2

বিডি নীয়ালা নিউজ(২১ই মে১৬) মারুফ সরকার (বিভাগীয় প্রতিনিধি, রাজশাহী): সিরাজগঞ্জে আবারও ছড়িয়ে পড়েছে অ্যানথ্রাক্স (তড়কা) রোগ।

গত এক মাসের ব্যবধানে জেলার তিনটি উপজেলায় প্রায় ৯০ জন নারী-পুরুষ ও শিশু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। উল্লাপাড়া নতুন চারজন এ রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়া একই এলাকায় রোববার ৩৯ জনকে শনাক্ত করা হয়। এর আগে ৬ মে জেলার কামারখন্দে ২৯ নারী-শিশু-পুরুষ এবং ৮ মে শাহজাদপুরে ১৮ জন আক্রান্ত হন। আক্রান্ত রোগীরা স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসা ও নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।

স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, এ রোগে এখনও কারো মৃত্যু হয়নি, শঙ্কিত হওয়ারও কোনো কারণ নেই।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পালিত পশুগুলোকে নিয়মিত ভ্যাকসিন দিতে প্রাণি সম্পদ বিভাগের গাফিলতি ও সচেতনতামূলক কর্মসূচি না নেওয়ায় এ রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কামারখন্দ বুদ্ধু সাহা, কছির আলী মন্ডল, মো. ইনছাব আলী উল্লাপাড়া উপজেলার সরাতলা গ্রামের-গরু মালিক আলী আহম্মদ, শাহেদ আলীসহ অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত রোগীরা জানান, ঠিকমতো ভ্যাকসিন না দেওয়ার কারণে কখন গরুর অ্যানথ্রাক্স হয় টের পাওয়া যায় না। এ পশুগুলোকে জবাই করে তার মাংস কাটাকাটি ও খাওয়ার কারণে এ রোগ দেখা দিয়েছে।

স্থানীয়রা আরও জানান, ইতোমধ্যে এ তিন উপজেলায় বেশ কয়টি গরু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। মরা গরুগুলোকে গ্রামবাসী মাটির নিচে চাপাও দিয়েছেন। কিন্তু ছিল না সতর্কতা।

উল্লাপাড়া উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা জনাব ডা. হেলাল উদ্দিন বলেন, উল্লাপাড়া উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের গরু মিল্কভিটার তত্ত্বাবধানে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়।

মিল্কভিটার প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, মিল্কভিটার ১৫ হাজার গরুর ভ্যাকসিন আমরা দিয়ে থাকি। ঢাকা হেড অফিস থেকে চাহিদা মোতাবেক ভ্যাকসিন সরবরাহ হয়। এ বছর আমরা চাহিদা পাঠালেও এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন না আসায় গরুগুলোকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি।

জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান ভুইয়া বলেন, সাধারণত অ্যানথ্রাক্স বা তড়কা রোগের জীবাণু একশ বছর বেঁচে থাকে। এ রোগে আক্রান্ত গবাদিপশুগুলো তাৎক্ষণিক মারা যায়। ওই পশুগুলোকে জবাই করে তার মাংস নাড়াচাড়া ও খেলে মানুষও আক্রান্ত হয়।

তিনি আরও বলেন, এ রোগে আক্রান্ত গুরু মারা যাওয়ার পর ৬ ফুট মাটির নিচে গর্ত করে পুঁতে ফেলতে হবে। জেলা প্রাণি সম্পদ বিভাগ মানুষের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করে যাচ্ছে।

সিভিল সার্জন ডা. শহিদ মোহাম্মদ সাদিকুল ইসলাম জানান, অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত তিন উপজেলায় এখন ৩৪টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। এ জন্য পর্যাপ্ত সরকারি ওষুধ রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অ্যানথ্রাক্স কোনো ছোঁয়াচে রোগ নয়। এ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। শুধু চাই সতর্কতা।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে