মাফি মহিউদ্দিন, কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী) থেকেঃ আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নীলফামারী-৪ আসনে (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ) জমে উঠেছে সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণা। বরাবরের মতোই এই আসনে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জাতীয় পার্টি ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের মধ্যে। জয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে চায় জাপা, আর আসন ফিরে পেতে চায় আ. লীগ।
২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিনাভোটে মহাজোটের ব্যানারে এমপি নির্বাচিত হন জার্তীয় পার্টির প্রার্থী শওকত চৌধুরী। শোনা যাচ্ছে, আবারো মহাজোট থেকে সমর্থন নিয়ে আসনটি ধরে রাখতে চান জাপার এই নেতা। তবে তাকে টেক্কা দিয়ে আবারও এই আসনে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চান জাপা চেয়ারম্যান সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের ভাগ্নে আহসান আদিলুর রহমান।
আদিল হচ্ছেন এরশাদের আপন ছোট বোন জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য মেরিনা রহমান ও নীলফামারী-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রয়াত আসাদুর রহমান দম্পতির ছেলে। জাপা থেকে আরো মনোনয়ন চাইবেন কিশোরগঞ্জ উপজেলা জাপার সভাপতি ও বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রশিদুল ইসলাম।
এর আগে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাপা প্রাথী আলহাজ্ব শওকত চৌধুরীকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন আ. লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য প্রয়াত কর্নেল (অব.) মারুফ সাকলাইন। তাঁর মৃত্যুর পর আসনটি হাতছাড়া হয়ে যাওয়ায় আবারও আসনটি ফিরে পেতে মরিয়া আ. লীগ। দল থেকে মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করার জন্য নিয়মিত গণসংযোগ চালাচ্ছেন নীলফামারী জেলা বাস মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র আখতার হোসেন বাদল, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার সেকেন্দার আলী, সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার মোকছেদুল ইসলাম, আ. লীগের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা উপকমিটির সদস্য আমেনা কোহিনুর, নীলফামারী পৌরসভার মেয়র ও জেলা আ. লীগের সভাপতি দেওয়ান কামাল আহম্মেদ, উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বাবুল, স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক নাফিউল করিম নাফা, বাংলাদেশ আওয়ামী কর আইনজীবী লীগের প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম আমির ও সাবেক ছাত্রনেতা একেএম শহিদুল ইসলাম।
অন্যদিকে বিএনপি থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে চান দলের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহসম্পাদক সঙ্গীত শিল্পী বেবী নাজনীন, সৈয়দপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দপুর রাজনৈতিক জেলার সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য আমজাদ হোসেন সরকার। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে জোর প্রচারণাও চালাচ্ছেন তারা।
সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বাবুল বলেন, আমার বাপ-দাদা পূর্বপুরুষরা আ. লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। আমি দীর্ঘদিন থেকে কিশোরগঞ্জ উপজেলা আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি । তাই অবহেলিত কিশোরগঞ্জের উন্নয়নের স্বার্থে দলীয় মনোনয়ন চাইব।
জাপা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের ভাগ্নে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আহসান আদেলুর রহমান আদিল বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্র থেকে পার্টির চেয়ারম্যানের নির্দেশে আমি নীলফামারী-৪ আসনের এমপি প্রার্থী হিসাবে প্রচার প্রচারণা শুরু করেছি। তিনি আরো বলেন, আমার বাবা সংসদ সদস্য থাকাকালীন সৈয়দপুর কিশোরগঞ্জ উপজেলার অনেক উন্নয়ন করেছে তাই আমিও এমপি হয়ে কিশোরগঞ্জের উন্নয়নে গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা রাখতে চাই।
নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য শওকত আলী চৌধুরী বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যে দলের সাথে জোট হোক না কেন, জাপা থেকে আমাকেই মনোনয়ন দেয়া হবে। কারণ আমি বর্তমান সংসদ সদস্য থাকা অবস্থায় সৈয়দপুর কিশোরগঞ্জের অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করেছি। তাই জনগণ আমার সাথে রয়েছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে