ডেস্ক রিপোর্ট: ক্যাসিনোর ইতিহাস
এখন পর্যন্ত ক্যাসিনো সম্পর্কে সঠিক ইতিহাস জানা সম্ভব হয় নি। কারণ ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, পৃথিবীর শুরু থেকেই বাজি বা জুয়া খেলার প্রচলন ছিল। আর বর্তমানে সকল দেশেই কম বেশি এর প্রচলন আছে।

বাংলাদেশের ইতিহাসে ক্যাসিনো
বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ। আর ইসলামে জুয়া সম্পূর্ণ হারাম ও নিষিদ্ধ। তবে জুয়া বাংলাদেশের একটি অতিপরিচিত শব্দ। অলিতে গলিতে চোখ মেলে তাকালেই এর দেখা মিলে। তবে বেশ কয়েক বছর আগে এটা এতোটা খোলামেলা ছিলো না। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গুঞ্জন আসে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে আনুষ্ঠানিক ক্যাসিনো-এর খোঁজ পাওয়া যায়। বিষয়টি জানতে পেরে সরকার প্রধান শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং প্রশাসনিক তৎপরতা চালানোর নির্দেশ দেন।

সম্প্রতি র‍্যাব-১ এর অভিযানে রাজধানীর ফকিরাপুলে ইয়ংমেন্স ক্লাব, শাহজাহানপুরের মুক্তিযোদ্ধা চিত্তবিনোদন ক্লাব, ওয়ান্ডারার্স ক্লাব ও বনানীতে কয়েকটি ক্যাসিনোর সন্ধান পাওয়া যায়। র‍্যাব-১ এর সূত্র মতে, এগুলো পরিচালনা করেন রাজনৈতিক ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের কিছু নেতা। এ সময়ে বেশ কয়েকজনকে আটকও করা হয়। র‍্যাবের মতে, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৫০টিরও বেশি ক্যাসিনো রয়েছে। যেখানে জুয়ার পাশাপাশি নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়ে থাকে। প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন।

ক্যাসিনোতে কারা যায়?
এ কথা আর বেশি বিশ্লেষণ করার দরকার হয় না যে, ক্যাসিনোতে কারা যায়। ধনী বা টাকাওয়ালারাই এর মূল গ্রাহক। বিশেষ করে, ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী গ্রাহকই বেশি হয়ে থাকে। তবে উন্নত দেশগুলোর প্রেক্ষাপটে ক্যাসিনোতে যাওয়ার জন্য কোন বাধা নিষেধ থাকে না। এগুলো সরকার অনুমোদিত হয়ে থাকেন। আর সেখানে প্রায় সকল বারের সাথেই ছোট-খাটো ক্যাসিনো থাকে। শপিং শেষে একটু রিফ্রেশমেন্ট-এর জন্য কিংবা সময় কাটাতে অনেকেই ক্যাসিনোতে গিয়ে থাকেন। কিন্তু এটা ভয়ংকর হয়ে দাঁড়ায় তাদের জন্য, যারা নিয়মিত সেখানে যান এবং নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। নিয়মিত ভরা পকেট নিয়ে ক্যাসিনোতে গিয়ে পকেট খালি করে বাসায় ফেরা লোকজনই হচ্ছে আসল জুয়াড়ি।

কিভাবে সম্পন্ন হয়?
ক্যাসিনোতে এর গ্রাহকরা তাদের পছন্দমতো বিভিন্ন খেলার সুযোগ পায়। তবে যে যেই বিষয়ে পারদর্শী হয় সে সেটি খেলার চেষ্টা করে থাকে। বিশেষ করে ব্ল্যাকজ্যাক, ভিডিও পোকার, ব্রাক্যারেট, ক্রাপ ও রুলেট নামক খেলাগুলোই গ্রাহকরা বেশি খেলে থাকেন। এখানে কিছু কিছু খেলায় গাণিতিকভাবে খেলোয়াড়ের পক্ষে কিছু যুক্তি দেখায় যে, তার জেতার সম্ভাবনা আছে। মূলত এটাই একজন খেলোয়াড়কে তার খেলার মধ্যে বেশি সময় ধরে রাখে। কারণ সে ধরে নেয় যে, তার জেতার সম্ভাবনা এখনও শেষ হয়ে যায়নি। কিছু কিছু খেলায় গ্রাহকরা সরাসরি একে অপরের বিপক্ষে বাজি ধরার সুযোগ পায় এবং ক্যাসিনো হাউজ এখান থেকে কিছু কমিশন নেয়। একে র‍্যাক বলা হয়ে থাকে। এছাড়া গ্রাহকদের আগ্রহী করতে ক্যাসিনোর পক্ষ থেকে নানা অফার দেওয়া হয়ে থাকে।

ক্যাসিনোতে যাওয়া কি ক্ষতিকর?
আসলে ক্যাসিনোতে পরিবেশটা এমনভাবে সাজানো থাকে যে আপনি একবার সেখানে প্রবেশ করলে আপনাকে শুধু টাকা উড়াতেই মন চাইবে। সোজা কথায় বললে, ধনী থেকে ফকির হওয়ার সহজ উপায় হচ্ছে নিয়মিত ক্যাসিনোতে যাওয়া। আপনি চাইলে দুধ অথবা মদ, যেটা ইচ্ছা সেটা খেতে পারেন। কোনটা নিবেন সেটা আপনার বিষয়। জেনে শুনে মদ পান করলে কে কি করবে।

এটা থেকে বাঁচার উপায়
আমাদের যুব সমাজ দিন দিন নানা অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে। যা আমাদের সমাজ তথা জাতিকে ঠেলে দিচ্ছে এক মহাদুর্যোগের দিকে। সময় থাকতে নিজে সচেতন হোন অন্যকে সচেতন করুন। আপনার সন্তানের দিকে নজর রাখুন। তাদের সময় দিন। কোথাও এমন কর্মকাণ্ড নজরে আসলে প্রশাসনকে জানান। পারলে নিজে প্রতিবাদ করুন। আর আপনি যদি এই সকল জায়গায় আসা যাওয়া করেন, তাহলে তা আজই বাদ দিন। কারণ আজ আপনি যাচ্ছেন দুই দিন পর আপনাকে দেখে আপনার সন্তানও আপনার দেখানো পথেই হাঁটবে।

সঠিক উপায়ে আয় করুন, বাজে কাজে ব্যয় করতে মন চাইবে না। ‘নিজের জন্য প্রয়োজনীয় পানির বালতি যদি নিজে বহন করেন তাহলে বুজতে পারবেন প্রতি ফোটা পানি কতটা দামি।’ তবে দিনের আলোতে বসে জ্যোৎস্নার স্নিগ্ধ আলো উপভোগ করতে চাইলে সেটা ভিন্ন কথা।

P/B/A/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে