img_20161202_143030-800x445

নীলফামারী প্রতিনিধিঃ দীর্ঘদিন নদী খনন না করায় পলি পড়ে ভরাট হয়ে পড়েছে নীলফামারীর সৈয়দপুরের সকল নদীগুলো। ফলে এলাকার মানুষ নদীর বুকে বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ করছেন। এক শ্রেণির প্রভাবশালী মানুষ নদী দখল করে গড়ে তুলছেন অবকাঠামো। এতে করে বর্ষাকালে নদীর দু’কুল ছাপিয়ে বন্যার পানি ঢুকে আবাদি ফসল ও ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি সাধিত করছে।

img_20161202_143041

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলা শহরের পশ্চিমে খড়খড়িয়া পূর্বদিকে চিকলী ও মাঝখানে বাকডোকরা নদী বয়ে চলেছে। এককালে এসব নদীতে সারাবছর পানি থাকতো এবং নৌকা চলাচল করতো বলে জনশ্রুতি রয়েছে। এসব নদীর পানি দিয়ে এলাকার লোকজন চাষাবাদ করতেন এবং জেলেরা মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। মাঝে মধ্যে পলো বাওয়া হতো কয়েক গ্রামের শত শত মানুষ মিলে।

দীর্ঘ প্রায় ২৫/৩০ বছরেও এসব নদী খননের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি। ফলে পলি পড়ে নদী ভরাট হয়ে শুষ্ক মৌসুমে বিরান ভূমিতে পরিণত হয়েছে। নদী থেকে ধূলোবালি উড়ছে। কোথাও গ্রামের শিশু-কিশোররা ফুটবল ও ক্রিকেট খেলার মাঠ বানিয়েছেন। নদীর বুকে চাষাবাদ করা হচ্ছে বীজতলা, ধান, গম, ভুট্টা, রসুন, পিঁয়াজ প্রভৃতি ফসলের। নদীতে এক ফোঁটা পানি না থাকায় অগ্নিকাণ্ডের মতো কোন দূর্ঘটনা ঘটলে দমকল বাহিনীর করার কিছুই থাকছে না।

উপজেলার কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, খাতামধুপুর, বোতলাগাড়ি, বাঙালিপুর ইউনিয়ন ও সৈয়দপুর পৌর এলাকায় উল্লেযোগ্য পুকুর দীঘি ও বিল নেই। যেখানে সারাবছর পানি থাকে। এছাড়া এবারে বন্যা না হওয়ায় সব ধরণের মাছও আসতে পারেনি। ফলে দেশি মাছের চরম আকাল দেখা দিয়েছে। এ কারণে ‘মাছে ভাতে বাঙালি’ এ শব্দটিও ভুলতে বসেছে এখানকার মানুষ।

img_20161202_143017

সরজমিনে দেখা গেছে, এসব নদীর বিভিন্ন স্থানে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা দখল প্রতিযোগিতায় নেমেছেন। তারা প্রথমে অস্থায়ীভাবে মাচাং তৈরি করে পরবর্তীতে পাকা ঘর তুলছেন। ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হচ্ছে। কোথাও কোথাও নদী খালে পরিণত হয়েছে। বর্ষাকালে এসব নদীর পানি উপচে পড়ে আশেপাশের আবাদি ক্ষেত ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করছে।

সৈয়দপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা খালেদ মোশারফ জানান, শুষ্ক মৌসুমে কোন নদীতেই পানি নেই। ফলে জেলেরা পেশা বদল করে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। পুকুরে মাছ চাষ করে কৃষকরা শ্যালো মেশিনের সাহায্যে প্রতিদিনই পুকুরে পানি দিয়ে অতিকষ্টে মাছ চাষ করছেন বলে জানান তিনি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে