আন্তর্জাতিক রিপোর্ট:পাকিস্তানের দুই তারকা খেলোয়াড় মিসবাহ-ইউনিসের বিদায়ী টেস্ট সিরিজের প্রথম ম্যাচের প্রথম দিন শেষে ৮১ ওভারে ৭ উইকেটে ২৪৪ রান করেছে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৭১ রানের মধ্যে ক্যারিবীয়দের ৫ উইকেট তুলে নিয়েছিলো পাকিস্তানের বোলাররা। এরপর নিচের সারির চার ব্যাটসম্যানের দৃঢ়তায় দুর্দান্তভাবে লড়াইয়ে ফেরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
জ্যামাইকার সাবিনা পার্কে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তানের অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক। দলপতির সিদ্ধান্তকে যথার্থ প্রমাণে জ্বলে উঠে পাকিস্তানের তিন পেসার মোহাম্মদ আমির, অভিষেক ম্যাচ খেলতে নামা মোহাম্মদ আব্বাস ও ওয়াহাব রিয়াজ। ওয়েস্ট ইন্ডিজ শিবিরে প্রথম আঘাত হানেন আব্বাস। নিজের দ্বিতীয় ও ইনিংসের অষ্টম বলে স্বাগতিক ওপেনার ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটকে শিকার করেন আব্বাস। রানের খাতা খেলার আগেই ব্র্যাথওয়েট ফিরলেও, দ্বিতীয় উইকেটে জুটি বাঁধেন আরেক ওপেনার কাইরন পাওয়েল ও সিমরন হেটমায়ার। শুরুর ধাক্কা সামলে উঠার পথ খুঁজচ্ছিলেন তারা। কিন্তু সেটি হতে দেননি আমির। বাউন্ডারিতে শুরু করা হেটমায়ারকে ১১ রানেই থামিয়ে দেন তিনি।
২৪ রানে হেটয়ামায়ের বিদায়ের পর দলীয় ৩২ রানে মিডল-অর্ডার ব্যাটসম্যান শাই হোপকেও দ্রুত হারায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এবারও শিকারী বোলার আমির। ২ রান করে থামেন হোপ। দ্রুত ৩ উইকেট হারানোয় ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে তখন লক্ষ্য ছিলো বড় জুটি গড়া। তাই সেটি করার চেষ্টা করেন পাওয়েল ও মিডল-অর্ডারের আরেক ব্যাটসম্যান অভিষিক্ত বিশাল সিং । কিন্তু জুটিতে ২১ রানের বেশি যোগ করতে পারেননি তারা। ৯ রানে থাকা বিশালকে ফিরিয়ে পাকিস্তানকে চতুর্থ সাফল্য এনে দেন বাঁ-হাতি পেসার ওয়াহাব রিয়াজ। তাই হেটমায়ারের মত নিজের অভিষেকটা স্মরণীয় করে রাখতে পারলেন না বিশালও।
এক প্রান্ত দিয়ে পাকিস্তান বোলারদের দাপটে দলের চার ব্যাটসম্যানের বিদায় দেখেন পাওয়েল। তবে অন্যপ্রান্ত দিয়ে নিজের লড়াই চালিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু দলীয় ৭১ রানে পাওয়েলের লড়াইয়ের ইতি টানেন আমির। ২টি চারে ৭১ বলে ৩৩ রান করে আমিরের তৃতীয় শিকার হন পাওয়েল।
৭১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ পড়ে যায় বেকায়দায়। সেখান থেকে দুর্দান্ত এক লড়াইয়ের উদাহরণ তৈরি করেন ছয় ও সাত নম্বর ব্যাটসম্যান। সপ্তম উইকেটে রোস্টন চেজ ও উইকেটরক্ষক শেন ডউরিচের তিন অংকের জুটিতে দারুনভাবে ম্যাচে ফিরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাকিস্তান বোলারদের উপর চড়ে বসেন তারা। সেই সাথে দু’জনই তুলে নেন হাফ-সেঞ্চুরি। তাদের ব্যাটে চড়ে বড় স্কোরের স্বপ্ন দেখে ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
কিন্তু দলীয় ১৮৯ রানে চেজ ও ডউরিচের জুটিতে ভাঙ্গন ধরান পাকিস্তানের লেগ-স্পিনার ইয়াসির শাহ। টেস্ট ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় হাফ-সেঞ্চুরি পাওয়া চেজ থেমে যান ৬৩ রানে। তার ১৫১ বলের ইনিংসে ৭টি চার ও ১টি ছক্কা ছিলো। চেজ ফিরে যাবার পরের বলেই বিদায় নেন ডউরিচও। ইয়াসিরের দ্বিতীয় শিকারের আগে ক্যারিয়ারের পঞ্চম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ তিনি। ৯টি চারে ১৩০ বলে ৫৬ রান করেন ডউরিচ। ১৮৯ রানে সপ্তম উইকেট হারানোর পর দ্রুত গুটিয়ে যাবার শংকায় ছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু সেটি হতে দেননি দলের দুই বোলার অধিনায়ক জেসন হোল্ডার ও স্পিনার দেবেন্দ্র বিশু। চেজ-ডউরিচের ব্যাটিং দেখে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেন তারা। তাই অষ্টম উইকেটে ৫৫ রান যোগ করে দিন শেষে অপরাজিতই থাকেন হোল্ডার ও বিশু। হোল্ডার ৩৩ বলে ৩০ ও বিশু ৩৫ বলে ২৩ রানে অপরাজিত আছেন। পাকিস্তানের আমির ২৮ রানে ৩ উইকেট নেন। সংক্ষিপ্ত স্কোর :ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ২৪৪/৭, ৮১ ওভার (চেজ ৬৩, ডউরিচ ৫৬, হোল্ডার ৩০*, বিশু ২৩*, আমির ৩/২৮)।

বি/এস/এস/এন

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে