জয়নাল আবেদীন হিরো, সৈয়দপু , নীলফামারী, প্রতিনিধিঃ নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের একমাত্র কলার বাজার সড়কটিতে ময়লা ফেলায় স্থায়ি ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। পুঁতিময় পচাঁ ও উৎকট দুর্গন্ধে অতিষ্ট হয়ে কয়েকটি পরিবার বসতবাড়ি ছেড়েছে। মশা-মাছি ও ক্ষতিকর পোকামাকড়ের আর্দশ এ বসতির কারণে হুমকিতে পরেছে জনস্বাস্থ্য।
জানা যায়, সৈয়দপুর শহরের পৌর ১০ ও ১১ নং ওয়ার্ডের সিমা রেখায় অবস্থিত অন্যতম প্রধান ব্যস্ততম সড়ক হচ্ছে আহের আলী রোড। এ সড়কটিতে রয়েছে কাচা সব্জি বাজার ও একমাত্র পাইকারি ভোরের কলার বাজার। এ সড়কটি তাই অতি ভোর হতে প্রতিদিন হাজার-হাজার মানুষের পদচারনায় মুখরিত হয়ে ওঠে। এছাড়া পথচারিদের কাছে এটি শহর প্রবেশের নিরাপদ বিকল্প সড়ক হিসেবেও পরিচিত। তাই স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী হতে মিল, কারখানা শ্রমিকদের এ সড়ক হয়ে যাতায়াত বেশি। তবে সকলকে নাক চেপে চলাচল করতে হয়। বিশেষ করে এ শহরের একমাত্র আধুনিক পৌর বাজারের মাছের ময়লা ও মুরগীর চামড়া এবং অন্যন্য সকল ময়লা ব্যবসায়িরা সড়কটিতে ফেলে সেখানে একটি ভাগাড় স্বৃষ্টি করেছে। এ সকল ময়লার পঁচা গন্ধে পথচারী ও এলাকাবাসী অতিষ্ট হয়ে পরিত্রান পেতে একাধিক বার গণস্বাক্ষর করে আবেদন করেন সৈয়দপুর পৌরসভায়। তবে কোন কাজ হয়নি। কোন অজানা কারণে ভাগাড়টি স্থানান্তরিত না হওয়ায় দির্ঘ দুর্ভোগের কবলে পরেছে পথচারি ও এলাকাবাসি। পৌর কতৃপক্ষ নিয়মিত ওই ময়লা অপসারন করলেও এর ময়লা কখনই শেষ হয়না। তাই পঁচা দুর্গন্ধে বাধ্য হয়ে বসবাস করছে এলাকাবাসি। সাকির হোসেন নামে এক বাসিন্দা এ ভাগাড়ের দুর্গন্ধে অতিষ্ট হয়ে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র বাড়ি ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন। আর এ ভাগাড়ের কারণে তার পরিবারের সদস্যরা চর্মরোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তাই তার পাকা বাড়িটি শুধু ময়লার ভাগাড়ের কারণে আজ অভিশপ্ত এক ঠিকানায় পরিণত হয়েছে। শুধু তিনি নয়। ওই এলাকা প্রবেশের সড়কে বসবাসরত প্রায় কয়েক হাজার বাসিন্দা এখন ভিন্ন সড়ক হয়ে বাজারে প্রবেশ করছে। এছাড়া সড়কের এ ভাগাড় সংলগ্ন একমাত্র বিগবন ড্রেন এলাকা দখল করে দোকান ঘর নির্মাণ করায় ড্রেনটি সংস্কার কিংবা নব নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এ নিয়ে দখলদার কে পৌর পরিষদ উচ্ছেদ করলেও সৈয়দপুর রেলওয়ে বনাম পৌরসভার চলমান মামলার জটিলতায় বেদখলকারী পুনরায় ওই ভাগার সংলগ্ন বিগবন ড্রেনে দোকান ঘর করায় ময়লা অপসারণ কিংবা ড্রেন পরিছন্নতার কাজ আবারও আটকে গেছে। বন্ধ হয়েছে ড্রেন সংস্কার ও নির্মাণ কাজ। এছাড়া পৌর পরিষদের নিষেধ সত্ত্বেও দোকানিরা তাদের পঁচা ও উচ্ছিষ্ট ময়লা ফেলায় ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে শহরের অন্যতম প্রধান ব্যাস্ততম এ সড়কটি। এলাকাবাসি ও পথচারিরা জানান, দেশের কোন শহরেই বাজারস্থ্য সড়কে ময়লার ভাগাড় নেই। একমাত্র এখানেই রয়েছে। পৌরকতৃপক্ষসহ স্থানিয় সকলে এ সড়ক হয়ে রাত-দিন যাতায়াত করছেন। তারপরেও এ দুর্ভোগ হতে রেহাই মিলছেনা। আবুল হোসেন নামে এক এলাকাবাসী জানান, আমরা পঁচা গন্ধ নাকে নিয়ে দির্ঘদিন ধরে চলাফেরা করছি। মুক্তি পেতে পৌরসভায় গণস্বাক্ষরকৃত অনেক আবেদন করেছি। কোন লাভ হয়নি। তাই বাজারের সড়কে এ ভাগাড়টি নিয়তি মেনে চলাচল করছি। আরিফ নামে এক এলাকাবাসি ক্ষোভের সাথে বলেন, অনেক দরখাস্ত করেছি লাভ নেই। কারণ, এই ময়লার স্তুপ সরালেও মুরগি এবং অন্যন্য ব্যবসায়িরা রাতে তাদের বিক্রিত মুরগির চামড়া, মাছের আঁশ এবং র্দুগন্ধ যুক্ত সব ময়লা ফেলে যায়। এতে কষ্ট বাড়লেও কেউ দেখছেনা। কাপড়ে নাক ঢেকে চলছে পথচারীরা। মশা-মাছির আর্দশ প্রজনন ব্যবস্থাপনায় পোকামাকড় কিলবিল করছে। ময়লা-আবর্জনা থেকে ছড়াচ্ছে জীবাণু। দুষিত হচ্ছে পরিবেশ। প্রতিনিয়ত রোগ জীবাণু ছড়ানোয় জনস্বাস্থ্য হুমকিতে পরেছে। পাশাপাশি সড়কটির তার সৌন্দর্য হারিয়ে কর্দমাক্ত এক ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। এ ভাগাড়ের কটু র্দুগন্ধের দুর্ভোগ লাঘবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার আহবান জানান এলাকাবাসি ও পথচারিরা। সৈয়দপুর পৌরসভার পরিছন্নতা পরিদর্শক মমিনুল হক জানান, এটি দির্ঘ দিনের সমস্যা। তাদেরকে ওই স্থানে ময়লা ফেলতে নিষেধ করা হয়েছে। ব্যবসায়িরা পৌর নির্দেশনা মানে না। তাই বাধ্য হয়ে সকাল ও সন্ধায় ময়লা অপসারন করা হচ্ছে। ওই ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর আফরোজা ইয়াসমিন বলেন, পৌরকতৃপক্ষ পরিছন্নতায় সদা তৎপর। এ নিয়ে মাসিক মিটিংয়ে আলোচনার মাধ্যমে ময়লা ফেলা বন্ধের পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তারপরেও ব্যাবসায়িরা মানছেনা। তবে আগামী মাসিক মিটিংয়ে পৌর পরিষদের সিদ্ধান্তে মেয়র মহোদয় দ্রুত স্থায়ি সমাধানের ব্যবস্থা নেবেন বলে মতামত প্রকাশ করেন তিনি

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে