টায় ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা নিয়েছেন ৪ হাজার ৪৬৭ জন, এবং এ পর্যন্ত ৬ লাখ ৫৬ হাজার ৩৫৬ জন।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১৭ লাখ ৪৬ হাজার ৭৭০ জন এবং মৃত্যুবরণ করেছেন ১ লাখ ৭৯ হাজার ১০২ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭ কোটি ৭৫ লাখ ৩০ হাজার ৭৯৯ জন এবং ১৭ লাখ ২৪ হাজার ৯০৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।

BSSN

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে