করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ প্রতিরোধে টানা ৪৯ দিন বন্ধ থাকার পর আজ সোমবার থেকে চাঁদপুরে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে। সকাল ৬টায় চাঁদপুর লঞ্চঘাট থেকে ঢাকার উদ্দেশে প্রথম ছেড়ে যায় এমভি রফরফ-৭। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধারণক্ষমতার নির্দিস্ট যাত্রীর চেয়ে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি চাঁদপুর ঘাট ছেড়ে যায়।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউের কারণে সরকার গত ৫ এপ্রিল থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখে। এর ফলে চাঁদপুরের সঙ্গে সারা দেশের লঞ্চ চলাচল টানা ৪৯ দিন বন্ধ থাকে।

চাঁদপুর লঞ্চঘাটে ভোর সাড়ে ৫টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত অপেক্ষা করে দেখা যায়, দিনের আলো যতই বাড়ছে, লঞ্চের যাত্রীও তত বাড়ছে। সকাল ৭টায় ঢাকাগামী সোনার তরী-৩ ও সকাল ৮টায় ঈগল-৭ লঞ্চ দুটিতে যাত্রীর সংখ্যাও বাড়তে থাকে।

রফরফ লঞ্চের সুপারভাইজার মানিক ব্যাপারী বলেন, ‘আমরা লঞ্চে উঠতেই যাত্রীদের মাস্ক পরা নিশ্চিত করছি। স্যানিটাইজার দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করাচ্ছি। এ ছাড়া লাল নিশানা দিয়ে একটি আসন ছেড়ে যাত্রীদের বসার ব্যবস্থা করেছি।’

রফরফ লঞ্চের একাধিক যাত্রী বলেন, লঞ্চের ভেতর করোনা প্রতিরোধব্যবস্থায় তাঁরা সন্তুষ্ট। তবে ভাড়া দ্বিগুণ নেওয়া হচ্ছে বলে তাঁদের অভিযোগ।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চ চলাচল করছে কি না, তা তদারকি করতে দেখা যায় বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে।

টানা এত দিন লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় চাঁদপুরের ছোট-বড় অর্ধশত লঞ্চের ৫ শতাধিক কর্মচারী বেকার হয়ে যান। এসব কর্মচারীকে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে আড়াই হাজার টাকা করে প্রণোদনা দেওয়ার কথা থাকলেও কেউই এই প্রণোদনা পাননি বলে অভিযোগ ওঠে। বেশ কয়েকটি লঞ্চের কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বললে তাঁরা অভিযোগ করেন, এই বন্ধে কয়েকজন লঞ্চমালিকদের পক্ষ থেকে সামান্য সহায়তা পেলেও অধিকাংশ লঞ্চমালিক ও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো সুবিধা পাননি। পরিবার-পরিজন নিয়ে তাঁরা বেশ কষ্টে ছিলেন।

সোনার তরী-৩ লঞ্চের লস্কর আল আমিনের ভাষ্য, ‘লঞ্চমালিক আমাদের ভোটার আইডি কার্ড ও ছবি নিয়েছিলেন। কিন্তু কারও কাছ থেকে কিছু পাইনি।’ ঈগল-৭ লঞ্চের লস্কর আলী হোসেন বলেন, ‘লঞ্চমালিকের কাছ থেকে কিছু খাদ্যসহায়তা ও এক মাসের বেতন পেয়েছি। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কিছু পাইনি।’

লঞ্চ চলাচলের খবরে আজ সোমবার সকাল থেকে চাঁদপুরের লঞ্চ ঘাটে যাত্রীদের আনাগোনা শুরু হয়েছে

চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক কায়সারুল আলম বলেন, ‘অধিকাংশ লঞ্চ ঢাকা থেকে ছেড়ে আসে। এ জন্য লঞ্চ শ্রমিকদের প্রণোদনার টাকা ঢাকায় দেওয়া হচ্ছে। সেখানেই বিষয়টি তদারকি করা হচ্ছে। আমরা শুধু চাঁদপুরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চ চলাচল করছে কি না, সেটি দেখছি।’

Pr/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে