ডেস্ক রিপোর্টঃ বাংলাদেশের কওমী মাদ্রাসাগুলোর নিজস্ব বৈশিষ্ট্য অক্ষুন্ন রেখে তাদের দেয়া সনদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়ার দাবি জানিয়েছে ইসলামপন্থী একটি সংগঠন। ঢাকায় তাদের এক প্রতিনিধি সম্মেলনে সংগঠনের নেতারা বলেছেন মাদ্রাসায় সরকারি কোনও নিয়ন্ত্রণ তারা মেনে নেবেন না। সরকারপন্থী হিসেবে পরিচিত শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ বলেছেন, দাবি আদায়ের জন্য নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্য ঘুচিয়ে হেফাজতে ইসলামের প্রধান মাওলানা আহমদ শফির নেতৃত্বেই সবাইকে কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশে কওমী মাদ্রাসার সংখ্যা কত তার আনুষ্ঠানিক কোনও পরিসংখ্যান পাওয়া কঠিন। আবার এসব মাদ্রাসাগুলোকে কেন্দ্র করে ইসলামপন্থী নেতাদের মধ্যে বিভেদের সূত্র ধরে ব্যক্তি উদ্যোগেই গড়ে উঠেছে অন্তত পাঁচটি বোর্ড। এগুলোর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে প্রায় ৫০ থেকে ৭০ হাজার মাদ্রাসা। এ ধরনের একটি বোর্ড বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ড- যেটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বর্তমানে চরমোনাই পীর হিসেবে পরিচিত মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীমের প্রয়াত পিতা।

আজ এ বোর্ডের প্রতিনিধি সম্মেলনে মিস্টার করীম বলেছেন, ‘মাদ্রাসাগুলো থেকে শিক্ষার্থীদের যে সনদ দেয়া হয় তার স্বীকৃতি দিতেই হবে রাষ্ট্রকে’। দেশজুড়ে ব্যক্তি বা স্থানীয় উদ্যোগে স্থাপিত কওমী মাদ্রাসাগুলোর সিলেবাস কিংবা প্রশাসনিক বা আর্থিক ব্যবস্থাপনা কোন কিছুতেই সরকারি কোন নজরদারি কিংবা তত্ত্বাবধানের সুযোগ নেই।

একটি মাদ্রাসায় পড়ানো হচ্ছে বাংলাদেশের কওমী মাদ্রাসাগুলোর নিজস্ব বৈশিষ্ট্য অক্ষুন্ন রেখে তাদের দেয়া সনদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেয়ার দাবি জানিয়েছে ইসলামপন্থী একটি সংগঠন।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে হেফাজতে ইসলামের প্রধান মাওলানা আহমদ শফির নেতৃত্বে ইসলামপন্থীদের একটি কমিশনও হয়েছে যারা সরকারের সাথে আলোচনা শুরু করেছে। মিস্টার শফির ঘনিষ্ঠ মুফতি মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ বলছেন বাংলাদেশের কওমী মাদ্রাসাগুলো ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসাকে অনুসরন করে। তারা সিলেবাস, পরিচালনা থেকে শুরু করে সব বিষয়েই স্বাধীনভাবেই কাজ করতে চায়।

চরমোনাই পীর আয়োজিত আজকের সম্মেলনে অংশ নিয়ে সংহতি প্রকাশ করেছেন সরকারপন্থী হিসেবে পরিচিত শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। অনুষ্ঠানে তিনি জানান বিষয়টি নিয়ে মাওলানা আহমদ শফীর নেতৃত্বে সরকারের সাথে যে আলোচনা চলছে তাতে বিভেদ ভুলে সব পক্ষকেই সম্পৃক্ত হতে হবে।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদও বলছেন মাদ্রাসাগুলোর সনদের স্বীকৃতির বিষয়ে সরকারের কোন আপত্তি নেই। তিনি বলেন, “আমাদের দেশে অনেক মাদ্রাসা আছে। অনেক বোর্ডও বিভক্ত। আমরা মনে করি এটা সার্বিক শিক্ষার অঙ্গ এবং এটাকে এগিয়ে নেয়া দরকার। তবে কওমী মাদ্রাসার সার্টিফিকেটের স্বীকৃতি দেয়া জরুরী। তারা যেভাবে চাইবেন সেভাবে দিতে আমরা রাজী আছি”। তবে মাদ্রাসাগুলোতে কি শিক্ষা দেয়া হচ্ছে বা এর প্রশাসনিক ও আর্থিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সরকারের কোন ভূমিকা থাকবে না নাকি বর্তমান ধারাতেই কওমী মাদ্রাসাগুলো পরিচালিত হওয়াকে সরকারও মেনে নেবে-এসব বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি।

বি/বি/সি/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে