আসাদ হোসেন রিফাত, লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ 
দুর্দশাগ্রস্ত আর ভাগ্য বিড়ম্বিত নারী প্রতিবন্ধী নমিতা রানী (৩০) । অনেকেই সরকারি-বেসরকারি সাহায্য পেলেও এ পর্যন্ত কিছুই জোটেনি নমিতা রানীর ভাগ্যে।
নিত্য অভাব আর অসুস্থতাকে সাথে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে তার দিন কাটে। রাতেও ঘুমাতে পারেন না। বাঁশের বেড়া দিয়ে তৈরি ঘর, আর পলিথিনের ছাউনি। বৃষ্টি এলে ঘরের এক কোণে গুটিসুটি মেরে নির্ঘুম রাত কাটে।

প্রায় পাঁচ বছর ধরে ওই দম্পতি জায়গা জমি না থাকায় সরকারী খাসজমিতে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। স্বামী সাধন চন্দ্রের স্ত্রী নমিতা রানীর একটি হাত ও একটি পা প্রতিবন্ধী এখন পর্যন্ত ভাগ্যে জোটেনি প্রতিবন্ধী ভাতা, ভিজিডি কার্ড কিংবা মাথা গোঁজার মতো একটা সরকারি ঘর। দিনমুজুরীর উপর ভর করে চলে এই অভাবের সংসার। 

জানা গেছে, লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের পুর্ব সিন্দুর্না গ্রামের খাস জমিতে বসবাস করেন দিনমুজুর সাধন চন্দ্র (৩৫) ও শারীরিক প্রতিবন্ধী নমিতা রানী (৩০) দম্পতি। এই দম্পতির এক ছেলে নয়ন চন্দ্র ও এক মেয়ে বৃষ্টিকে নিয়ে তাদের অভাবের সংসার। ছেলে নয়ন পঞ্চম শ্রেণিতে ও মেয়ে বৃষ্টি তৃতীয় শ্রেণিতে স্থানীয় ১ নং মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখা পড়া করেন। এদিকে প্রতিবন্ধী স্ত্রী নমিতা রানীর বুকের ভাল্পের সমস্যা ও ছেলে নয়নের হার্টের সমস্যায় ভূগছেন। প্রতি সপ্তহে তাদের জন্য ঔষধ কিনতে লাগে প্রায় সাড়ে ৭শত টাকা। তাদের চিকিৎসা করতে সবে শেষ করছেন সাধন চন্দ্র। 
ভুমিহীন এই পরিবারে থাকার একটি ঘর গত ৬ মাস আগে ঝড় ও প্রচুর বৃষ্টিতে ভেঙ্গে পড়ে। সেই থেকে এই ভাঙ্গা টিনের ঘরে দুই সন্তানকে নিয়ে এই ঠান্ডায় বসবাস করছের এই দম্পতি। গত ৪ মাস আগে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দেখা করে টিনে জন্য আবেদন দিয়েও আজ পর্যন্ত টিন পাননি সে। টাকা পায়সা না থাকায় ভাঙ্গা ঘরে পরিবার নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন। সাধন চন্দ্র উপজেলার সিন্দুর্না ইউনিয়নের পুর্ব সিন্দুর্না গ্রামের নৈশপ্রহরী জগোদিস চন্দ্রের ছেলে।
সরেজমি গিয়ে দেখা গেছে, কনকনে শীত আর ঠান্ডা বাতাসে ভাঙ্গা টিনের ঘরে প্লাস্টিক মুড়িয়ে কোন মতে ওই দম্পতি ছেলে মেয়েকে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। ঘরের সব টিন জাং ধরে ভেঙ্গে পড়েছে। ঘরে থাকার কোন পরিবেশ নেই। সাধন চন্দ্রর স্ত্রীর একটি হাত ও একটি পা অচল অবস্থায় পড়ে আছে। সরকারী ভাবে পায়নি কোন প্রতিবন্ধী ভাতা। এ ভাবেই কষ্টে দিন কাটছে তাদের। তারা প্রধান মন্ত্রীর কাছে একটি সরকারী বাড়ি পাওয়া দাবী তোলেন।
সাধন চন্দ্র বলেন, আমি দীর্ঘ দিন ধরে এই খাস জমিতে বসবাস করছি। স্ত্রী ও ছেলে চিকিৎসা করে সবেশেষ করছি। আমার ঘর ভেঙ্গে পড়েছে ঘরটি তোলার কোন উপায় নেই। আমি সরকারে কাছে একটি ঘর চাই। ইউএনও কাছে টিনের জন্য দরখাস্ত দিয়েছি। ইউএনও বলছেন টিন এলে পাবেন কিন্তু আজ ৪ মাসও টিন পাইনি। কেউ যদি আমার ঘরটি টিন দিয়ে সাহায্য করতে তাহলে ভগবানের কাজে আশীর্বাদ করতাম।
ওই গ্রামের প্রতিবেশী আবু সাঈদ জানান, সাধান চন্দ্র একজন দিনমজুর গরিব তার স্ত্রী নমিতা শারিরক প্রতিবন্ধী ও অসুস্থ্য। তাদের থাকার ঘরটি ভেঙ্গে পড়েছে। টাকা পয়সা না থাকায় ভাঙ্গা ঘরটিতে ছেলে মেয়ে নিয়ে রাত্রীযাপন করছেন। মুজিব বর্ষ উপলক্ষে তার জন্য একটি সরকারী ঘর পাওয়া উচিৎ বলে মনে করি।
সিন্দুর্না ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নুরল আমিন বলেন, ওই পরিবারটি বিষয় জানা নেই তবে সরকারী ঘরের জন্য আবেদন দিলে বিষয়টি দেখা যাবে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সামিউল আমিন জানান, ‘খোঁজখবর নিয়ে তাকে সহযোগীতা করা হবে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সামিউল আমিন জানান, ওই পরিবারের খোঁজখবর নিয়ে সহযোগীতা করা হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে