unctad

ডেস্ক রিপোর্টঃ বাংলাদেশ ২০২৪ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বেরিয়ে আসবে বলে মনে করছে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা আংটাড।
আংটাডের এলডিসি রিপোর্ট-২০১৬তে এ প্রাক্কলন করা হয়েছে।
শনিবার রাজধানীর ব্র্যাক ইন সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আংটাডের প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে।
সিপিডির রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করেন।
এসময় সিপিডির সম্মানিত ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্ষ ও নির্বাহী পরিচালক ড. মুস্তাফিজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
বর্তমানে ৪৮টি দেশ এলডিসি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এশিয়াতে বাংলাদেশের পাশাপাশি আফগানিস্তান, ভুটান, কম্বোডিয়া, লাওস, মিয়ানমার ও নেপাল এলডিসিভুক্ত। জাতিসংঘ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশকে স্বল্পোন্নত, উন্নয়নশীল ও উন্নত এ তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ২০১৮ সালের মধ্যে এলডিসি থেকে বের হওয়ার প্রাথমিক যোগ্যতা অর্জন করবে। ২০২১ সালের মধ্যে এলডিসি থেকে বের হওয়ার জন্য যে তিনটি বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট মানদন্ড বিবেচনা করা হয়, তা সন্তোষজনকভাবে বজায় রাখতে সক্ষম হবে। ২০২৪ সালে চূড়ান্তভাবে এলডিসি থেকে বের হতে সক্ষম হবে বাংলাদেশ। ২০২৪ সালের নাগাদ বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসলেও ২০২৭ সাল পর্যন্ত এলডিসি হিসেবে যে সুবিধা পায়, তা অব্যাহত থাকবে।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, এলডিসি থেকে বেরিয়ে আসাটাই চরম বিষয় নয়। চরম বিষয় হলো উন্নয়নের জন্য কি গতিবেগ নিয়ে আমরা বের হচ্ছি। সেটা যেন গতিবেগ সম্পন্ন রূপান্তর হয়। টেকসই বা মসৃণভাবে উত্তোরণের জন্য এক ধরনের গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। হালকা হালকাভাবে হেঁটে গেলে হবে না। প্রথম হওয়ার মত শক্তি সঞ্চয় করে আপনাকে দৌড়াতে হবে।
তিনি টেকসই উত্তোরণের জন্য মানবসম্পদ বিশেষ করে শিক্ষা, পুষ্টি, মাতৃ মৃত্যুহার হ্রাস, সাক্ষরতা এবং দক্ষ মাসবসম্পদ তৈরি ওপর গুরুত্বারোপের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। এর জন্য পোশাক শিল্পের ন্যায় আরো ৫টি শ্রমঘন খাত তৈরি করতে হবে। যাতে কর্মসংস্থান বাড়ে। উৎপাদনশীলতা বাড়লেই উন্নয়নের গতিবেগ টেকসই করা সম্ভব।
তিনি বলেন, টেকসই উত্তোরণের ক্ষেত্রে সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিও বড় বিবেচনার বিষয়। সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রয়োজন। পাশাপাশি সুশাসন ও ন্যায় বিচারের প্রতি আরো নজর দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে।
মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ ও আর্থিক ভঙ্গুরতা সূচক এ তিনটি বিষয়ে নির্দিষ্ট মানদন্ড অর্জনের ওপর বিশ্লেষণ করে একটি দেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে থাকে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এরইমধ্যে মানবসম্পদ উন্নয়নে জোর দিয়েছে। আর্থিক ভঙ্গুরতা সূচকে ইতিমধ্যে বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় সক্ষমতা অর্জন করেছে। মাথাপিছু আয়ে বাংলাদেশ লক্ষ্য অর্জনের কাছাকাছি রয়েছে।
প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে দেবপ্রিয় বলেন, বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশ ইতোমধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। নি¤œ মধ্যম আয় বলে কিছু নেই। মাথাপিছু জাতীয় আয় এক হাজার ২৬ মার্কিন ডলারের ওপরে গেলেই সংশ্লিষ্ট দেশ মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
তিনি টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে প্রবৃদ্ধি নির্ভরশীলতার পরিবর্তে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির ওপর গুরুত্বরোপের পরামর্শ দেন।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে