ডেস্ক রিপোর্ট : এক আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা প্রায় অভিন্ন ভূ-প্রকৃতি ও জলবায়ুর ফলে এশিয়ার দেশগুলোতে সমন্বিত উৎপাদন পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন ব্যবস্থায় ব্যাপক পরিবর্তন আনা সম্ভব বলে মত দিয়েছেন। তারা বলেন, সমন্বিত উৎপাদন ব্যবস্থা পদ্ধতির প্রয়োগ এশিয়া অঞ্চলে কৃষি উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারেও ইতিবাচক অবদান রাখবে।এশিয়ার দেশগুলোতে ‘সমন্বিত খামার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির সফল দৃষ্টান্ত’ শীর্ষক পাঁচ দিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আজ রোববার রাজধানীর ফারস হোটেল অ্যান্ড গ্র্যান্ড রিসোর্টে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সুষেণ চন্দ্র দাস প্রধান অতিথি হিসেবে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন করেন। জাপান ভিত্তিক এশিয়ান প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশন (এপিও) এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ন্যাশনাল প্রোডাকটিভিটি অর্গানাইজেশন (এনপিও) যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. দাবিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে এনপিও’র পরিচালক ও যুগ্ম সচিব এস.এম. আশরাফুজ্জামান, এপিও’র প্রতিনিধি ড. শেখ তানভীর হোসেন বক্তব্য রাখেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুষেণ চন্দ্র দাস কৃষি উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে উল্লেখ করে বলেন, প্রায় ১৬ কোটি জনসংখ্যার বাংলাদেশ এখন দানাদার খাদ্য শস্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
তিনি বলেন, সমন্বিত উৎপাদন ব্যবস্থা পদ্ধতির আওতায় একই সাথে ধান, হাঁস ও মাছের চাষ, খাদ্যশস্য ও প্রাণি সম্পদ উৎপাদন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গৃহিত ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত শক্তিশালী করা হয়েছে।সুষেণ চন্দ্র দাস প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলা করে সমন্বিত উৎপাদন ব্যবস্থাপনা পদ্ধতির আওতায় এশিয়া অঞ্চলে কৃষি উৎপাদন বাড়াতে কার্যকর কৌশল প্রণয়নের জন্য কর্মশালায় উপস্থিত অংশগ্রহণকারীদের পরামর্শ দেন। অনুষ্ঠানে উৎপাদনশীলতা বিশেষজ্ঞরা রপ্তানি পণ্য বৈচিত্রকরণের লক্ষ্যে এশিয়ার দেশগুলোতে সমন্বিত উৎপাদন ব্যবস্থা চালুর তাগিদ দিয়েছেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্য বক্তারা বলেন, আর্থিক স্বচ্ছলতার ফলে গত দু’দশক ধরে এশিয়ার দেশগুলোতে জনগণের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এসেছে। পাশাপাশি জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে খাদ্যপণ্যের চাহিদা ও যোগানের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় দানাদার খাদ্যশস্য, শাক-সবজি, দুধ-ডিমসহ প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে সমন্বিত খামার পদ্ধতি একটি কার্যকর কৌশল হতে পারে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে এ পদ্ধতি অনুসরণ করে জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা জোরদারে সক্ষম হয়েছে। তারা এশিয়ার দেশগুলোতে এ পদ্ধতি ছড়িয়ে দিয়ে ক্ষুধা ও অপুষ্টিমুক্ত এশিয়ার গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে একসাথে কাজ করার পরামর্শ দেন।পাঁচ দিনব্যাপী এ আন্তর্জাতিক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এশিয়ার ১৩টি দেশ থেকে ২৫ জন প্রশিক্ষণার্থী এবং অস্ট্রেলিয়া, ফিলিপাইন, ভারত ও স্বাগতিক বাংলাদেশের কৃষি উৎপাদনশীলতা বিশেষজ্ঞরা অংশ নিচ্ছেন।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে