জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ নীলফামারীতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের সাথে অপরাজিতাদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বুধবার দুপুরে শহরের কুখাপাড়াস্থ ডেমক্রেসিওয়াচ কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আয়োজন করে সংস্থার ‘অপরাজিতা-নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রকল্প’।

এতে সভাপতিত্ব করেন নীলফামারী সদর উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ফোরামের সভাপতি সান্তনা চক্রবর্তি।
অতিথি হিসেবে সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক দীপক চক্রবর্তি, জেলা ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি তপন কুমার রায়, সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আখতারুজ্জামান জুয়েল বক্তব্য দেন।

‘অপরাজিতা-নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন প্রকল্প’র জেলা সমন্বয়কারী কামাল হোসেন শাহ এর সঞ্চালনায় অপরাজিতাদের মধ্যে গোড়গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড সদস্য মাসুদা আকতার মিনি, সংগলশী ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড সদস্য লাকি আকতার,লক্ষীচাপ ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড রোজিনা বেগম বক্তব্য দেন।

সভায় লাকি আকতার অভিযোগ করে বলেন, আমরা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্য। জনগণ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন অথচ আমরা এখানে উপেক্ষিত। মুল্যহীন যেন আমরা।

রাজনীতিক ভাবেও আমরা অবহেলিত। রাজনীতিতে যে শতকরা ৩৩ভাগ কোটা রয়েছে সেটিও অনুসরণ করা হচ্ছে। যার কারণে বঞ্চিত হচ্ছেন নারীরা। এমনকি তৃণমুলে বিকশিত হচ্ছে না নারী নেতৃত্ব।

গোড়গ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ড সদস্য মাসুদা আকতার মিনি বলেন, আমি দু’দফায় ইউনিয়ন পরিষদে দায়িত্ব পালন করছি। একই অবস্থা আমারও। ইউনিয়ন পরিষদ মানে চেয়ারম্যান ভাবে একাই তার। এটি হওয়া ঠিক নয়। এই অবস্থার উত্তোরণ চাই আমরা।
এবার আমি আওয়ামীলীগের প্রার্থী হয়ে ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করতে চাই।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা নারীদের অবাধ সুযোগ করে দিয়েছেন। আমাদের মেধা যোগ্যতা দিয়ে তা দেখাতে চাই।
তিনি বলেন, আমাকে যদি নৌকা প্রতিক দেয়া হয় তাহলে বিপুল ভোটে জয়লাভ করবো।

জেলা ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি তপন কুমার রায় বলেন, নারীরা এখন ঘর বেরিয়ে বিভিন্ন কর্মে সম্পৃক্ত হয়েছে। সবজায়গায় পদচারণা তাদের। একজন নারী বিমান চালাচ্ছেন। এরচেয়ে কি হতে পারে।

তিনি বলেন, নারীদের সক্ষমতা বাড়াতে পরিষদগুলোকে আরো কার্যকর এবং রাজনৈতিক দলগুলোতে নারী কোটা পুরণ করে রাজনীতিতে তাদের সম্পৃক্তত্তা বাড়ানো এখন সময়ের দাবী।

উন্নয়নের অংশীদার নারীরাও উল্লেখ করে তিনি বলেন, গ্রামে গঞ্জে প্রতিটি কাজে নারীদের সম্পৃক্ততার সুযোগ রাখতে হবে অন্যথায় নারীর অগ্রযাত্রার বিকাশে ব্যাঘাত সৃষ্টি হবে। এক্ষেত্রে সব রাজনৈতিক দলগুলোকে উদার হওয়া প্রয়োজন।

সভাপতির বক্তব্যে সদর উপজেলা পরিষদের নারী ভাইস চেয়ারম্যান সান্তনা চক্রবর্তি বলেন, অধিকার কেউ কাউকে দেয় না। অধিকার আদায় করে নিতে হয়। কাজ করলে মুল্যায় হয় এটি যেমন রয়েছে তেমনি ঘরে বসে থাকলে কেউ ডেকে আনবে না, এটিও বুঝতে হবে।

তিনি বলেন, কাজ করলে দলে মুল্যায়ন বাঁধা হয়ে দাড়ায় না। অবশ্যই মুল্যায়ন হবে। আমরা অবশ্যই নীলফামারীতে নারী চেয়ারম্যান ইউনিয়নে নেতৃত্ব দেবে এটি আমরা দেখতে চাই। এক্ষেত্রে অবশ্যই লড়াই সংগ্রাম করে মনোনয়ন আদায় করে নিতে হবে।

নীলফামারী সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নের ৪৫জন অপরাজিতা অংশগ্রহণ করেন এই মতবিনিময় সভায়। এরমধ্যে নির্বাচিত নারী জনপ্রতিনিধি, আগামী নির্বাচনে অংশগ্রনেচ্ছুরাও রয়েছেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে