ডেস্ক রিপোর্ট : যুক্তরাজ্যে বৃহস্পতিবারের পার্লামেন্ট নির্বাচনে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ‘তিনকন্যা’ পুননির্বাচিত হয়েছেন।বাংলাদেশী এই তিনকন্যা হলেন- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, রুশনারা আলী এবং রূপা হক। তারা তিনজনই লেবার পার্টির মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন এবং নিজেদের আসন ধরে রেখেছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগ্নী ও শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ‘হ্যাম্পস্টেড এ্যান্ড কিলবার্ন’ আসনে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ১৫ হাজার ৫৬০ ভোট বেশি পেয়ে পুন:নির্বাচিত হয়েছেন। টিউলিপ পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৪৬৪ ভোট এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির ক্লেয়ার- লুইস লেল্যান্ড পেয়েছেন ১৮ হাজার ৯০৮ ভোট। বিগত ২০১৫ সালের নির্বাচনের চেয়ে এবার টিউলিপের ভোটের ব্যবধান বেড়েছে। গতবার তিনি একহাজার ১৩৮ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হন।
বিশাল বিজয়ের পর টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক টুইট করেন, ‘হ্যাম্পস্টেড এ্যান্ড কিলবার্ন আসনে পুন:নির্বাচিত হয়ে আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সদয় সমর্থনের জন্য আপনাদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।’

রুশনারা আলী ‘বেন্থাল গ্রীন এ্যান্ড বো’ সংসদীয় আসন থেকে ৪২ হাজার ৯৬৯ ভোট পেয়ে পুন:নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির প্রার্থী চার্লট চিরিকো ৭ হাজার ৫৭৬ ভোট পেয়েছেন।রুশনারা আলী টুইটারে লিখেছেন, ‘আমাকে সংসদ সদস্য পুন:নির্বাচিত করার জন্য বেন্থাল গ্রীন এ্যান্ড বো-এর বাসিন্দাদের অন্তরের অন্তস্থল থেকে ধন্যবাদ। এটি একটি সম্মান ও সুযোগ।’রূপা হক ‘ইয়েলিং সেন্ট্রাল এ্যান্ড এ্যাকটন’ সংসদীয় আসন থেকে ৩৩ হাজার ৩৭ ভোট পেয়ে পুন:নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কনজারভেটিভ পার্টির জয় মরিসে পেয়েছেন ১৯ হাজার ২৩০ ভোট।’
গত বৃহস্পতিবারের (৮ জুন) যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট নির্বাচনে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু এদের মধ্যে ‘তিনকন্যা’- জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাতনি ও শেখ রেহানার কন্যা টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, রুশনারা আলী এবং রূপা হক জনগনের মনোযোগ আকর্ষণ করেন।
এবারের নির্বাচনে তিনকন্যা সহ মোট ৮ জন বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রার্থী লেবার পার্টির মনোনয়ন পেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
উল্লেখ্য, যুক্তরাজ্যের ২০১৫ সালের পার্লামেন্ট নির্বাচনে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাদের মধ্যে লেবার পার্টি মনোনীত এই ‘তিনকন্যা’ পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
বিগত নির্বাচন শেষে টিউলিপ লেবার পার্টি নেতা জেরেমি করবিন এর ছায়া মন্ত্রিসভায় যোগ দেন এবং শিক্ষা বিষয়ক ছায়ামন্ত্রী এ্যাঞ্জেলা রেইনারের টিমভুক্ত হন।১৯৮২ সালে লন্ডনের মিচামে জন্ম গ্রহণকারী টিউলিপ দুটি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। কিংস কলেজ লন্ডন থেকে একটি ইংরেজি সাহিত্যে এবং অন্যটি রাজনীতি, নীতি ও সরকার বিষয়ে।উইকিপিডিয়া অনুযায়ী তিনি রিজেন্টস পার্কের একজন সাবেক ও প্রথম বাঙ্গালী নারী কাউন্সিলর এবং ক্যামডেন কাউন্সিলের সংস্কৃতিও কমিউনিটি বিষয়ক কেবিনেট সদস্য।

বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রথম বৃটিশ এমপি রুশনারা ২০১৫ সালে পূর্ব লন্ডনের বেথনাল গ্রীন এন্ড বো নির্বাচনীটি আসন ধরে রাখতে সক্ষম হন।সিলেটের বিশ্বনাথে জন্ম নেয়া রুশনারা ২০১৫ সালের নির্বাচনের পর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ বিষয়ক বাণিজ্য দূত নিযুক্ত হন।তিনি ২০১০ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে প্রথম হাউস অব কমন্সে আসেন। অক্সফোর্ড শিক্ষিত রুশনারা তখন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন ও শিক্ষা বিষয় ছায়া মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন।’

রুপা যুক্তরাজ্যে অনুষ্ঠিত বিগত সাধারণ নির্বাচনে ইএলিং সেন্ট্রাল এন্ড এ্যকটন আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে লেবার পার্টির ছায়া মন্ত্রিসভায় অন্তভুক্ত হন।তিনি কিংস্টন ইউনিভার্সিটির সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সিনিয়র প্রভাষক। তার পূর্ব পুরুষদের বাড়ি বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় পাবনা জেলায়।যুক্তরাজ্যের নির্বাচনে টিউলিপ সিদ্দিক, রুশনারা আলী ও রুপা হক পুনঃনির্বাচিত হওয়ায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, এই বিজয় অর্জনের মাধ্যমে তারা বাংলাদেশের জনগণের মুখ উজ্জ্বল করেছেন।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে