ডেস্ক রিপোর্টঃ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিকে জোরদার করতে সরকার বাজেটে বরাদ্দ বাড়িয়েছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে আরো বেশিসংখ্যক অতি দরিদ্র ও অসহায় ব্যক্তিকে অন্তর্ভূক্ত করা হবে। যা অসহায় জনগোষ্ঠির সুরক্ষা এবং সার্বিক দারিদ্র্যের হার কমিয়ে আনতে সহায়তা করবে।
অর্থমন্ত্রী এ এইচ এম মোস্তফা কামাল গত ১৩ জুন জাতীয় সংসদে প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ৭৪,৩৬৭ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাব করেন। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে এই বরাদ্দের পরিমাণ ছিলো ৬৪,৪০৪ কোটি টাকা।
প্রস্তাবিত বাজেট অনুযায়ী, দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি খাতকেও সম্পৃক্ত করা হবে। এর ফলে আগামী চার বছরে দারিদ্র্যের হার ১০ শতাংশ নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জানায়, ২০১৮ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যে হার ২১ দশমিক ৮ শতাংশে নেমে এসেছে এবং চরম দারিদ্র্যের হার ১১ দশমিক ৩ শতাংশ কমেছে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, এমপি বাসসকে বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে শারীরিকভাবে অক্ষম মানুষের পাশাপাশি প্রান্তিক মানুষের জন্য কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি।’
তিনি বলেন, এই খাতে সরকার মোট বাজেটের ১৪ দশমিক ২১ শতাংশ এবং জিডিপির ২ দশমিক ৫৮ শতাংশ বরাদ্দ করেছে।
বর্তমান বাজেটে, সরকার ২০২৩-২৪ নাগাদ দারিদ্র্যের হার ১২ দশমিক ৩০ শতাংশ এবং চরম দারিদ্র্যের হার ৪ দশমিক ৫০ শতাংশে কমিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
সরকার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা ১০ হাজার টাকা থেকে ১২ হাজার টাকায় বাড়িয়েছে। বয়স্ক ভাতাভোগীর সংখ্যা ৪০ লাখ থেকে ৪৪ লাখ, বিধবা ও স্বামী-নিগৃহিতা ভাতাভোগী মহিলার সংখ্যা ১৪ লাখ থেকে ১৭ লাখ পর্যন্ত এবং ভাতাভোগী প্রতিবন্ধী ব্যক্তির সংখ্যা ১০ লাখ থেকে ১৫ দশমিক ৪৫ লাখে বৃদ্ধি করা হয়েছে।
প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের উপবৃত্তি ভোগীর সংখ্যা ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ জনে উন্নীত করা হবে। এছাড়াও প্রতিবন্ধী প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তির পরিমাণ ৭০০ টাকা থেকে ৭৫০ টাকা, মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের জন্য ৮৫০ টাকা থেকে ৯০০ টাকা বাড়ানো হবে।
সরকার হিজড়া জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির উপকারভোগীর সংখ্যা ৬০০০ জনে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। বেদে এবং অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর উপকারভোগীর সংখ্যা ৬৪০০০ থেকে ৮৪০০০ জনে উন্নীত করা হবে।
ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোক এবং জন্মগত হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীদের আর্থিক সহায়তা কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগীর সংখ্যা, ১৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ জনে উন্নীত করা হবে।
দরিদ্র মায়েদের জন্য মাতৃত্বকালিন ভাতাভোগীর সংখ্যা ৭ লাখ থেকে ৭ লাখ ৭০ হাজার জনে বৃদ্ধি করা হবে এবং কর্মজীবী দুগ্ধদানকারি ভাতাভোগী মায়ের সংখ্যা ২ লাখ ৫০ হাজার থেকে ২ লাখ ৭৫ হাজারে উন্নীত করা হবে।
চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় সুবিধাভোগীর সংখ্যা ৪০,০০০ থেকে ৫০,০০০ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হবে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য প্রকৃত সুবিধাভোগীদের নির্বাচন নিশ্চিত করার উপর জোর দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, সকল কর্মসূচির এমআইএস এবং সুবিধাভোগীর তথ্যভান্ডার তৈরির উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য সরকারি কোষাগার থেকে জি-টু-পি সিস্টেমের মাধ্যমে সরাসরি ভাতাভোগীদের কাছে পাঠানো হচ্ছে।
নুরুজ্জামান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জনগণকে দারিদ্র্য ও শোষণ থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যেই স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দিয়েছিলেন। জাতির পিতার সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতেই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন।

বাসস

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে