ডেস্ক রিপোর্টঃ ১৫ দিনের মধ্যে বহুতল ভবনগুলোর ত্রুটি জানানোর অঙ্গীকার করেছেন রাজউক চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান।তিনি বলেছেন, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে রাজধানীর সব বহুতল ভবনগুলো শনাক্তের পর ১৯৯৬ ইমারত বিধিমালা অনুযায়ী সেগুলো যাচাই-বাছাই করে ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে চিহ্নিত করে তথ্যগুলো মিডিয়ার সামনে প্রকাশ করা হবে। এ ক্ষেত্রে বনানীর অগ্নিকাণ্ড স্থলের ভবনগুলো অগ্রাধিকার পাবে বলেও জানান তিনি।

বলেন, ‘এফআর টাওয়ারের যাবতীয় তথ্য আমরা বিশ্লেষণ করেছি। ১৯৯৬ সালের ইমারত বিধিমালা অনুযায়ী ভবনটি নির্মাণ হয়েছে। যেটি ২০০৬-০৭ সালের আগেই শতভাগ নির্মাণ শেষ হয়েছে। ওই বিধিমালা অনুযায়ী আমাদের তদন্ত কমিটি যাচাই-বাছাই করবে। তাদের তদন্তের ভিত্তিতে যার বিরুদ্ধেই সুপারিশ আসুক সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

গতকাল শুক্রবার রাতে আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত এফআর টাওয়ার পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা জানান।

আব্দুর রহমান বলেন, ‘আমি মাত্র ১৫ দিন সময় নিলাম। এর মধ্যে প্রত্যেকটি ভবনের কোনটার কী সুবিধা নেই নাম্বার দিয়ে ভবন মালিকসহ শনাক্ত করা হবে। এক্ষেত্রে এই এলাকার ভবনগুলো প্রাধান্য পাবে। এরপর এসব তথ্য মিডিয়ার সামনে উপস্থাপন করা হবে।’

ভবনগুলো একটি আরেকটির সঙ্গে লাগানো, এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে রাজউক চেয়রম্যান বলেন, ‘তখনকার বিধিমালায় বাণিজ্যিক ভবনে সাইডব্যাক রাখার নিয়ম ছিল না। ২০০৮ সালের নতুন ইমারত বিধিমালায় ভবনের চারপাশেই সাইডব্যাক রাখার কথা রয়েছে। এই বিধিমালা অনুযায়ী যত বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো ১৫ দিনের মধ্যে যাচাই করে কোন কোন ত্রুটি রয়েছে সেগুলো শনাক্ত করা হবে। বিশেষ করে ভবনগুলোর ফায়ার সেফটির কী অবস্থা সেটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হবে। বাস্তবতা অনুযায়ী বাইরের দিকে সিঁড়ি কিংবা আরও কী ব্যবস্থা নেওয়া যায় প্রয়োজনীয় সেসব কাজ করা হবে। আমরা সবার আগে ফায়ার সেফটির বিষয়টি কনফার্ম করতে চাই।’

১৮ তলার অনুমোদন নিয়ে ২৩ তলা ভবন নির্মাণ হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এফআর টাওয়ারের ফাইল ঘেঁটে ১৮ তলা ভবনের নকশা পাওয়া গেছে, যেটার স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল। তবে আরেকটি ২৩ তলা ভবনের ড্রইং পেয়েছি, যেটির সত্যতা নেই। এই ভবনটা অনেক আগের। তদন্ত কমিটি বিষয়গুলো খতিয়ে দেখবে। সংশ্লিষ্ট কারও গাফিলতি থাকলে তারা যেই হোক, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ভবনের বাড়তি অংশ নির্মাণের বিষয়ে ভবনের মালিক রাজউকে আবেদন করেছিলেন, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি এখানে ৪ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করেছি। আমার সময়ে এ ধরনের কোনো অভিযোগ পাইনি।

এফ আর টাওয়ারে আগেও আগুন লেগেছিল, সেই সময় তদন্ত কমিটি সুপারিশও করা হয়েছিল, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার এ ধরনের কোনো বিষয় জানা নেই।

এফ আর টাওয়ারটি আর ব্যবহৃত হবে কি-না কিংবা এর বাড়তি অংশ ভেঙে ফেলা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞ টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তারা শনিবার (৩০ মার্চ) থেকে এখানে কাজ শুরু করবে। তাদের সুপারিশ অনুযায়ী ভেঙে ফেলা হবে কি-না কিংবা ভবনটি ব্যবহারের উপযোগি কি-না জানা যাবে।

টাকার বিনিময়ে ভবনের অনুমোদন দেওয়া হয়, একটা আগুনের ঘটনার ২৫ জন মারা গেলো। এ ক্ষেত্রে রাজউকের দায় রয়েছে কি-না? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রাজউকে দায় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই।

P/B/A/N.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে