নারায়ণগঞ্জ থেকেঃ নারায়ণগঞ্জের শহরের কালিবাজারে আলোচিত স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর ঘোষকে যে বাড়িতে হত্যা করা হয়, সে বাড়িতে এর আগেও স্বপন দাস নামে একজনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। প্রবীর হত্যার সূত্র ধরে এমনই তথ্য বেরিয়ে এসেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের তদন্তে। এ ঘটনায় রোববার (১৫ জুলাই) মধ্য রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে দুজনকে। তারা হলেন আমলাপাড়া এলাকার মৃত মহসিন মোল্লার ছেলে মামুন মোল্লা ও প্রবীরের বান্ধবী রত্না চক্রবর্তী। এর মধ্যে রত্নার কাছ থেকে নিখোঁজ স্বপনের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।

মামুন ও রত্নার গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মফিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রবীর হত্যায় সন্দেহভাজন হিসেবে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে। এর মধ্যে পিন্টুর জবানবন্দীতে প্ররোচনাকারী হিসেবে মামুনের নাম ওঠে আসে। এছাড়া রত্নার কাছ থেকে নিখোঁজ স্বপন দাসের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়েছে। এদিকে, গ্রেফতার মামুন ও রত্নাকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে শুনানি শেষে আদালত ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড মঞ্জুরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন কোর্ট পুলিশের এসআই কামাল হোসেন।

এদিকে, পুলিশের একটি সূত্র জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের রত্না জানিয়েছে আমলাপাড়ার ১৫ কে সি নাগ রোডের ঠান্ডা মিয়ার বাড়ির পিন্টু দেবনাথের দ্বিতীয় তলার ফ্ল্যাটে শুধু প্রবীরই নন এর আগে স্বপন দাস নামে আরেকজনকে খুন করা হয়েছিল। তাঁর মরদেহ টুকরো টকুরো করে শীতলক্ষ্যায় ভাসিয়ে দেয়া হয়েছিল।
সূত্রটি জানায়, স্বপন দাস গত এক বছর ধরে নিখোঁজ রয়েছে। এ ঘটনায় সদর মডেল থানায় একটি জিডিও করা হয়েছিল। স্বপন দাস আগে কালির বাজার থাকলেও পরে নিতাইগঞ্জে বসবাস শুরু করে। তিনি প্রবীর ও পিন্টুর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল। পেশাগতভাবে সে ছিল পাসপোর্ট অফিসের ব্রোকার। আর রত্না ছিলেন পিন্টুর গার্লফ্রেন্ড। এই রত্নাকে নিয়েই প্রবীরের সাথে পিন্টুর দ্বন্দ্বের শুরু। এই দ্বন্দ্ব মিট করার জন্য এগিয়ে এসেছিল আমলা পাড়ার মৃত মহসিন মোল্লার ছেলে মামুন মোল্লা।

উল্লেখ্য, ২১ দিন নিখোঁজ থাকার পর গত ৯ জুলাই প্রবীর ঘোষের ৫ খন্ডে খন্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পরের দিন একই বাড়ির পার্শ্ববর্তী আরেকটি বাড়ির ময়লা আবর্জনার স্তুপ থেকে মরদেহের শেষাংশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে একটি মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে আটক করা হয় পিন্টু দেবনাথের কর্মচারী বাপন ভৌমিক ওরফে বাবুকে। বাবুর স্বীকারোক্তিতে আটক করা হয় পিন্টু দেবনাথকে। পরে পিন্টুর দেখানো মতেই নিখোঁজের ২১ দিন পর উদ্ধার করা হয় প্রবীর ঘোষের মরদেহ।

 

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে