জয়নাল আবেদীন হিরো, নীলফামারী জেলা প্রতিনিধিঃ গত ৪ ডিসেম্বর ২০২২ ইং তারিখে দিনাজপুরের পার্বতীপুরে ইপিজেড এর সনিক কোম্পানীর বেলাইচন্ডী নামক স্থানে অবস্থিত তাদের কারখানা থেকে পরিত্যাক্ত মালামাল নিয়ম অনুযায়ী সরকারীভাবে মূল্য নির্ধারণ করে সেটির কর পরিশোধ করেই বিক্রির নিয়ম থাকলেও কোম্পানীর অসাধু কর্মকর্তা ও স্থানীয় সিন্ডিকেট ও পাচারকারীদের সাথে হাত মিলিয়ে ৪টি ট্রাক ভিতরে ঢুকিয়ে মূল্যবান মালামাল ট্রাকের বডির নিচে দিয়ে তার উপরে পুরাতন কাগজপত্রের কার্টন বসিয়ে লোড করতে থাকে।

স্থানীয় জনগন টের পেয়ে সাংবাদিককে জানালে সাংবাদিকরা দূরে অবস্থান নিয়ে পর্যবেক্ষন করতে থাকে ফলে সেদিন তাদের অভিযান ব্যর্থ হয়।

৫ই ডিসেম্বর আরো তিনটি ট্রাক ঢুকিয়ে একইভাবে তামা পিতলসহ মূল্যবান ধাতু লোড করতে থাকে। দুপুর নাগাদ ঘটনাটি জানাজানি হলে ঘটনাস্থালে অনেক সাংবাদিকের সমাগম ঘটে।

সিন্ডিকেট সদস্যের সাথে হাত মেলানো দিনাজপুরের দূর্নীতিবাজ কাষ্টমস্ কর্তৃপক্ষ বিকাল ৩টায় কারখানার ভিতরে প্রবেশ করে এবং কিছুক্ষনের মধ্যেই সিন্ডিকেট সদস্যের পক্ষে তদবির করতে পাজেরো গাড়ি নিয়ে আসেন পার্বতীপুর পৌরসভার মেয়র আমজাদ হোসেন।

তাঁর বাহিনী ও ফ্যাক্টরীর গেটের বাইরে পূর্বে থেকেই অবস্থান নেয় সেখানে ইউপি নির্বাচনে পরজিত প্রার্থী সম্রাট , মেম্বার প্রার্থী জয়নালসহ একাধিক ক্যাডার।

সাংবাদিকদের তারা ঘটনাস্থল ত্যাগের নির্দেশ দেয় এবং বলে আপনাদের বিকাশ নাম্বার দিয়ে যান আপনাদের একাউন্টে টাকা পৌঁছে যাবে।

এবং আরো হুমকি দেয় যে সন্ধ্যা হলেই সাংবাদিকেদের সাইজ করা হবে। তাদের কারণেই আজকে কাষ্টমস্ কর্তৃপক্ষ ভিতরে প্রবেশ করেছে।

সন্ধ্যার পূর্বেই কাষ্টমস্ কর্তৃপক্ষসহ পৌর মেয়র ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। পরবর্তীতে গোপন সূত্রে জানা যায় সিন্ডিকেট দিনাজপুরের কাষ্টমস্ কর্তৃপক্ষকে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ম্যানেজ করেছে।

ফলে কাষ্টমস্ কর্তৃপক্ষ মালামাল সিজার লিষ্ট না করেই চলে যায়। রাত ১১ টার দিকে অবৈধভাবে সরকার দলীয় নেতার ক্ষমতায় কোন প্রকার কাগজপত্র ছাড়াই অর্ধ কোটি টাকার আয়কর ফাঁকি দিয়ে সকল মালামাল নিয়ে ৭টি ট্রাক মালের ক্রেতা উত্তরা ইপিজেডের ঠিকাদার আয়নালের গোডাউনে চলে যায়।

এই গোপন খবর সাংবাদিকদের কাছে আসলে দ্রুত ঘটনাটি নীলফামারীর কাষ্টমস এর ডিসিকে মোবাইলে অবহিত করলে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে ৪টি ট্রাক মালামালসহ আটক করতে সক্ষম হলেও ৩টি কাভার্ড ভ্যান তামা পিতলসহ মূল্যবান মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।

এব্যাপারে কাষ্টমস্ কর্তৃপক্ষ নীলফামারীর সাথে কথা বললে তারা জানান গাড়ি আটক হয়েছে, আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

পলাতক ৩টি গাড়ির মালামাল ও মালের ক্রেতা ও আয়কর ফাঁকি দিয়ে সনিক কোম্পানীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা প্রশ্ন করলে তারা বলেন আগে দেখেন পরবর্তীতে কি ব্যবস্থা হয়। গোপন সূত্রে যানা যায় একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক মহল ৫০ লক্ষ টাকার রাজস্ব ফাঁকির ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে ৷ফলে মালের ক্রেতা বা বিক্রেতা কেউই গ্রেফতার হয়নি।

এর আগেও একই ভাবে অনেক মালামাল কর ফাঁকি দিয়ে নিয়ে চলে গেছে বিভিন্ন সিন্ডিকেট ৷ এতে করে সরকারকে লক্ষ লক্ষ টাকা কর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে ৷ এতে এক শ্রেণির কর্মকর্তা ও কর্মচারী জড়িত ৷ এরা সব সময় ধরা ছোয়ার বাইরে থাকে ৷ এখনিই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া অতি জরুরী হয়ে পড়েছে ৷ তবে এব্যাপারে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তাদের সাক্ষাৎ না হওয়ায় ও ফোনে যোগাযোগ করে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি ৷

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে