জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ কনের সাথে জোর পূর্বক অশ্লীল ছবি তুলে টাকা হাতিয়ে নেয়ায় অভিযোগে নাজিমুল ইসলাম ওরফে টাইগারকে (৫১) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

টাইগার ওই প্রতারক চক্রের মূলহোতা। সে নিজেকে গোয়েন্দা পুলিশের ওসি হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রতারনা করে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের নিমবাগান এলাকার প্রতারক টাইগারের ভাড়া বাসায়। সে সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের পাকাধরা গ্রামের মকবার আলীর পুত্র।

পুলিশ জানায়, রংপুরের পীরগাছা উপজেলার চালুনিয়া গ্রামের কামরুল হাসান দুলাল তার ছোট ভাই সাদ্দাম হোসেনের বিয়ের জন্য কনের খোঁজ করেন। বিষয়টি পাশের ঝিমিয়া গ্রামের ঘটক প্রতারক চক্রের সদস্য বাদল হোসেনকে জানালে সে প্রতারনার ফাঁত পাতে।

বৃহস্পতিবার বিকেলে সৈয়দপুরে কনে দেখানোর নামে দুলালকে নিয়ে আসে বাদল। শহরের নিমবাগান এলাকায় প্রতারক চক্রের প্রধান টাইগারের বাসাটি কনের বাসা দেখিয়ে ভেতরে বসানো হয়। এ সময় অজ্ঞাত ৪/৫ জনের একটি দল দুই তরুনীকে দুলালের দুই পাশে বসিয়ে বিভিন্ন অশ্লীল অঙ্গ-ভঙ্গিতে ছবি তোলা হয়।

ছবি তোলার পর বিষয়টি মীমাংসার নামে টাইগারের স্ত্রী সহিদা খাতুন টাকা দাবি করে দুলালের কাছে। এ সময় তার কাছে থাকা ২২ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় প্রতারক চক্রের সদস্যরা।

পুলিশ আরো জানায়, এ সময় ডিবি পুলিশের কর্মকর্তা পরিচয়ে সেখানে উপস্থিত হয় ঘটনার মূলহোতা টাইগার। সে দুলালের কাছে বিষয়টি নিষ্পত্তির জন্য এক লাখ টাকা দাবি করে। এতে অস্বীকৃতি জানালে বেদম প্রহার করে পকেটে থাকা ডাচ- বাংলা ব্যাংকের এটিএম কার্ড বের করে নেয়। নেয়া হয় কার্ডের পাসওয়ার্ড।

তাৎক্ষনিক প্রতারক চক্রের সদস্যরা শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের এটিএম বুথ থেকে তুলে নেয় ৫০ হাজার টাকা। রাত সাড়ে ৮টার দিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সৈয়দপুর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে কড়া পাহারায় রংপুরগামী বাসে তুলে দেয় দুলালকে।

রাত ১২টার দিকে দুলাল সৈয়দপুর থানায় হাজির হয়ে পুলিশকে জানালে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিঁর্দেশনায় প্রতারক চক্রটিকে ধরতে মাঠে নামে পুলিশ। রাত ২টার দিকে শহরের চৌধুরী টাওয়ারের গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে টাইগারকে গ্রেফতার করে।

অভিযানে নেতৃত্বে থাকা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) খায়রুল আনাম জানান, প্রযুক্তি ব্যবহার করে মামলার দুই ঘন্টার মধ্যে মূলহোতাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছি। এ সময় তার কাছ থেকে নগদ ৩৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান জানান, গ্রেফতারকৃত আসামী টাইগারের নামে বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। সে প্রতারনার ঘটনাটির মূল পরিকল্পনাকারী। শুক্রবার দুপুরে তাকে আতালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। আর অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশ কাজ করছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে