ডেস্ক রিপোর্টঃ জিআইএফএস এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কেন্দ্র (বিএআরসি) টেকসই নিরাপদ খাবারের উন্নয়নে সহায়তার জন্য গবেষণা, প্রশিক্ষণ ও বিকাশের অংশীদারিত্বের কাজ করতে সম্মত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় কানাডা এবং বাংলাদেশের মধ্যে একটি সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

সমঝোতা চুক্তিতে (এমওইউ) বিএআরসি নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার এবং কানাডার জিআইএফএস-এর চিফ অপারেটিং অফিসার স্টিভ ভিসার স্বাক্ষর করেন।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের ক্রিস্টাল বলরুমে দুই দেশের মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক ও সফররত কানাডার সাসকাচোয়ান সরকারের কৃষিমন্ত্রী ডেভিড মারিট চুক্তি স্বাক্ষরের সময় উপস্থিত ছিলেন।

কৃষিমন্ত্রী কৃষিতে বাংলাদেশের সাফল্যর কথা উল্লেখ করে কৃষির সাফল্যের নানা দিক তুলে ধরেন। এ সময় তিনি জলবায়ু পরিবর্তন জনিত সমস্যা মোকাবেলায় গৃহিত নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, সীমিত সম্পদ, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও বৈরি প্রকৃতিতেও খাদ্যশস্য উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে উদাহরণ। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে যাচ্ছে সবজি। এছাড়া ধান, গম ও ভুট্টা বিশ্বের গড় উৎপাদনকে পেছনে ফেলে ক্রমেই এগিয়ে চলছে দেশ। বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও দুর্যোগ সহিষ্ণু শস্যের জাত উদ্ভাবনেও শীর্ষে বাংলাদেশের নাম।

কৃষির বাণিজ্যিকীকরণের অপরিহার্যতা তুলে ধরেন কৃষিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারে নিরাপদ ও পুষ্টিমান সম্পন্ন খাদ্য নিশ্চয়তার অঙ্গিকারবদ্ধ। কৃষি উন্নয়নের সঙ্গে দেশের সার্বিক উন্নয়ন অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। এ দর্শন সর্বপ্রথম উপলব্ধি করেই স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সবুজ বিপ্লবের ডাক দিয়েছিলেন।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সরকারও কৃষির উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। কৃষি বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত নতুন নতুন জাতসমূহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর কর্তৃক মাঠপর্যায়ে সম্প্রসারণ, শস্য বহুমুখীকরণ, আধুনিক প্রযুক্তি হস্তান্তর, শস্য নিবিড়তা বৃদ্ধি এবং সময়োপযোগী বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে বর্তমানে কৃষি উৎপাদনের ধারা ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে।

কৃষি ও কৃষকের জন্য বর্তমান সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। কৃষি উৎপাদন খরচ হ্রাস করার লক্ষ্যে একাধিকবার সারের খুচরা মূল্য কমানো হয়েছে। কৃষিযন্ত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ, হাওর ও উপকূলীয় এলাকায় ৭০ শতাংশ আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে সরকার। সর্বোপরি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নের্তৃত্ব ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণে খাদ্য ঘাটতির এ দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ; কিছু কিছু ক্ষেত্রে উদ্বৃত্ত হচ্ছে।

সাসকাচোয়ান কৃষিমন্ত্রী ডেভিড মেরিট বলেন, আমাদের গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সহযোগিতামূলক সম্পর্কের এটি একটি মাইলফলক। আমরা ভবিষ্যতে আমাদের এ সম্পর্ককে আরও জোরদার করে কৃষি উন্নয়নে একসাথে কাজ করব। যা নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে সহায়ক হবে।

তিনি আরও বলেন, কানাডার সাসকাচোয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্লোবাল ইনস্টিটিউট ফর ফুড সিকিউরিটিতে (জিআইএফএস) এবং বিএআরসিতে বঙ্গবন্ধু চেয়ার স্থাপন করবে। বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর নামে পিয়েরে এলিয়ট ট্রুডো একটি আধুনিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন করবে কানাডা।

কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামানের সভাপতিত্বে চুক্তি স্বাক্ষর আনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার। এছাড়া সাসকাচোয়ানের উপমন্ত্রী রিক বারটন, বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার রাষ্ট্রদূত বেনোইট প্রেফোঁটেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

P/B/A/N

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে