জুয়েল ইসলাম, তারাগঞ্জ, (রংপুর) প্রতিনিধিঃ একদিকে স্বামী হারানোর বেদনা অন্য দিকে বসতভিটা তার উপর রাতের আধারে বাড়িতে আগুন ও দোকান ঘর ভেঙে দেওয়ার বেদনা। এভাবে শতকষ্ট বুকে নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন বদরগঞ্জ উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের খোদরারপাড় হাজীপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের স্ত্রী মোহসেনা খাতুন (৪৮)। সাত মাস পূর্বে তার স্বামী মারা যান। তিন সন্তানের মধ্যে মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন এবং বড় ছেলে স্ত্রী সন্তান নিয়ে অনেক আগেই পৃথক হয়ে গেছেন। প্রতিবন্ধী ছোট ছেলেকে নিয়ে মোহসেনা খাতুন অতি কষ্টে জীবনযাপন করে আসছেন। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে তাকে হয়রানি করার জন্য কথিপয় কিছু স্বার্থন্বেষী মহল উঠেপরে লেগেছে। একদিকে স্বামী হারানোর বেদনা অন্যদিকে সন্তানদের নিয়ে স্বামীর রেখে যাওয়া বসতভিটা হারানোর ভয় এবং সেই সাথে মিথ্যা হয়রানি থেকে পরিবারকে বাঁচাতে বিচার চেয়ে প্রশাসনের দারে দারে ঘুরছেন মোহসেনা খাতুন।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পূর্বশত্রুতার জের ধরে গত ২৩ শে অক্টোবর রাত আনুমানিক প্রায় দেড়টার দিকে রাতের আধারে তার বসতবাড়িতে থাকা রান্নাঘরে আগুন ও পাশে থাকা দোকান ঘর ভেঙে দিয়ে পালিয়ে যান। ঘর থেকে বের হয়ে মোহসেনা খাতুন ও তার প্রতিবন্ধী ছেলে আগুন দেখতে পেলে চিৎকার করতে থাকেন। অবশেষে এলাকাবাসী ফায়ার সার্ভিস অফিসে খবর দিলে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ বিষয়ে ওই ঘটনায় বদরগঞ্জ থানায় মোহসেনা খাতুনের ছেলে আব্দুল্লাহ একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।

মোহসেনা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘদিন থেকে জমি নিয়ে মিজান, রোস্তম আলী, আব্দুল গনির সাথে আমাদের ঝগড়া বিবাদ লেগেই আছে। জমি নিয়ে তারা আমাদের উপর মামলাও করেছেন। গত ২৩ শে অক্টোবর হঠাৎ আমার বাড়িতে পুলিশ নিয়ে আসেন রোস্তম আলী। পুলিশ সহ তার পরিবারের লোকজন রাত ১০ টার সময় আমার টিনের বেড়া ভেঙে দেন এবং সেই রাতেই রোস্তম আলী, রফিকুল ইসলাম সহ তিন চার জন আমার রান্না ঘরে আগুন দিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় আমি চিৎকার দিলে তারা পালিয়ে যান। আমি প্রশাসনে কাছে রোস্তম আলী সহ তার সহযোগিদের বিচার দাবী করছি।

প্রতিবেশী মোসাদ্দেক বিল্লা জানান, দীর্ঘদিন যাবত তারা মোহসেনা খাতুনকে হয়রানি করে আসছে। তারা স্থানীয় চেয়ারম্যান কিংবা গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের বিচার মানেন না। অথচ তারাই আবার প্রশাসন দিয়ে মোহসেনাসহ তার পরিবারের লোকজনকে নানা ভাবে হয়রানি করছেন।

ঘরে আগুন দেওয়ার বিষয়ে রোস্তম আলীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন, প্রশাসনের লোক সহ আমরা তার টিনের বেড়া ভেঙে দিয়েছি। কিন্তু আমরা তার বাড়িতে আগুন দেইনি। আগুন লাগার দিনে আমরা সবাই বাড়িতে ছিলাম। হঠাৎ আগুন লেগেছে বলে চিৎকার দিয়ে উঠলে এলাকাবাসী আগুন নিভানোর চেষ্টা করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

বদরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ হাবিবুর রহমান জানান, বাড়িতে আগুন ও দোকান ঘর ভেঙে দেয়ার বিষয়ে আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে