জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ বয়স পেরিয়ে গেলেও বিয়ে না করায় বাধ্য হয়ে পরিবারের লোকজন এক প্রকার জোর করেই বিয়ে দিয়েছেন, কিন্তু সেই বিয়ের ৪ দিনের মাথায়ই জেলে অর্থাৎ শ্রীঘরে যেতে হলো এক পল্লী চিকিৎসক বর কে। তাও আবার দশ বছর ধরে প্রেম করা প্রেমিকার করা ধর্ষণের মামলাতেই তিনি গ্রেফতার হন।

১ নভেম্বর সোমবার দুপুরে এমনই ঘটনা ঘটেছে নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের ঘোড়াঘাট (গোলাহাট) রেলওয়ে কলোনী মসজিদ সংলগ্ন এলাকায়। আটক ব্যক্তির নাম শাহিন আলী বাবু (৪০)। সে ওই এলাকার মৃৃত আজগার আলীর ছেলে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার থানাপাড়া এলাকার কাশেম আলীর মেয়ে স্বামীসহ বাস করতো সৈয়দপুরের ঢেলাপীর উত্তরা আবাসনে। ঘটনাক্রমে চিকিৎসা সূত্রে পরিচয় হয় পল্লী চিকিৎসক শাহিন বাবুর সাথে। ফার্মেসীতে যাতায়াতের ফলে বাবুর প্ররোচনায় উভয়ের মধ্যে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে সে সম্পর্ক দৈহিক পর্যায়ে পৌঁছায় বলে মামলার বিবরণে প্রকাশ।

সেই সুবাদে বাবুর বিয়ের আশ্বাসে ৭ বছর পূর্বে বাদিনী আগের স্বামীকে তালাক দেয়। এরপর বাবু তাকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে নিজে বাসা ভাড়া করে দিয়ে রেখে ভরণ পোষণসহ সার্বিক ব্যায় নির্বাহ করে আসছিলো।

বাবু মাঝে মাঝেই ঢাকায় গিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মতো থাকতো, মজা লুটতো।বাদিনী প্রেমিকাও সৈয়দপুরে আসলে বাবুর বাড়িতেই অবস্থান করতো। এভাবেই চলছিল তাদের সম্পর্ক। বিয়ের জন্য চাপ দিলেই সে আরও অপেক্ষা করতে বলে সময় ক্ষেপন করে আসছিল।

এমতাবস্থায় হঠাৎ গত ২৮ অক্টোবর পারিবারিক ভাবে বাড়ির পাশেই বিয়ে করে পল্লী চিকিৎসক বাবু। এই খবর পেয়ে ৩০ নভেম্বর প্রেমিকা সৈয়দপুরে এসে দেখে শহরের আধুনিক একটি কমিউনিটি সেন্টারে চলছে বাবুর বউভাত। এতে উপস্থিত হয়ে বাবুকে ডেকে নিয়ে ঐ প্রেমিকার সাথে কেনো প্রতারণা করা হলো? এ প্রতারণার জবাব চাইলে বাবু বলে বিয়ে করলেও তোমার সাথে আগের মতই সম্পর্ক থাকবে ইনশাল্লাহ।

এতে বাধ্য হয়ে ঐ পরকিয়া প্রেমিকা সৈয়দপুর থানায় গিয়ে প্রতারণা ও বিয়ের প্রলোভনে ধারাবাহিক ধর্ষণের মামলা দায়ের করে। মামলা নং ২৮, তারিখ ৩০/১০/২০২১ ইং। এই মামলার প্রেক্ষিতে ১ নভেম্বর সোমবার দুপুরে এস আই তারেক মাহমুদ আসামীকে তার চেম্বার থেকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।

এ ব্যাপারে পল্লী চিকিৎসক শাহীন আলী বাবু জানান, মহিলা আমার রুগী। সে স্বামী পরিত্যক্ত ও দরিদ্র অসহায় হওয়ায় প্রায়ই চিকিৎসার পাশাপাশি তাকে আর্থিক সহযোগিতা করতাম। ৭ বছর যাবত মোবাইলে কথা বলা ও দেখা করা ছাড়া অন্য কোন সম্পর্ক নেই। ধর্ষণের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে।
সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল হাসনাত জানান, মহিলার সাথে দীর্ঘ ৭ বছরের সম্পর্ক আটক পল্লী চিকিৎসকের। বাদীর উপযুক্ত তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আসামী আটক করে বিকালে নীলফামারী জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে