ডেস্ক রিপোর্ট : ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর বিশ^মানের ফিল্ম আর্কাইভ শিগগিরই চালু হচ্ছে।
প্রায় ৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে রাজধানীর আগারগাঁও এলাকায় বিশ্বমানের এই আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ভবন নির্মাণ কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।
বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক শচীন্দ্র নাথ হালদার বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থাকে (বাসস) বলেন, ফিল্ম আর্কাইভ ভবন নির্মাণ কাজ গত ৩০ জুন শেষ হয়েছে। বর্তমানে ভবনটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের অপেক্ষায় রয়েছে। এ মাসেই এর উদ্বোধন হতে পারে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ফিল্ম আর্কাইভ ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন করেন।
আর্কাইভের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আধুনিক বিশে^র সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ ২০১২ সাল থেকে ডিজিটাল পদ্ধতিতে চলচ্চিত্র সংরক্ষণ করে আসছে। এখানে বিভিন্ন প্রকার চলচ্চিত্র, স্থির চিত্র, গ্রন্থ, প্রকাশনা, পোস্টার, স্ক্রিপ্ট ও চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট মোট ডকুমেন্টের সংখ্যা এখন প্রায় ৬৫ হাজার। এরমধ্যে রয়েছে পূর্ণ দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ৬ শতাধিক এবং স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রায় দেড় হাজার।
ফিল্ম আর্কাইভ ভবন নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো: নিজামূল কবীর বাসস’কে জানান, ৮৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে আগারগাঁও প্রশাসনিক এলাকায় এই আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত ফিল্ম আর্কাইভ ভবন জাপানের ঋণ মওকুফ তহবিলের ৭৫ কোটি এবং সরকারি খাতের ১১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ফিল্ম আর্কাইভ ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তুর স্থাপন করেন।
এই ফিল্ম আর্কাইভ দেশের প্রথম সবাক চলচ্চিত্র মুখ ও মুখোশ, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম অভিনীত ধ্রুব এবং প্রমথেশ বড়–য়ার দেবদাস চলচ্চিত্রের সংগ্রাহক।
ফিল্ম আর্কাইভের মহাপরিচালক বাসস’কে বলেন, ফিল্ম আর্কাইভ ভবন চত্বরে একটি মিউজিয়াম (জাদুঘর) করার পরিকল্পনা রয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ফুটেজ সংগ্রহ করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে একটি প্রকল্প গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
শচীন্দ্র নাথ হালদার বলেন, একটি আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর বিশ^মানের ফিল্ম আর্কাইভ গড়ে তোলার মাধ্যমে এখানে চলচ্চিত্র কেন্দ্রিক সাংস্কৃতিক বলয় তৈরি হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ প্রকল্পের আওতায় প্রথম পর্যায়ে সুপার স্ট্রাকচার বিশিষ্ট ১২ তলা ভবনের ৭ তলা নির্মিত হয়েছে। যেখানে ২৪ হাজার ৫’শ বর্গফুটের একটি বেসমেন্ট ফ্লোরও নির্মিত হয়েছে। আধুনিক ও দীর্ঘমেয়াদি চলচ্চিত্র সংরক্ষণের জন্য বেজমেন্টসহ প্রতি ফ্লোরে ৩ হাজার বর্গফুটের একটি করে ফিল্ম ভল্ট রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পুরোনো ফিল্মসমূহ প্রয়োজনে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা, সম্পাদনা এমনকি প্রয়োজন মাফিক পুনঃনির্মাণ করার জন্য একটি ফিল্ম হাসপাতালও নির্মিত হয়েছে। এছাড়া ২টি ফিল্ম ডকুমেন্টেশন সেন্টারও রয়েছে এ ফিল্ম হাসপাতালে। সেলুলয়েড থেকে ডিজিটাল ফরমেটে রূপান্তরের মাধ্যমে ফিল্ম সংরক্ষণের উপযোগী ৪টি ল্যাব রয়েছে। যেখানে ২টি ল্যাব রয়েছে গবেষণার জন্য ও অপর ২টি রয়েছে ডিজিটাল ফিল্ম ট্রিটমেন্টের জন্য। দীর্ঘমেয়াদে ফিল্ম সংরক্ষণে ও ব্যাকআপ সাপোর্ট হিসেবে ফিল্ম ল্যাবরেটরী অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যায়।

বি/এস/এস/এন


একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে