শেয়ারের মূল্য ওঠানামা করতে পারে যে কোনো সময়। ছবি: সংগৃহীত

ডেস্ক রিপোর্টঃ আজকাল অনেকেই শেয়ারে অর্থ বিনিয়োগ করছেন। আবার অনেকে শেয়ার বাজারকে একটি ঝুঁকিপূর্ণ খাত হিসেবে বিবেচনা করেন। না বুঝে অর্থ বিনিয়োগ করার কারণে অনেকই পড়তে হচ্ছে বিপদে। শেয়ার বাজার মূলত একটি লাভজনক বিনিয়োগ খাত, যদি আপনি সঠিক নিয়মে বিনিয়োগ করতে পারেন। শেয়ার কেনার আগে কিছু বিষয় বিবেচনা করা উচিত যা আপনার বিনিয়োগকে নিরাপদ রাখবেএই বিষয়গুলো মনে রাখলে দীর্ঘমেয়াদী ভালো ফল পাওয়া সম্ভব হবে।

১। কেমন শেয়ারে বিনিয়োগ করতে চান

আপনি কেমন শেয়ারে বিনিয়োগ করতে চান, সেটি আগে নির্ধারণ করুন। একেক শেয়ারের বৈশিষ্ট্য একেকরকম। সাধারণত শেয়ারের গ্রোথ ভ্যালু অথবা লভ্যাংশ আয় (শেয়ার থেকে নির্দিষ্ট হারে যে আয় পাওয়া যায়) দেখে শেয়ার বিবেচনা করা হয়। এই ক্ষেত্রে উচ্চ আয় সম্পন্ন একটি কোম্পানি পছন্দ করুন। এবং তার সাথে অন্যান্য কোম্পানির তুলনা করুন। এতে শেয়ার বাজারের আয়ের সার্বিক ধারণা পেয়ে যাবেন। এছাড়া শেয়ার মূল্য আয়(price earings) অনুপাত দেখতে পারেন। একটি কোম্পানির শেয়ার মূল্য অনুপাত যত বেশি সেই কোম্পানিটি তত ভালো।  আবার অতিরিক্ত শেয়ার মূল্য আয় বেশি হওয়া কোম্পানিতে বিনিয়োগ করা ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ তারা তাদের সর্বোচ্চ আয়টি করে ফেলেছে, এরচেয়ে বেশি আয় করা তাদের পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে।  

২। কী পরিমাণ ঝুঁকি গ্রহণ করতে পারবেন

শেয়ারে বিনিয়োগ করার আগে সিদ্ধান্ত নিন কেমন ঝুঁকি আপনি গ্রহণ করতে চান। আপনি কী ঝুঁকি কম নিতে চান নাকি অধিক ঝুঁকি গ্রহণ করে বেশি আয় করতে চান- এই সিদ্ধান্ত আগে গ্রহণ করুন। বড় কোম্পানি মানে  কম ঝুঁকি নয়। আগে বাজার বিশ্লেষণ করুন তারপর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করুন।  

৩। প্রতিষ্ঠানকে জানুন

আপনি যে কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করতে চাচ্ছেন, সেটি সম্পর্কে জানুন। তাদের ব্যবসার প্রকৃতি, প্রোডাক্ট, বাজারে সুনাম সম্পর্কে জেনে নিন। বাজারে তাদের পণ্যের চাহিদা কেমন, কারা তাদের প্রতিযোগী সে সম্পর্কে জেনে নিন। এই কাজটি করতে সাহায্য করবে খবরের কাগজ এবং স্টক এক্সচেঞ্জ। এমনকি কোম্পানিটি কারা পরিচালনা করছে সেটি সম্পর্কে ধারণা রাখুন।

৪। স্টক এক্সচেঞ্জে চোখ রাখুন

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কয়েক মাস পর পর কোম্পানির আর্নিং রিপোর্ট প্রদান করে। সেটি  নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন। এছাড়া গত তিন-চার বছরের কোম্পানির শেয়ারে ট্র্যাক রেকর্ড দেখতে পারেন। এটি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।

৫। লভ্যাংশের হার দেখুন

যে শেয়ারে বিনিয়োগ করতে চান, সেই কোম্পানির অতীত শেয়ারে লভ্যাংশ হার দেখে নিন। পূর্বে তারা স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে কিনা সেটা লক্ষ্য করুন। এতে আপনি বুঝতে পারবেন তারা বর্তমান শেয়ারে লভ্যাংশ প্রদান করবে কিনা।

৬। সংরক্ষিত আয় বিবেচনা করুন

কোম্পানির সংরক্ষিত আয় (Retained earnings ) বিবেচনা করুন। যে কোম্পানির সংরক্ষিত আয় যত বেশি সেই কোম্পানি তত ভালো।

৭। পোর্টফোলিও তৈরি করুন

একটি দক্ষ পোর্টফোলিও তৈরি করার চেষ্টা করুন। একটি শেয়ারে বিনিয়োগ না করে, কয়েকটি শেয়ারে বিনিয়োগ করুন। যেমন- এক লক্ষ টাকা দিয়ে একটি শেয়ার না কিনে সে টাকা দিয়ে ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটি শেয়ার ক্রয় করুন। এতে আপনার ঝুঁকি কয়েকটি শেয়ারে ভাগ হয়ে যাবে। অর্থাৎ যে কোনো একটি কোম্পানির শেয়ারের দর-পতন ঘটলে অপর কোম্পানির শেয়ারে লাভ দ্বারা ক্ষতি কিছুটা কমিয়ে ফেলা সম্ভব। আপনার হাতে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ থাকলে কয়েকটি শেয়ারে একসাথে বিনিয়োগ করুন।   

৮। ইপিএস এবং সিপিএস বিবেচনা করুন

ইপিএস(Earnings Per Share) এবং সিপিএস(Cash flow Per Share) বিবেচনা করুন। শেয়ারে ইপিএস এবং সিপিএস যদি ইতিবাচক হয় তবে সেখানে বিনিয়োগ করুন।

৯। দক্ষ ব্যক্তির পরামর্শ গ্রহণ করুন

শেয়ারে বিনিয়োগের আগে অভিজ্ঞ কারো সাথে পরামর্শ করে নিন। হুট করে না বুঝে বিনিয়োগ করলে ক্ষতি সম্মুখীন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বুঝে শুনে বাজার বিশ্লেষণ করে তারপর বিনিয়োগ করুন।

পি/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে