ডেস্ক স্পোর্টসঃ হায়! এল ক্লাসিকোও এতটা নিরুত্তাপ হয়! মৌসুমের শুরুতে, ইন্টারন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নস কাপ বলে যে একটা প্রীতি টুর্নামেন্ট হয়; সেখানেও রিয়াল মাদ্রিদ আর বার্সেলোনা মুখোমুখি হলে যতটা হারজিত আর প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির অঙ্ক থাকে, সোমবার রাতে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর দৈরথে তার ছিটেফোঁটাও নেই। থাকবে কেন? গোটা মৌসুমে এখন পর্যন্ত অপরাজিত থাকা বার্সেলোনা লিগ শেষ হওয়ার চার ম্যাচ আগেই ‘ডাবল’ জয়ের আনন্দে পার্টি দিয়েছে হোটেল সোফিয়াতে।

একের পর এক অডি আর রেঞ্জ রোভারে ছেয়ে গেছে হোটেলের পার্কিং লট। মাদ্রিদে তখন অন্য ছবি। জানা হয়ে গেছে, ১৩তম ইউরোপিয়ান শিরোপা আর রিয়াল মাদ্রিদের মাঝের বাধার নাম লিভারপুল। জিনেদিন জিদানের মগজে তাই লুই সুয়ারেস, লিওনেল মেসিদের চেয়ে মো সালাহ আর সাদিও মানেরই বেশি আনাগোনা। অথচ কি দারুণ রোমাঞ্চকর একটা মঞ্চই না হতে পারত রবিবারের ন্যু ক্যাম্প! লিগের ৩৫তম রাউন্ড, মুখোমুখি বার্সেলোনা ও রিয়াল মাদ্রিদ; হয়তো এই ৯০টা মিনিটই ঠিক করে দিত শিরোপার গতিপথ। কিন্তু শিরোপার রেসটাই যে অতটা লম্বা হলো না!

লা লিগার চলতি মৌসুমেই, সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে প্রথম ‘এল ক্লাসিকো’তে যখন মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল, তার আগে হয়েছিল অনেক কাণ্ড। এশিয়ার ফুটবল দর্শকদের বিশাল বাজার ধরতে খেলা শুরুর সময় এগিয়ে নিয়ে আসা হয়েছিল দুপুর ১টায়। যেখানে সাধারণত স্পেনে সাপ্তাহিক ছুটির দিনের বড় ম্যাচগুলো শুরুর সময় রাত ৯টা! যুক্তরাজ্যের একটি ব্যবসা সাময়িকী জানিয়েছে, ১৮২টি দেশের ৬৫০ মিলিয়ন দর্শক দেখেছিলেন রিয়াল-বার্সেলোনা ম্যাচের সরাসরি সম্প্রচার, নানা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এল ক্লাসিকো নিয়ে মানুষের ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া, অর্থাৎ লাইক, শেয়ার, কমেন্ট, হ্যাশট্যাগ এসব ছিল দুই বিলিয়ন বারেরও বেশি! অথচ এবার, উত্তেজনার পারদ যে এই উচ্চতায় উঠবে না সেটা আন্দাজ করা যাচ্ছে আগেভাগেই।

আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার বিদায়ী আর ফিলিপে কৌতিনিয়োর প্রথম এল ক্লাসিকো। নবাগত ও বিদায়ী দুই সতীর্থের জন্যই একই উপহার চান সতীর্থরা, সেটা অবশ্যই জয়! ২০০৯ সালে বার্নাব্যুতে ৬-২ গোলের জয়; পরের বছর ন্যু ক্যাম্পে ৫-০ গোলের জয় আর ২০১৫-তে মাদ্রিদে ৪-০ গোলের জয়ে গোল করেছিলেন ইনিয়েস্তা। মাঝমাঠের এই জাদুকর চলতি মৌসুম শেষেই ছাড়ছেন চিরচেনা বার্সেলোনা, গন্তব্য চীন। যাওয়ার আগে তাঁকে বিদায়ী ক্লাসিকোতে হাসিমুখে বিদায় জানাবার ব্যাপারটা যেমন আছে, তেমনি এবারই ক্লাসিকো অভিষেক হতে যাচ্ছে কৌতিনিয়োর। শীতকালীন দলবদলে লিভারপুল থেকে বার্সেলোনায় আসা এই ব্রাজিলিয়ান নিশ্চয়ই চাইবেন চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের বিপক্ষে মনে দাগ কাটার মতো কিছুই করতে।

গত রবিবারেই দেপোর্তিভোর মাঠ রিয়াজোরে ২৫তম লা লিগা জেতা হয়ে গেছে বার্সেলোনার। পরের রবিবারে মাঠে নামার আগে প্রেরণা জোগাচ্ছে অপরাজিত লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কীর্তির হাতছানি। বৃহস্পতিবার তিতো ভিলানোভার নামে নামকরণ করা অনুশীলন মাঠে প্রস্তুতি সেরেছে এর্নেস্তো ভালভের্দের শিষ্যরা। কাল সকালে অনুশীলন করেছে রিয়াল মাদ্রিদও। ইসকো আর ভারানকে নিয়ে খানিকটা সংশয় আছে, ২৬ মে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালের আগে জিদান পূর্ণ শক্তির দল নামাবেন কি না, তা নিয়েও পাওয়া যায়নি কোনো স্পষ্ট বার্তা।

K/K/N.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে