আন্তর্জাতিক রিপোর্টঃ নিজের ২৯তম জন্মদিনটা দারুণভাবে স্মরণীয় করে রাখলেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। তার দেয়া দুই গোলে চ্যাম্পিয়নস লীগের শেষ ১৬’র প্রথম লেগে বার্সেলোনাকে ঘরের মাঠ পাক ডি প্রিন্সেসে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে ফ্রেঞ্চ ওয়ান লিগ চ্যাম্পিয়ন প্যারিস সেইন্ট-জার্মেই।
১৮ মিনিটে সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ডি মারিয়া প্রথম গোল করে দলকে এগিয়ে দেন। এরপর দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর ১০ মিনিট পরে দ্বিতীয় গোল করে তার জন্মদিনটা দারুনভাবে উদযাপন করেন। জানুয়ারিতে পিএসজিতে আসা জুলিয়ান ড্রাক্সলার এই দুই গোলের মাঝে একটি গোল করেছিলেন। অন্যদিকে আরেক ‘বার্থডে বয়’ এডিনসন কাভানি ৭১ মিনিটে ফ্রেঞ্চ চ্যাম্পিয়নদের হয়ে চতুর্থ গোল করলে দলের বড় জয় নিশ্চিত হয়। কাল ছিল কাভানির ৩০তম জন্মদিন।
এই পরাজয়ে বার্সেলোনা শিবির ছিল পুরোপুরি হতবাক। ২০১৩ সালে সেমিফাইনালে দুই লেগ মিলিয়ে বায়ার্ন মিউনিখের কাছে ৭-০ গোলে পরাজিত হবার পরে ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নশীপে এটাই বার্সার সবচেয়ে বড় পরাজয়। প্রায় এক দশক পরে কোয়ার্টার ফাইনালের আগে বিদায় নেবার দ্বারপ্রান্তে এখন কাতালানরা। আগামী মাসে ক্যাম্প ন্যুতে অতি কাল্পনিক কিছু করতে পারলেই কেবল নিজেদের বাঁচানো সম্ভব।
গতকাল রাতটা ছিল পুরোটাই পিএসজি কেন্দ্রিক। ইনাই এমারির দল টানা পাঁচবারের মত কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার সম্ভাবনা প্রায় নিশ্চিতই করে ফেলেছে। ম্যাচ শেষে জয়ের নায়ক ডি মারিয়া বলেছেন, জন্মদিনে বার্সেলোনা বিপক্ষে ৪-০ গোলের জয় সত্যিই অসাধারণ অনুভূতি। আমরা সবাই দারুন খুশী। এটা সত্যিই দারুন একটি ম্যাচ ছিল। সামনে এগিয়ে যেতে হলে আমাদের এমনই আরেকটি পারফরমেন্স দেখাতে হবে। আমরা চার গোল করেছি। কিন্তু তারাও এই ধরনের ফলাফল আমাদের ফেরত দিতে পারে।
আগের চার মৌসুমে এই বার্সেলোনার কাছেই দুইবার পরাজিত হয়ে বিদায় নিয়েছে পিএসজি। তবে এমারির অধীনে পিএসজির সাম্প্রতীক ফর্ম যেকোন দলের জন্যই হুমকি। তারপরেও লুইস এনরিকের দলে যেখানে লিয়নেল মেসির মত খেলোয়াড় রয়েছে সেখানে তাদের কাছ থেকে এই ধরনের পারফনমেন্স আশা করা যায়না। পিএসজিতে ছিলেন না ইনজুরি আক্রান্ত অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা ও বহিষ্কারে থাকা থিয়াগো মোত্তা। এর ফলে মধ্যমাঠে ম্যাচ শুরু করেছেন আদ্রিয়েন রাবোয়িত। চ্যাম্পিয়নস লীগে গতকাল পিএসজির হয়ে অভিষেক হয়েছ ২১ বছর বয়সী প্রিসনেল কিমপেমবের। এছাড়া পিএসজির হয়ে ইউরোপীয়ান অভিষেক হয়েছে ড্রাক্সলারেরও। পিএসজির প্রথম গোলটিও আসে এই জার্মানের কল্যাণেই। ডি বক্সের ঠিক বাইরে ড্রাক্সলারের আদায় করা ফাউল থেকে ডি মারিয়ার ফ্রি-কি বার্সা গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে স্টেগানের তাকিয়ে দেখা ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না। এটি এবারের মৌসুমে ডি মারিয়া তৃতীয় গোল।
বার্সেলোনার জনপ্রিয় এমএসএন কাল ছিল একেবারেই নিষ্প্রভ। নেইমার ব্যাথা পেয়ে কিছুক্ষন মাঠের বাইরে গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে ফেরস আসলেও কোন কাজ করতে পারেননি। লুইস সুয়ারেজকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। মেসি ছিলেন নিরব, অধিনায়ক আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা ম্যাচের আবহের সাথে মানিয়ে নিতে পারেননি। নেইমারের একটি পাস থেকে আন্দ্রে গোমেজের শট পিএসজি গোলরক্ষক কেভিন ট্র্যাপ ফিরিয়ে দেন। কাউন্টার এ্যাটাক থেকে ড্রাক্সলারের শট আটকে দেন টার স্টেগান। কিন্ত বিরতির পাঁচ মিনিট আগে মার্কো ভেরাত্তির সহায়াতায় ড্রাক্সলার ব্যবধান দ্বিগুন করেন।
আশা করা হয়েছিল বিরতির পরে হয়তবা বার্সেলোনা ফিরে আসবে। কিন্তু ৫৫ মিনিটে সেট পিস থেকে ডি মারিয়ার দ্বিতীয় গোল সব আশা ভেঙ্গে দেয়। ৭১ মিনিটে রাইট ব্যাক থেকে থমাস মেনিয়ারের সহায়তায় কাভানি দলের পক্ষে চতুর্থ গোল করেন। সব ধরনের প্রতিযোগিতায় এবারের মৌসুমে এটা কাভানির ৩৪তম গোল।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে