বিশেষ প্রতিনিধি : প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব উপলক্ষে বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ’র পক্ষ থেকে শুভেচ্ছঅ জানিয় বলা হয়  যথাযোগ্য ধর্মীয় মর্যাদায় ‘প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব’ উদ্যাপনের মাধ্যমে বৌদ্ধ সমাজের শান্তি ও সম্প্রীতির বার্তা সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়বে।

রবিবার (১৩ অক্টোবর) বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব উপলক্ষে বৌদ্ধ সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানিয়ে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন।

তারা বলেন, ‘প্রবারণা পূর্ণিমা’ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব। এ উপলক্ষে তারা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

নেতৃদ্বয় বলেন, মহামতি গৌতম বুদ্ধ একটি শান্তিপূর্ণ ও সৌহার্দ্যময় বিশ্ব গঠনে আজীবন সাম্য, মৈত্রী, মানবতা ও শান্তির অমিয় বাণী প্রচার করে গেছেন। তাঁর আদর্শ ত্যাগের মহিমায় সমুজ্জ্বল ও মানবিকতায় পরিপূর্ণ। বুদ্ধের অহিংস বাণী ও জীবপ্রেম আজও বিশ্বব্যাপী সমভাবে সমাদৃত।

বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় বুদ্ধের শিক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে তারা মন্তব্য করে বলেন, শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা উপলক্ষে’ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে ‘কঠিন চীবর দানোৎসব সকলের মধ্যে গড়ে তোলে ঐক্য, সংহতি ও সম্প্রীতি। ত্যাগ, সংযম, নিয়মানুবর্তিতা আর কঠোর ধ্যান সাধনার মাধ্যমে উদ্যাপিত ‘কঠিন চীবর দান’ ভক্তদের বুদ্ধের প্রকৃত অনুসারী হিসেবে গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের সাথে মিশে আছে হাজার বছরের বৌদ্ধ ঐতিহ্য একথা উল্লেখ করে নেতৃদ্বয় বলেন, বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমানকাল ধরে বয়ে চলা এ সম্প্রীতি আমাদের ঐতিহ্য। সম্প্রীতির এই ধারা অব্যাহত রেখে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, পতাকা-মানচিত্র ও গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় দেশের সকল নাগরিককে নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখতে হবে।

ন্যাপ নেতৃদ্বয় প্রত্যাশা করেন, মহামতি গৌতম বুদ্ধের শিক্ষা সবার জীবনে প্রতিফলিত হোক, সাম্য ও সৌহার্দ্যময় পৃথিবী গড়ে উঠুক। ‘প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব’ উৎসব সবার জন্য বয়ে আনুক সুখ,শান্তি আর অনাবিল আনন্দ।

উল্লেখ্য, প্রবারণা পূর্ণিমা উৎসব উপলক্ষে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে ধর্মীয় গুরুদের খাবার দেওয়া, ফানুস ওড়ানো, সাংস্কৃ‌তিক অনুষ্ঠান, পিঠা তৈরি, প্রদীপ প্রজ্বালন, রথযাত্রা ও সাঙ্গু নদীতে রথ বিসর্জন।

প্রবারণা পূর্ণিমায় মোমবাতি প্রজ্বালনপ্রথা আছে, সিদ্ধার্থ গৌতমবুদ্ধ মাথার এক গুচ্ছ চুল কেটে বলেছিলেন, তিনি যদি সিদ্ধিলাভের উপযুক্ত হন, তবে এই চুল যেন নিচে না প‌ড়ে উপ‌রে উঠে যায়। তাঁর ইচ্ছানুযায়ী চুলগুচ্ছ আকাশে উড়ে গিয়েছিল। বুদ্ধের কেশধাতুর পূজার অংশ হিসেবে আকাশে এই ফানুস ওড়ানো হয়। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, এই পূজার মধ্য দিয়ে ফানুসের মতো পাপও আকাশে উড়ে যাবে। তিন মাস বর্ষবাস (উপবাস) পাল‌নের পর তারা প্রবারণা পূ‌র্ণিমা পালন করে। বর্ষবাসের সময় তারা কোনও প্রাণিজ খাবার গ্রহণ করেন না।

শত শত বছর ধরে এই ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব পালন করে আসছে মারমা সম্প্রদায়। গৌতম বুদ্ধ এ দি‌নে আকা‌শে চুল উ‌ড়ি‌য়ে দি‌য়ে‌ছিলেন। তাই মারমা সম্প্রদায় বিশ্বাস ক‌রে, এ দি‌নে ফানুস উ‌ড়ি‌য়ে দি‌লে তা‌দের পাপমোচন হয়।

আত্মবিশ্লেষণের শিক্ষা, মাতৃকর্তব্য পালন ও বিনয়বিধান অনুশীলনের বহুবিধ মহিমায় প্রবারণা পূর্ণিমা মহিমান্বিত। প্রতিবছর আশ্বিনী পূর্ণিমায় বৌদ্ধরা শ্রদ্ধাভক্তি সহকারে প্রবারণা পূর্ণিমা পালন করে থাকেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে