আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ ধূলিঝড়ে লন্ডভন্ড ভারতের উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরাখন্ড। তিন রাজ্য মিলিয়ে নিহতের সংখ্যা প্রায় ৭৪ জন। এর মধ্যে উত্তরপ্রদেশে মৃতের সংখ্যা ৪৫, রাজস্থানে এখনও পর্যন্ত নিহত হয়েছে ২৭ জন, উত্তরাখন্ডে নিহতের সংখ্যা ২।  ভারতজুড়ে সব মিলিয়ে আহতের সংখ্যা প্রায় দেড় শতাধিক। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।

গতকাল বুধবার বিকালের পর থেকে প্রবল ধূলিঝড়ে ঢেকে যায় উত্তরপ্রদেশ ও রাজস্থানের একাধিক জেলা। সেই সাথে চলে বজ্র বিদ্যুৎসহ প্রবল বর্ষণ। উত্তরপ্রদেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে আগ্রা, বিজনৌর, সাহারানপুর, বরেলী জেলা। নিহতের সংখ্যা ৪৫, এরমধ্যে বহু নারী ও শিশু রয়েছে। আহত কমপক্ষে ৪০ জন।

রাজ্যটির রাজস্ব আদায় ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কমিশনার সঞ্জয় কুমার জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ত্রাণের বন্টন করা হবে। ঝড়-বৃষ্টির ফলে রাজ্যের স্বাভাবিক জনজীবন পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে রাজ্য প্রশাসনন যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে কাজ শুরু করেছে। রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের ত্রাণ কাক তদারকি করতে নির্দেশ দিয়েছেন। ইতিমধ্যেই দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থদের ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দিয়েছে রাজ্য সরকার।

অন্যদিকে, রাজস্থানের ভরতপুর, ধোলপুর এবং আলওয়ারে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই রাজ্যের নিহত ২৭ জনের মধ্যে ভরতপুরে (১২), ধোলপুরে (১০) এবং আলওয়ারে (৫) জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এই রাজ্যটিতে আহতের সংখ্যা প্রায় শতাধিক। প্রবল বর্ষণ ও ধূলিঝড়ে পুরো রাজ্যে প্রায় শতাধিক গাছ উপড়ে গিয়েছে, উপড়ে গিয়েছে বিদ্যুতের খুঁটি, ধসে পড়েছে একাধিক কাঁচা বাড়ি। পরিস্থিতি সামাল দিতে রীতিমতো বেগত পেতে হচ্ছে প্রশাসনকে। উদ্ধার কাজে নামানো হয়েছে পুলিশ, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও দুযোগ্য মোকাবিলা দলকে।

প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিহত ও আহতদের ক্ষতিপুরণের ঘোষণা দিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে এই ঘটনায় নিহতদের প্রতি শোকজ্ঞাপন করে দুর্গতদের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছেন।  টুইট করে তিনি জানান ‘এটি অত্যন্ত দু‍‍‍:খজনক ঘটনা। আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছি’।

এই দুই জেলার পাশাপাশি রাজধানী দিল্লির একাধিক জায়গাতেও প্রবল বর্ষণ ও ধূলিঝড় হয়। দিল্লিতে গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ছিল ৩৮.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু গতকালের বর্ষণে সেই তাপমাত্রা নেমে আসে ২২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। ঝড়ের দাপটে একাধিক জায়গায় সড়কের ওপর বড় বড় গাছ ভেঙে পড়েছে। ফলে বিভিন্ন জায়গায় দেখা দিয়েছে তীব্র যানজট। ধূলিঝড়ের দাপটে একাধিক বিমানের যাত্রাপথ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ধূলিঝড়ের প্রকোপ ছিল উত্তরাখন্ডেও। রাজ্যটির ডিজাস্টার মিটিগেশন এন্ড ম্যানেজমেন্ট সেন্টার (ডিএমএমসি) জানিয়েছেন, গতকাল বুধবার রাতে বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়-বৃষ্টির ফলে কুমাও এলাকায় ২ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং কয়েকজন আহত হয়েছে। ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে উত্তরাকাশি ও চামোলি জেলায়।

B/D/P/N.

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে