ডেস্ক রিপোর্ট : বাবা নায়করাজ রাজ্জাক। বাংলা চলচ্চিত্রের জীবন্ত কিংবদন্তী। তার হাত ধরে ১৯৮৬ সালে ‘চাঁপাডাঙ্গার বউ’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে পা রাখেন চিত্রনায়ক বাপ্পারাজ।

এ ছবিতে তার অনবদ্য অভিনয় দর্শকের মন কেড়ে নেয়। এরপর ‘ঢাকা ৮৬’, ‘চাকরানী’, ‘প্রেমের সমাধি’, ‘প্রেমগীত’, ‘পাগলীর প্রেম’, ‘দুর্দান্ত প্রেমিক’, ‘ভুলনা আমায়’, ‘প্রেমের নাম বেদনা’, ‘বাবা কেন চাকর’, ‘সন্তান যখন শত্রু’, ‘আমার অন্তরে তুমি’সহ অসংখ্য জনপ্রিয় ছবিতে তিনি নায়কের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। সর্বশেষ ২০১৪ সালে ‘কার্তুজ’ নামে একটি ছবি পরিচালনা করেন বাপ্পারাজ। ছবিটি পরিচালনার পাশাপাশি এতে অতিথি চরিত্রে অভিনয়ও করেছেন তিনি। এত দীর্ঘ ক্যারিয়ারের পথচলায় সম্প্রতি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতি নাখোশ হয়ে তাকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে।

কিছুদিন আগে চিত্রনায়ক শাকিব খান একটি জাতীয় দৈনিকের সাক্ষাৎকারে এ সময়ে চলচ্চিত্র পরিচালকদের বেকার বলার কারণে তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল পরিচালক সমিতি। এরপর শাকিব দুঃখপ্রকাশ করায় নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হয়। এই প্রসঙ্গটি নিয়েই বাপ্পারাজ গণমাধ্যমের সাক্ষাৎকারে শাকিবের পক্ষ হয়ে কথা বলায় পরিচালক সমিতি গত ১৪ই মে তাকে একটি চিঠি পাঠিয়েছে। সে চিঠিতে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে বাপ্পারাজকে উল্লেখিত বিষয়ে সমিতি বরাবর সন্তোষজনক ব্যাখ্যা প্রদানের  জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তারা। এ প্রসঙ্গে বাপ্পারাজ মানবজমিনকে বলেন, হ্যাঁ, আমি চিঠি পেয়েছি এবং সঙ্গে সঙ্গে সে চিঠির জবাবও দিয়ে দিয়েছি। জবাবে আমি এর ব্যাখ্যা হিসেবে লিখেছি যে, আপনারা দরকার হলে আমার সদস্যপদ বাতিল করেন। সাতদিন পরে বলার প্রয়োজন মনে করিনি আমি। তাই সঙ্গে সঙ্গে বলে দিয়েছি।

আর যেহেতু আমার সদস্যপদ থাকবে না সেহেতু সদস্যপদের জন্য যে ৫০ হাজার টাকা নিয়েছিলেন সেটাও ফেরত দিয়ে দেন। আমার সদস্যপদের জন্যই তো ওই টাকাটা নিয়েছেন। আমাদেরকে নিবেন, পরিচালক বানাবেন, এই টাকাগুলো আপনারা ইনকাম করবেন। আবার যখন তখন সদস্যপদ বাতিল করবেন তাহলে তো টাকাগুলো তো রয়ে যাবে। তাই সেই টাকাটা ফেরত চেয়েছি আমি। শিল্পী ও পরিচালকের মধ্যে যে মধুর সম্পর্ক ছিলো তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বাপ্পারাজ। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগে শাকিব খানকে শোকজ করেছিল, এরপর শুনলাম মাহিকে করেছে এবং সবশেষ আমাকেও চিঠি পাঠিয়েছে। কালকে তো আরেকজনকে করবে। আসলে বদিউল আলম খোকনের টার্গেট টা কি ? বাপ্পারাজ আরো বলেন, কয়েকদিন আগে পরীমনিও আমাদের বাংলা ছবির পোস্টারের বিষয়ে পরিচালকদের নিয়ে কথা বলেছেন। আমার কাছে স্ক্রিনশট আছে কিছু নিউজের। কই তাকে তো কিছু বলছে না পরিচালক সমিতি।

তাহলে কি লোক বুঝে বুঝে তারা ধরছে যে কাকে কাকে নিষিদ্ধ করতে হবে। আমার তো মনে হয় তাদের টার্গেট এমনই। আবারো কি আগের মতো অশ্লীল ছবি নির্মাণ করতে চান বদিউল আলম খোকন। উদ্দেশ্যতো সেরকমই মনে হচ্ছে। পরিচালক সমিতিতে কাদের নেতা নির্বাচন করা হয়েছে এটাই আমার প্রশ্ন এখন। তার নেতৃত্বে চললে ভালো কিছু তো হবে না। এদিকে সবশেষ বাপ্পারাজ অভিনীত ‘মিসডকল’ ছবিটি মুক্তি পায়। এ ছবিটি পরিচালনা করেছেন সাফিউদ্দিন সাফি। সামনে নতুন ছবিতে অভিনয় বা পরিচালনার কথা ভাবছেন কি-না জানতে চাইলে সবশেষে বাপ্পারাজ বলেন, আমি তো সদস্যপদ ত্যাগ করলাম। আমার যে ‘তারছেঁড়া’ নামের ছবিটি ঘোষণা দেয়া ছিল সেটি শাকিব খান ও সম্রাটকে নিয়ে কুরবানী ঈদের পর শুরু করব। আর পরিচালক সমিতির সদস্যপদ ছাড়াই আমি এ ছবি নির্মাণ করব। পারলে পরিচালক সমিতি যেন আমাকে ঠেকায়।

ম/ন/জ

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে