জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ চিকিৎসার মহান পেশার সঙ্গে নিজেকে জড়িয়ে এরই মধ্যে শত শত রোগীর চিকিৎসা দিয়ে জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছেন ভূয়া চিকিৎসক মো. ফারুক হোসেন ওরফে রুবেল। অথচ চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও তার লোকজন বুঝতে পারেনি, তিনি একজন ভূয়া চিকিৎসক। জেলা সদরস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনের এ ঘটনায় গোটা জেলায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

শুক্রবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে মদিনা ডায়াগনষ্টিক ক্লিনিকে রোগীর চিকিৎসা সেবা প্রদানের সময় তাকে হাতে নাতে আটক করেন, নীলফামারী সিভিল সার্জন ডাঃ হাসিবুর রহমান ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ। জেলা শহরে গত দু’মাস থেকে ওই ক্লিনিকে রোগী দেখছিলেন তিনি। সে নিজেকে নিউরো সার্জারী এমবিবিএস (রাজঃ), বিসিএস (স্বাস্থ্য), এফসিপিএস (ফিজিক্যাল মেডিসিন), এমডি (নিউরো মেডিসিন) এফপি, নিউরো মেডিসিন, মেডিসিন ও বাত-ব্যথা রোগ বিশেষজ্ঞ, নিউরোলজী বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ঢাকা এই পরিচয়ে রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করছিলেন। এ অপরাধে তাকে এক বছরের কারাদন্ড, ৫০ হাজার টাকা জড়িমানা ও সঙ্গে থাকা মোবাইল, মোটরসাইকেল জব্দ এবং এক মাসের জন্য ক্লিনিক বন্ধের নির্দেশ দিয়ে সীলগালা করে দেন ভ্রাম্যমান আদালত। আটককৃত ভূয়া চিকিৎক ফারুক হোসেন ওরফে রুবেল রংপুর জেলার নীলকন্ঠ এলাকার মৃত আলিমুদ্দিনের পুত্র এবং রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্রাদার বলে জানা গেছে।
এদিকে নীলফামারী জেলা সদর ছাড়াও সৈয়দপুর, ডোমার, জলঢাকা, ডিমলা ও কিশোরগঞ্জ উপজেলার আনাচে-কানাচে ব্যাঙের ছাড়া মতো গড়ে ওঠা ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের বেশীর ভাগই চলছে অনিয়মতান্ত্রিক ভাবে। অভিযোগ উঠেছে, সংশ্লিষ্টদের মাসোহারা দিয়ে বছরের পর বছর ধরে চলছে অনেক ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার। স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে প্রতি মাসে পরিদর্শনের কথা থাকলেও তা হচ্ছে কাগজে-কলমে। অভিযোগ উঠেছে বেশীর ভাগ ক্লিনিকেরই বৈধ কাগজপত্র নেই। নিয়ম অনুযায়ি চিকিৎসক, পর্যাপ্ত জনবল, অপারেশন থিয়েটার, ল্যাব, পর্যাপ্ত মেশিনপত্র না থাকলেও রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে বছরের পর বছর। সূত্র জানায়, গোটা জেলায় প্রায় দুই শতাধিক ক্লিনিক ডায়াগনষ্টিক সেন্টার রয়েছে। একই সূত্র জানায়, উপজেলা সদর সৈয়দপুরের অবস্থা খুবই নাজুক। ঘিঞ্জি এ শহরে কয়েক লাখ মানুষের বসবাস। আর তাদের চিকিৎসা সেবা দিতে গড়ে উঠেছে পাড়া মহল্লায় যত্রতত্র ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার। যাদের বেশীর ভাগই পরিচালিত হচ্ছে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে। এসব ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের মালিক স্থানীয় প্রভাবশালী হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে কোন আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা সম্ভব হচ্ছেনা বলে সূত্রটি দাবি করছে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে