bashkhali

বিডি নীয়ালা নিউজ(৬ই এপ্রিল১৬- চট্টগ্রাম প্রতিবেদনঃ চট্টগ্রামের রক্তাক্ত বাঁশখালীর গণ্ডামারা এখন আতঙ্ক, শোক ও ক্ষোভের জনপদ। বাঁশখালী উপজেলার আকাশ যেন শোকের কালো কাপড়ে ঢাকা। পুরো এলাকায় বিরাজ করছে আতঙ্ক। সামগ্রিক অবস্থা থমথমে। দায়ের হওয়া তিন মামলায় আসামি করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার গ্রামবাসীকে। আতঙ্কে অনেকেই এখন এলাকাছাড়া।

এস আলম গ্রুপের কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও প্রকল্পের পক্ষ-বিপক্ষের গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলি বর্ষণের ঘটনায় মঙ্গলবার শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চারটি লাশের সন্ধান মিলেছে। তবে সোমবারের ওই সংঘর্ষে ছয়জন মারা গেছে বলে এলাকার অনেকে জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার সকাল থেকেই স্থানীয় নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণী, শিশু-কিশোর, আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা ক্ষোভ ও প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে পড়ে। প্রতিটি মোড়ে মোড়ে হচ্ছে নীরব প্রতিবাদ সভা। অসংখ্য বঞ্চিত মানুষ প্রতিবাদ ও মানববন্ধন সভা করেছে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে। এ ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে। কিন্তু নেপথ্যের মূল হোতারা এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

বাঁশখালী থানা সূত্রে জানা যায়,  ম্যাজিস্ট্রেট,  পুলিশ ও সরকারি লোকজনের ওপর হামলার ঘটনায় বাঁশখালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বাহার মিয়া বাদী হয়ে ৫৭ জনের নাম উল্লেখ ও প্রায় ৩২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি মামলা করেছেন। তাছাড়া নিহত দুই সহোদর ও জামাতার পরিবারের পক্ষে মাওলানা বশির আহমদ বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৪০০ থেকে ১৫০০ জনকে জনকে আসামি করে একটি এবং নিহত জাকের আহমদের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে প্রায় ১৮০০ জনকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেছেন।      অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (দক্ষিণ) হাবিবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তাছাড়া এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষা করতে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ঘটনাস্থল ও আশপাশের এলাকায় রয়েছেন।   জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. মুমিনুর রশিদকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। বসতভিটা ও কবরস্থান রক্ষা কমিটির আহবায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী বলেন, পরিকল্পিতভাবে পুলিশ জনগণের উপর গুলি চালিয়ে এ হত্যাকাণ্ড ঘটায়। আমরা রক্তের বিনিময়ে হলেও চার নিহতের রক্তের দাম বৃথা যেতে দেব না। আমাদের বাপ-দাদার ভিটা মাটি ছেড়ে যাব কোথায়? তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, পুলিশ প্রশাসন প্রকল্প কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নেপথ্যে আতাত করে জনস্বার্থ ও পরিবেশ বিরোধী একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে মাঠে নেমেছে। আমরা জীবন দিয়ে হলেও এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে দেব না।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে