নয়ন দাস, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ যথাযোগ্য মর্যাদায় শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছেন কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার দাশিয়ারছড়ার বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী।

আজ সোমবার (২১শে ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টায়সোমবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৮টায় দাশিয়ারছড়া ছিটমহলের ডি-সেট সেন্টার সংলগ্ন একমাত্র শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে ভাষাশহীদদের শ্রদ্ধা জানানো হয়। শেখ ফজিলাতুন্নেছা দাখিল মাদরাসার আয়োজনে ছিটমহলের শিশু কিশোর ও বিভিন্ন বয়সের মানুষ এতে অংশ নেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ভাষাশহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে সকাল সাড়ে ৭টায় শেখ ফজিলাতুন্নেছা দাখিল মাদরাসা কক্ষে পবিত্র কোরআন তেলওয়াতের পর ৫২-এর ভাষা আন্দোলন ও ভাষাশহীদদের মর্ম কথা নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এ সময় বক্তব্য দেন- শেখ ফজিলাতুন্নেছা দাখিল মাদরাসার সুপারিন্টেনডেন্ট আমিনুল ইসলাম মিয়া, সহকারী শিক্ষক নাসিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সভাপতি আলতাফ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা রেবের আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলাউদ্দিন প্রমুখ।

শেখ ফজিলাতুন্নেছা দাখিল মাদরাসার সুপারিন্টেনডেন্ট আমিনুল ইসলাম মিয়া বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারি কেবল শোক পালনের দিন নয়। এ দিবসটি আমাদের প্রতিবাদী হতে শেখায়। একুশের চেতনা সমাজ থেকে অন্যায়, অত্যাচার, অবিচার, শোষণ, বঞ্চনা ও দুর্নীতি প্রতিরোধে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ার শিক্ষা দেয়। যে প্রতিবাদী সে নিজে অন্যায় করে না এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকে।

বাঙালির ভাষা সংগ্রামের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরে মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মো. নাসিরুল ইসলাম বলেন, বিশ্ব স্বীকৃত আমাদের এই শহিদ দিবস। অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের জন্যই সেদিন রাস্তায় নেমে এসেছিলেন হাজারো বীর বাঙালি। স্বাধীনভাবে মাতৃভাষায় কথা বলার, পড়াশোনা করার, সাহিত্য রচনা করার, কাজকর্ম করার অধিকার আদায় করাই ছিল সেই প্রতিবাদের উদ্দেশ্য।

বাংলাদেশ-ভারত ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সভাপতি আলতাফ হোসেন বলেন,তাদের সে সময়ের সেই আন্দোলনের কারণেই আজ আমরা বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে পারছি। তাদের এ ঋণ আমরা কোনোদিনও শোধ করতে পারবো না।

দাশিয়ারছড়া ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার ১৬২টি বিলুপ্ত ছিটমহলের মধ্যে আয়তন ও লোকসংখ্যার দিক থেকে সবচেয়ে বড়। ১৯৭৪ সালে মুজিব-ইন্দিরা চুক্তি অনুযায়ী, দাশিয়ারছড়ার আয়তন ১ হাজার ৬৪৩ একর। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ হওয়ার পর এই ভূখণ্ড ভাগ হয়ে ফুলবাড়ী, কাশিপুর ও ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে।

২০১৬ সাল থেকে ডি-সেট সেন্টার সংলগ্ন একমাত্র শহীদ মিনারে ভাষাশহীদদের প্রতিবার শ্রদ্ধা জানিয়ে আসছে দাশিয়ারছড়াবাসী। এর আগে সেখানে শহীদ মিনার ছিল না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে